Tuesday, August 26, 2008

“ওরা মানুষ নয়- পুরুষ”

Title of this post: They are male not human being by Jainub Khanam


আমি পুরুষকে শ্রদ্ধা করিআবার ঘৃনাও করিকারণ, সমাজে যেমন আছে ভাল পুরু, তেমনি আছে নোংরা, বিকৃত মস্তিস্কের পুরুপথে ঘাটে, যেখানে সেখানে নারীরা লাঞ্চিত হচ্ছে এই পুরুষদের হাতেকয়েকদিন আগে আসছিলাম আমাদের কলোনির রাস্তা ধরেসাথে ছিল আমার ১৩ বছর বয়সের ভাগ্নীসময়টা ছিল শুক্রবার জুমার নামাজের সময়, বাইরে কোন লোকজনের চলাচল ছিল নাআমাদে সামনে একটি ছেলে জিন্স প্যান্ট শার্ট পড়া ভদ্র বেশীকিন্তু মুহুর্তে মধ্যে তার রূপ পরিবর্তন হয়ে গেলসে খারাপ দৃষ্টি ভঙ্গি নিয়ে আমার ভাগ্নির দিকে তাকিয়ে ছিল আর সামনে এগিয়ে আসছিলআমার শরীর কেপেঁ উঠলআমি আমাকে নিয়ে ভাবিনি, ভেবেছি ভাগ্নিকে নিয়েছেলেটির যে উন্মাদ, নোংরা ইমোশন কাজ করছিল তা দেখে আমার মনে হচ্ছিল, সে যে কাউকে ধরে বসে পারতদ্রুত পায়ে বাসায় চলে এলাম এবং পরদিন থেকে কম বয়সী মেয়েটিকে বোরখা পড়তে বাধ্য করলামকারণ এই বোরখা তাকে অনেক খারাপ কিছু থেকে নিরাপত্তা দেবে এবং তাকে রক্ষা করবে খারাপ পুরুষদের লোলুপ দৃষ্টি থেকে

এত নোংরা আচরন খোলা রাস্তায় শুধুমাত্র পুরুষকেই মানায়এই বিশ্রি ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আমি ওরা মানুষ নয়- পুরুকবিতাটি লিখার প্রয়াস পেলাম...

পথে ঘাটে হরহামেশা
নারীদের হয়রানি করছে যারা
তারা কি মানুষ?
না, না ওরা পুরু
রাস্তা দিয়ে চলার পথে
ভিড়ের মাঝে হাত চালায়
নারীদের হেতায় সেথায়
তারা কি মানুষ?
কভুও না ওরা পুরু
চলার পথে পাশ দিয়ে যাক
পাগলা কুকুর তবুও না যাক
একটি পুরু
কুকুর তো শুধু কামড়ে দেবে
চিকিৎসাতেই সুস্থ হব
কিন্তু হলে পুরুষের লালসার স্বীকার
উপায় যে থাকবে না বেচেঁ থাকার
একটি নারী যখন হয় ঘরের বাহির
মায়ের মন তখন হয়ে যায় অস্থি
প্রার্থনা করে খোদার কাছে
বাইরে যেন মেয়ের সম্ভ্রব বাচেঁ
মা তত ভয় পায়না
ঘাতক ট্রাকের আঘাতকে
যতখানি ভয়পায়
পুরুষের লোভের চাহিদাকে
আমি জানি না ওরা কি ভাবে
লাঞ্চিত নারীগুলো ওদেরই তো
মা বোন ভাগ্নি কিংবা মেয়ে
বাংলার অলিতে গলিতে
এ কোন হায়েনার দল
মেতে উঠেছে এ কেমন পাপের নেশায়
তিন বছরের মেয়ে শিশু
যুবতী কিংবা গৃহ বধূ
পবিত্র সম্মান হারাচ্ছে সবাই
যতক্ষন ঘরে থাকি ভাবি নিরাপদ
বাইরে গেলেই বিকৃত মনের পুরু
যেখানে সেখানে ঘটায় বিপদ
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত করে উৎপাত
হে খোদা! তুমি এদের কর নিপাত
কি ভাবে নারী রাস্তায় যাবে?
কিভাবে নারী শিক্ষিত হবে?
নির্যাতিত নারী দেহের রক্তাক্ত লাশ
নয় টুকরো হয়ে পড়ে থাকে রাস্তার পাশ
যারা নারীকে ভোগের পন্য ভাবে
এইতো মোদে বাংলার রূপ
করব কি আর পেশ
এই আমাদে হরেক রকম
আইনে ঘেরা সোনার বাংলাদেশ

স্মৃতি

Title of this post: Memory by Surma Akter


আম কাঠালের বিনাশ হল
ভাবছে খোকা খুকু
উদাস চোখে তাকিয়ে থেকে
দেখছে মরুর ধুধু।

চোখের তারায় ভাসছে শুধু
দাদা বাড়ির স্মৃতি
মেঘনা যে সব কেড়ে নিল
কয়েক বছর আগে ।
নানা বাড়ির বাগানটা যে
দালান কোঠা ভরা
খালার বাড়ির বাগানটা যে
অযত্নে মরা ।

বন্ধুরা সব বসে আছে
হতাস হয়ে ঘরে ।
তাইতো আজ সবাই মিলে
গাইছি শুধু
স্মৃতির ভরা গান ।

কোথায় গেলে পাবো আবার
আম কাঠালের ঘ্রান ।

একটি অসম্পূর্ন জীবনের গল্প

Title of this post: Tale of an incomplete life by Salma Akter.

রবিউল হোসেন নামের একটি ছেলে, সবাই তাকে রবু বলে জানতবয়স ২৮ হবেজন্মগত ভাবে তারা ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দাবাড়ি মুগদা পাড়াতারা দুই ভাই, তিন বোনসংসারের বড় ছেলে সে সংসারে দারিদ্রতা সবসময় বিরাজ করততাই লেখাপড়া শেখা হয় নাইকোন কাজও শিখে নাইঅবশ্য এজন্য তার পরিবারই দায়ীলেখাপড়া করেনা, কাজকর্ম করেনা এমন ছেলেতো আর ভাল হতে পারেনা কথায় বলে না, অলস মতিষ্ক শয়তানের কারখানাতার বেলাতেও এমনটি হয়েছেঅসৎ ছেলেদের সাথে মিশে সেও একদিন অন্ধকার পথে পা বাড়াপ্রথমে গাঁজা খেয়ে শুরু হয় তার পথচলাতার পর ধীরে ধীরে মরণ নেশায় জড়িয়ে যায়শুরু করে শরীরের বিভিন্ন অংশে ইনজেকশন নেওয়াসে টি.টি.জেসিক,ফ্যানার গ্যান, এভিল, ইজিয়াম ইত্যাদি ইনজাকশন নিতহাতে পায়ে ক্রমাগত ইনজাকশন নিতে নিতে হাত পা ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেছেজীবনীশক্তি ক্রমশ নিঃশেষ হয়ে গেছেনেশা করার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হতো তা যোগার করার জন্য সে প্রথমে রিক্সা চালাতপরবর্তী সময়ে যখন তার দেহের শক্তি শেষ হয়ে গেছে তখন সে চুরি করতে শুরু করে

প্রথম প্রথম সে নিজের ঘরে চুরি করত, পরবর্তী সময়ে সে মানুষের বাড়িতে চুরি করতে শুরু করেচুরি করতে গিয়ে ধরা পরে প্রচুর মার খেতে হতো তাকে, আবার অনেক সময় পুলিশের কাছেও অনেক বার ধরিয়ে দিয়েছেকিন্তু জেলখানাতেও বেশিদিন আটকে রাখত না তাকেকারন তার জামিনের জন্য কেউ কখনও টাকা নিয়ে যেত নাএমন কি কেউ দেখতেও যেত নাপুলিশেরাও তাকে বেশি দিন আটকে রাখত না, কিছুদিন পর এমনিতেই ছেড়ে দিতএকদিন সে তার বড় চাচার বাড়িতে যায়, তখন সন্ধ্যাতার চাচাত বোন ওজু করার জন্য হাত থেকে ঘড়ি খুলে রাখেসে সময় ঘড়ে রবু ছাড়া আর কেউ ছিলনা, নামায শেষে ঘড়ি পরতে যেয়ে, সে আর খুঁজে পায়নাতার বোনটি ছিল একটু অন্য রকম, সে জানত যে, সবাই তাকে খুব ভালবাসে, এমনকি তার চাচাত ভাইরাওতাই সে কখনও ভাবতে পারেনি যে, তার ঘড়িটি রবুভাই চুরি করবেসেদিন ঘড়ি চুরির সাথে সাথে সে তার বিশ্বাসটাও চুরি করেছিল

ঘড়ি চুরির জন্য তাকে অনেক মার খেতে হয়েছিল, তারপরও সে ঘড়িটি ফেরত দেয়নিএমন অনেক ঘটনাই তার জীবনের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলকখনও কারও বাড়ি থেকে কাপড়-চোপড় নিয়ে যেত, কখনও গ্যাসের চুলা খুলে নিয়ে যেত, কখনও টিউবওয়েলের হ্যান্ডেল খুলে নিয়ে যেত, আবার কখনও করত জুতা চুরিআর ধরা পড়লে বেদম মার খেতএভাবেই চলছিল তার জীবন

২০০৭ সালের প্রথম দিকে তার ছোট ভাইয়ের বিয়ে হয়েছিলসেই বিয়েতে তাকে শেষ দেখা গিয়েছিলতারপর থেকে তার আর কোন সন্ধান নেইকেউ বলতে পারেনা যে, সে বেঁচে আছে না মরে গেছেতার পরিবারের কেউ তার খোঁজ নেয়ার চেষ্টাও করে নাইসবাই ভেবেছে সে মারা গেছে, তা না হলে এত দিনে সে ফিরে আসতকে জানে হয়বা কারও বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে ধরা পরে মার খেয়ে মরে গিয়েছেতা না হলে হয়তো জেলখানাতে পঁচে মরছেকেউ তার খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজনও মনে করেনাকারণ তার মতো রবুরা সমাজে উপেক্ষিআমাদের সমাজে তাদের কোন স্থান নেইকারন তারা দেশ ও জাতির কোন উপকারে আসেনাতারা নিজে ধ্বংস হয় এবং সমাজকে ধ্বংস করেকিন্তু রবুরা কেন এ সমাজে উপেক্ষিত হবে, কেন তারা সমাজের বোঝা হবে? তার পরিবার কি পারতনা তাকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে? তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাকে সুন্দর সাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে?

আমার মনে হয় তার প্রতি একটু বেশি অবহেলা হয়ে গেছেযারা মাদকাসক্তির শিকার তাদেরকে অবহেলা বা ঘৃনা না করে বরং ভালবাসা দিয়ে সুন্দ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবেরবুর মতো অকাল মৃত্যু কারও কাম্য নয়আমাদে যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে আমাদেরকে মাদকাশক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে