Content of this post: In this short story, author has written a story about a family from her imagination.
আজ তিথিদের বাড়ির পরিস্থিতি অত্যন্ত শোচনীয়। কারণ আজ শুক্রবার। শুক্রবার ছুটির দিন। তিথির বাবা আজ বাড়িতে। আর ছুটির দিন বলেই তিথিদের বাড়ির পরিস্থিতি খুব একটা ভাল না। তিথির বাবা সরকারি চাকরিজীবি। তিনি ভিষন মেজাজি লোক। আর তিনি যতক্ষন বাড়িতে থাকেন ততক্ষন বাসার সবাই খুব ভয়ে ভয়ে থাকেন। কখন যেন চিৎকার চেচাঁমেচি শুরু হয়ে যায়। দুই বোন ও এক ভাই নিয়ে তিথিদের সংসার। তার মধ্যে তিথি মেঝো আর তার বড় বোন বিথি। এবার অনার্স সেকেন্ড-ইয়ারে পরছে এবং ছোট ভাই অভি ক্লাস থ্রিতে। তিথির বাবা যেমন ভিষন মেজাজি, ঠিক তেমনি তিথির মা, যেমনি রাগি তেমনি ভাল। একদিন বিথি আপা তার এক বান্ধবির বাড়িতে গেল আপা বাসা থেকে বের হয়েছে সকাল নয়টার দিকে। আর বাসায় ফিরেছে সন্ধ্যা সাতটায় আর আপার ভাগ্য ভাল যে সেদিন তখনও বাবা অফিস থেকে বাড়ি ফিরেনি । নইলে সেদিন আপার খবর ছিল। যখন আস্তে আস্তে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল তখন থেকেই আমি আর অভি ভিষন চিন্তা করছিলাম আজ কি যেন কি ঘটে যায়। এর আগে এমন কখন ঘটেনি। হঠাৎ বেল বেজে উঠল। এই বুঝি বাবা এল! কিন্তু না, গেট খুলতেই সুর সুর করে ঘরে ঢুকে পরল আপা তার আচরন স্বাভাবিক। যেন কিছুই হয়নি,
মা রান্না ঘর থেকে জিজ্ঞেস করল, ‘তিথি কে এল?’
আমি ভয়ে বললাম, ‘আপা এসেছে।’
মা এসে বলল , ‘বিথি দুপুরে খেয়েছিস?’
আপা বলল, ‘হ্যাঁ মা, খেয়েছি। মা- আমি ভিষন ক্লান্ত। আমি হাত-মুখ ধুয়ে ঘুমোবো,আমাকে কেউ ডাকবে না।’
মা বলল , ‘সে কি রাতে খাবিনা!’
আমি আর অভি মা-র ব্যাবহার দেখে অবাক হয়ে গেলাম। অথচ এর আগেও আপা একবার কলেজ থেকে ফিরতে দেরি করেছে বলে মা আপাকে খুব বকাঝকা করেছিল। তখন আপা ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ত। আমি মার কাছে গেলাম বললাম , ‘মা তুমি আপাকে কিছু বললেনা যে।’
মা বলল, ‘কি বলব?’
আমি বললাম, ‘ওইযে আপা রাত করে বাড়ি ফিরেছে।’
মা বলল, ‘এতে বলার কি আছে!’
আমাদের বাড়ির সবাই শুক্রবার দিনটাকে ভয় করে। বাবা সেদিন বাসায় থাকে বলে। এতক্ষন আমরা ভিষন ভয়ে ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বাবা সবার সাথে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছে।
বাবা আপার ঘরে গিয়ে আপার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছে, ‘কি করছিস?’
আপা উত্তর দিল, ‘জি বাবা উপন্যাস পড়ছিলাম।’
বাবা বলল, ‘ভালো উপন্যাস পড়া ভালো এতে করে অনেক কিছু শেখার আছে। তা কি উপন্যাস পড়ছিস ?’
আপা বলল, ‘উপন্যাসটির নাম- আজ চিত্রার বিয়ে’
বাবা বলল, ‘যাই হোক যা বলছিলাম বুঝলি তোদের মত এই বয়সে আমরাও উপন্যাস পড়তাম। কত উপন্যাস পড়েছি। হাঃ হাঃ হাঃ।’
আমি বাবাকে কখনও এমন প্রাণ খুলে হাসতে দেখিনি। বাবা আপার ঘর থেকে হাসতে হাসতে বের হল। এই যা এখন বাবা আমাকেউ ডাকছে।
বাবা বলল, ‘তিথি আমি বেলকুনিতে গিয়ে বসছি। তুই আমার জন্য এক কাপ চা বানিয়ে নিয়ে আয়ত মা।
আমি বলল, ‘জি বাবা আসছি।’
মা বিরক্ত কন্ঠে বাবাকে বললেন, ‘আজ সকাল থেকে কি হয়েছে! বলি আজ এত ঘন ঘন চা খাওয়া হচ্ছে কেন ?
বাবা মাকে বললেন, ‘রেহানা, তুমিও এসো তোমার সঙ্গে আমার কথা আছে।’
মা বললেন, ‘কি কথা তাড়াতাড়ি বলুন! চুলোয় রান্না চড়িয়েছি।
বাবা বললেন, ‘আজ সন্ধ্যায় কিছু মেহমান আসবে। বিথির জন্য একটা প্রস্তাব এসেছে।’
মা বললেন, ‘প্রস্তাব! তা ছেলে কি করে, কোথায় থাকে, ছেলে দেখতে কেমন?’
বাবা বললেন, ‘আহা রেহানা তুমি এতগুলো প্রশ্ন একসাথে করলে আমি উত্তর দিব কেমন করে। ছেলে আমেরিকা থাকে ওখানে ওদের বাড়ি আছে। বিজনেস আছে, এছাড়াও এদেশেও ওদের তিনটা বাড়ি আছে। ছেলের বাবা বেশ বড়লোক। ওদের এদেশের একটা বাড়ি ঢাকার গুলশানে আর দুটো বাড়ি উত্তরায় আর এমনিতে ছেলের গ্রামের বাড়ি ........... কোথায় যেন ঠিক মনে করতে পারছিনা।’
মা বললেন, ‘দেখো বিথির বাবা ছেলের গ্রাম যেখানেই হোক, ছেলের সম্পর্কে যা যা শুনলাম এতে করে ছেলে আমার পছন্দ হয়েছে।’
No comments:
Post a Comment