Thursday, December 4, 2008

নারী নির্যাতন বন্ধ করুন

Title of this post: Stop Violence Against Women by Fabliha Tasnim Hridi

আমরা সবাই খুব বড় গলায় বলি আমাদের দেশে নারী-পুরুষের অধিকার সমান। আসলে কি তাই? যৌতুক, এসিড নিক্ষেপ, অপহরণ ইত্যাদি তো আছেই। কিন্তু সমাজের ছোট ছোট ধাপে নারীদের যে কিভাবে বঞ্চিত করা হয় সেটা কে দেখবে? দেখে সবাই কিন্তু কেউ কিছু বলে না। ঘুমন্ত মানুষকে জাগানো যায় কিন্তু যারা জেগে জেগে ঘুমায় তাদের কখনোই জাগানো যাবে না। নারীদের প্রতি অবহেলা হয়তবা কোনদিনই দুর হবে না। কারন কিছু সংখ্যক মানুষ সুন্দর সমাজ চায়, সবাইতো চায় না। আমি আমার পরিচিত কয়েকটি পরিবারের কথা জানাতে চাচ্ছি আর প্রশ্ন করছি সবার কাছে আমাদের সাথে বা আমাদের চারপাশে কি এগুলো হয় না ? তখন আমরা কি করি নীরবে সহ্য করা ছাড়া ?

মা বাবার সখের সন্তান অনিদ্রা । বিয়ের ১২ বছর পর তাদের প্রথম সন্তান অনিদ্রা। অনিদ্রা তার মা-বাবার আশা অনুযায়ী পড়াশুনা করে একদিন একটা ভাল চাকুরি পেল। যখন ওর বাবা জানলো অফিস ছুটি রাত ৮টায় তখন আর কিছু জিজ্ঞেস না করেই চাকরি করতে মানা করে দিল। সে বলল,‍‍‌‌‌‌‌‍ ‍‌‌‌‌‌‌‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌যে চাকরি করলে রাতে বাড়ি ফিরতে হয় সে চাকরির দরকার নেই।‌‌‌‌‍‍ অনিদ্রা স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। কয়েকটা অফিস আছে সন্ধার আগে ছুটি দেয়। আর এ যুগে এত ভাল চাকরি ও আর কোথায় পাবে। তাহলে কি লাভ হলো পড়ালেখা করে? সকল পরিশ্রম কি বৃথা?

মিথলা অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। বাসে করে যেতে হয় ভার্সিটিতে। বাসে এত মানুষের ভিড়েও কিছু ছেলে ধাক্কা দিতে একদম ভুলে না। মহিলাদেরও রেহাই নেই এসব থেকে। মন্দিরে ঘন্টা যেমন একে একে সবাই এসে বাজিয়ে যায়, তেমনি মিথিলাকেও সবাই ধাক্কা দিয়ে যায়। রাস্তা ঘাটে মানুষ যেভাবে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে থাকে মনে হয় মেয়েটা যেন চিড়িয়াখানার একটা জীব আর ওরা জীবটাকে দেখতে এসেছে।

নীলার বিয়ে ঠিক হয়েছে কিন্তু নীলা বিয়েতে রাজি না। কারণ ও কেবল ইন্টার মিডিয়েটে পড়ে। ও আরও পড়তে চায়। ছেলেকে ও এখনো পর্যন্ত দেখেনি, কিন্তু বাড়ির সবাই রাজি। ওকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজনও বোধ করলনা। ও আর কাউকে কিছু বলতে পারল না। বললে সবাই বলবে ও অন্য কাউকে পছন্দ করে, তাই নিজের মাথায় কলঙ্ক নেয়ার চেয়ে বিয়ে করে নেয়াই অনেক ভাল। এটা মেনে নিয়েই নীলা বিয়েতে রাজি হয়ে গেল। যেদিন বিয়ে হল সেদিন ওর পড়াশুনার মৃত্যু হল।

রুপা, রুপার স্বামী অপু, রুপার রাতুল রাতুলের স্ত্রী অনন্যা আর ওদের এক বন্ধু তমাল সিলেট যাচ্ছিল। হঠাৎ এক্সিডেন্ট অপু, অনন্য আর তমাল মারা গেল, আজ পাঁচ বছর রাতুলের বিয়ে অমিয়া সাথে। রাতুল তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারল কিন্তু রুপা পারল না। রুপার কি দোষ? রুপার দোষ ও একটি মেয়ে। তাই ও অলুক্ষণে। গোটা সমাজটা ওকে হেও চোখে দেখে, তাহলে ও কিভাবে বদলাবে। মেয়েদের মন নরম বিধায় ওরা অনেকেই পরবর্তিতে আর বিয়ে করতে পারে না। কিন্তু ও সমাজ কি পারতনা ওর মুখের সেই হাসিটা ফিরিয়ে দিতে?

শুধুই কি এগুলো! আজও মহিলারা মার্কেটে গেলে দাম বেশী আর পুরুষেরা মার্কেটে গেলে দাম কম চায়। স্কুলে ভর্তির ব্যাপারে বাবা না গেলে মূল্য না দেয়া। স্বামীর চেয়ে স্ত্রী বেশী শিক্ষিত হতে পারবে না ইত্যাদি আরও কত কিছু সহ্য করতে হয় মেয়েদের। আজ কত নারী উন্নয়ন সংস্থা গড়ে উঠেছে। তারা নারীদের উন্নতি করছে, কর্মজীবি করছে। অনেক অশিক্ষিত শিক্ষিত হচ্ছে। তারা নারীদের অধিকারের জন্য কত মিছিল, মিটিং করছে। কিন্তু এসব ছোট ছোট বিষয়ও বলে দেখাও কি সম্ভব? কিন্তু জানেন, এসব বিষয় আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেও হবে না। কারণ তারা বুঝতো চায় না। যদি বুঝতে চাইত তাহলে অনেক আগেই বুঝত। আসুন না আমরা সবাই মিলে নারীদের উপর থেকে এই নির্যাতন বন্ধ করি।....

“আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস”- ২৫শে নভেম্বর ২০০৮

Tile of this post: “International Day Against Violence Against Women” 25th November,2008 by Farzana Akter Tuli

নারী এই শব্দটি প্রাচীন কাল থেকে প্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষণ নানাভাবে নির্যাতিত ও শোষিত হচ্ছে। অথচ এই নারীর কারণেই একটি সন্তান পৃথিবীর আলো দেখতে পায়, একটি সুন্দর জীবনের শুভ সুচনা হয়। অথচ নারীদের জীবন আমাদের এই সমাজে শুধুই একজন সামান্য নারী হিসাবে চিহ্নিত, যার কোন অস্তিত্ব নেই। আমাদের সমাজে নারী পুরুষ উভয় সমান অধিকারী। কিন্তু এই অধিকার নারীরা কতটুকু পায়। তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পুরুষ শাসিত এই সমাজে নারীদের কোন কর্মকান্ডই গ্রহণ যোগ্যতা পায় না। অথচ আমাদের দেশে বিগত কয়েক বছর যাবৎ নারীরা দেশ পরিচালনা করে আসছে।

অনেক ক্ষেত্রে আমাদের দেশে নারী নির্যাতনের মুলহোতা থাকে আরেকজন নারী। উদাহরন স্বরুপ বলা যেতে পারে যে, একজন মেয়ের বিয়ের পর সাধারণত সর্বপ্রথম শাশুরী-ননদ বা জা যৌতুকের চাপ প্রয়োগ করে। এতে করে মেয়েটি অসহায় হয়ে পড়ে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে আমাদের দেশের নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এর ফলে তারা নানা রকম সমস্যায় পড়ছে। যেমনঃ

সম্প্রতি দৌলতপুরে এক গৃহ বধুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। গত রোববার রাতে উপজেলার চৌহদ্দিঘাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রোববার রাত ১২টার দিকে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে নায়েব আলী তার স্ত্রী নাজেরা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এমনকি ঘটনা ধামাচাপা দিতে লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখে। এলাকাবাসী লাশ ঝুলিয়ে রাখতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। এলাকাবাসী জানায় নায়েব আলীর ৮ স্ত্রীর মধ্যে হাজেরা খাতুন চতুর্থ স্ত্রী এবং তার অধিকাংশ স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। এর পর থেকে হাজেরার সাথে তার স্বামীর কলহ চলে আসছিল। এর জের ধরেই এই হত্যাকান্ডটি ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। (মানব জমিন২৫শে নভেম্বর-০৮-মঙ্গলবার)

অতএব এ থেকে বোঝা যায় আমাদের নারীরা কত অসহায়। একজন লোক বহু বিবাহে লিপ্ত হয় আর তার বলি চরাতে হয় একজন নারীকে।

অপর দিকে গোলাপগঞ্জের কোটালি পাড়ায় একজন স্কুলছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে তাকে অপহরণ করে ৭দিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আর ৫জন ধর্ষণকারীকে পুলিশ খুঁজছে। (মানব জমিন২৫শে নভেম্বর-০৮-মঙ্গলবার)

এগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি নারীরা কতখানি অনিরাপদ। তাদের প্রতিটি পদেই বিপদের সম্মুখিন হতে হয়। অপরাধীরা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে আশার কথা এই যে, বাংলাদেশে এ নারী নির্যাতন রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর সুত্র ধরে অপরাধীদের অপরাধ প্রমানে ডি,এন,এ প্রযুক্তি এখন বাংলাদেশে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজে অবস্থিত ন্যাশনাল ফরেনসিক ডি, এন, এ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরী কর্তৃক নিম্ন লিখিত সেবা প্রদান করা হয়ঃ

  • ধর্ষণ, হত্যা প্রভৃতি জঘন্যতম অপরাধের অপরাধী সনাক্ত করণ।
  • পিতৃত্ব, মাতৃত্ব নির্ণয়।
  • বিচ্ছিন্ন অথবা বিকৃত মৃতদেহ সনাক্তকরণ।

সর্বশেষে আমরা এটাই বলতে পারি এর সবকিছুর উর্ধ্বে নারী নির্যাতন বন্ধ করতে আমাদের সকলকে একাত্ম হয়ে এর প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে।

Monday, November 10, 2008

আমি চাই না

Title of this post: I don’t want by Firoza Begum Poly


আমি আর বৃষ্টির মত, ঝড়তে চাই না
আমি আর র্ঝণার মত,কাঁদতে চাই না
আমি আর চাঁদের মত, হাসতে চাই না
আমি আর নদীর মত, বইতে চাই না
আমি আর নূপুরের ঝঙ্কারে, নাচতে চাই না
আমি আর কোকিলের সুরে, গাইতে চাই না
আমি আর নিঝুম রাতে, ঘুমাতে চাই না
আমি আর চুরির রিনি-ঝিনি শব্দে
কারো মন কারতে চাই না
আমি আর ভালবাসার মত ভালবাসতে চাই না

নীল

Title of this post: The blue colour By Firoza Begum Poly

তুমি কি সেই স্বপ্নের পুরু?
যাকে আমি লাল নীল রং

তুলি দিয়ে এঁকেছি

তোমার মনটা কেন

নীল আকাশের স্পর্শ করা

বিশাল পাহাড় নয়

এমনটি আমি চাইনি

ভালবাসায় এত দু:খ
,
এত কষ্ট কেন
?
তাহলে কি ভাববো কষ্টের আর এক

নাম ভালবাসা

তাহলে চিৎকার করে পৃথিবীকে বলছি

পৃথিবী
, তোমার সকল নীল,
তুমি আমায় দাও
, আমায় দাও

Sunday, November 9, 2008

রাত্রি প্রহর

Title of this post: Late at night by Asia Afrin Anni


এসেছো রাত্রি প্রহর সায়াহ্নর পর
নতুন স্বপ্ন নিয়ে,
জ্যোৎস্না, পূর্ণিমা, অমাবস্যা
কত রুপে রাঙিয়ে।

ছড়াও তুমি সৌন্দর্য
দিয়ে জ্যোতি পূর্ণিমায়,
কর আঁধার পৃথিবী
হাত আছে অমাবস্যায়,
দেখা যায় সংমিশ্রন আলো-আধারের
রাত্রি প্রহর জ্যোৎস্নায়।

কেঁটে যাও ধীরে তুমি
কখনও বা দ্রুত,
ক্লান্ততা, অবসাদ থেকে
করে সকলকে মুক্ত।

পেরিয়ে সময় দেখাও তুমি
রাঙা প্রভাতের সূর্য,
তোমারই অপেক্ষায় থাকি
তাকিয়ে আমি পূর্ব।


নিষ্ঠুর পৃথিবী

Title of this post: The cruel world by Laily Jahan Meghla

পৃথিবীর মানুষ আমাকে চায়
আমি পৃথিবীর মানুষকে চা না
বিশ্বাস করিনা কোন মানুষকে
বিশ্বাস করিনা বন্ধু নামে কোন মানুষকে
আমি বুঝে গেছি, ন্ধু মানে প্রতারক
পৃথিবীর মানুষ এত নিষ্ঠু
চলে যাবো
একদিন নিষ্ঠুর মানুষের এই নিষ্ঠুর পৃথিবী ছেড়ে,
দূর থেকে বহুদূরে.......


Saturday, October 11, 2008

বিধবা নারী

Title of this post: A Widow Joynab khanam

যার স্বামী মারা গেছে
তারই নাম বিধবা
দুনিয়াতে তার আর
আপন রইল কেবা?
বিধবা নারী বুক ভাসায়
চোখের জলে
শ্বশুর বাড়ীর লোকেরা তাকে
উপহাস করে চলে।
বলে—স্বমীকে তো খেয়েছো
এই বয়সে
টগবগে যৌবন—দুঃখ কিসের
নতুন নাগর জুটে যাবে- অনায়াসে।

স্বামী তাকে বড় ভাল বাসত বলে
মেয়েটি এসব কভু ভাবেও না ভুলে।
স্বামীর শত স্মৃতি সে
রাত জেগে ভাবে
সিদ্ধান্ত তার
স্বামীর স্মৃতি নিয়েই জীবন কাটাবে।
বাবার বাড়ি যায় না সে ভয়ে
তারা যদি জোড় করে
দিয়ে দেয় বিয়ে!

স্বামীর বাড়ীতে পড়ে আছে
বিধবা নারী
শ্বাশুড়ী তাকে পরিচয় দেয়
কাজের মাথারি।
সারা বাড়ির সব কাজ
করছে নিজ হাতে
কথায় কথায় ধমক আর
গালি আছে সাথে।
পরিবারের সবার সবই জোটে
বিধবার জন্য কারো টাকা নেই মোটে।
পরনে ছেঁড়া শাড়ি, ছেঁড়া ব্লাউজ
সেদিকে কারো যেন নেই কোন হুশ।
খাবার খাবে সে সবার শেষে
বুয়ার ঘরে পরে থাকে
ভিখারীর বেশে।
রাত হলে ভয় পায়
কেউ নেই সাথে
ভাবে সে-একা থাকার সিদ্ধান্ত
ভুল আছে কি তাতে?
এই দুর্বিষহ জীবনের যন্ত্রণা
আর যে সওয়া যায়না।

ঈদ এলে বিধবাকে
করা হয় মূল্যবান,
যাকাতের নতুন কাপড়ে
দেয়া হয় সম্মান।
বিধবার মুখ দেখে
বাইরে যায়না কেউ
কারো নতুন বাচ্চার মুখ
সে দেখেনা কভু।
কারণ সে অপয়া, অলক্ষী তাই
সবাই তাকে এড়িয়ে চলে
নির্মম অবহেলায়।

স্বামীকে খেয়েছে সে
এই তার অপরাধ,
বিধবার বাঁচার আর জাগেনা স্বাদ।
গ্রামের মাতবর একদিন মাতাল হয়ে
ঢুকে পড়ে রাতের বেলায়
বিধবার ঘরে।
বিধবা বটি নিয়ে আসল তেড়ে
মাতবর কলঙ্ক রটাল বিধবাকে ঘিরে।
চরিত্র হীনা উপাধি
সহ্য হলনা তার
নদী জলে ডুবে মরে
মেনে নিল হার।

নিঃসন্তান নারী

Title of this post: Childless woman by Joynab khanam

কেউ মা হয় বছর বছর
কেউ হয়না কোন বছর
যার হয় সে অনেক সুখী
হয়না যার সে পোড়া মূখী।
শ্বাশুড়ী তাকে ডাকে অপয়া
স্বামী তাকে ডাকে বেহায়া ।।
প্রতিবেশীর কাছে সে
অলুক্ষণে-ভাগ্যহীনা
নিঃসন্তান নারীর সাথে
কেউ আর মিশেনা।
সবাই যেন করে তাকে করুণা
ভাবে সে-মরণ কেন আসেনা?
স্বামীর সংসারের স্বপ্ন ছাড়ি
একদিন ফিরে সে বাপের বাড়ি।
মা হওয়ার জন্য সে-
পায়নি কোন চিকি‌‌ৎসা
পেয়েছিল তাবিজ আর পীরের পানিপড়া।
দোষ কার-স্বামীর নাকি তার?
হয়নি প্রমাণ
ফিরে আসতে হল চিরতরে
মুখ বুজে সয়ে সব অপমান।
নিঃসন্তান হওয়া যেন
নারীর জন্মগত পাপ,
নিঃসন্তান নারী
যেন সমাজেও অভিশাপ।

যৌতুক প্রথা

Title of this post: Dowry tradition by Asia Afrin Anni

বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশে বিভিন্ন রীতিনীতি ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে অস্তিত্ব বজায় রেখেছেএর মধ্যে যৌতুক প্রথা অন্যতম এবং এটি বহুকাল ধরে গ্রামীন সমাজে বিস্তার লাভ করছেযৌতুক বলতে গ্রামীন সমাজে কন্যার বিয়ের সময় তার অসহায় পিতামাতা দ্বারা উপঢৌকন হিসেবে বরকে দেয়া প্রদত্ত সম্পদকে বোঝায়যৌতুকের আবির্ভাব হয়েছে পুরুষ শাসিত সমাজ থেকেবরপক্ষ যৌতুককে তাদের পাওনা এবং কন্যাকে ক্রয়-বিক্রয়ের বস্তু মনে করেবাংলাদেশে যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছেগ্রামে মেয়েদের বিয়ের জন্য তাদের দুঃখিনী মাতা-পিতাদের অর্থের বিনিময়ে সুখ কিনে নিতে হয় বরপক্ষের কাছ থেকেবরপক্ষকে যৌতুক দিতে পারলে মেয়েদের বিয়ে হয় নয়ত তাদের কুমারী হয়েই জীবন কাটাতে হয় ঘরের এক কোনেআর যদি যৌতুক ছাড়া কোন মেয়ের বিয়ে হয়, তাহলে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ীতে সেই মেয়েকে নীরবে সীমাহীন অত্যাচার সহ্য করতে হয়শ্বশুর সম্পদশালী হলে বরের যৌতুকের পরিমান বাড়তেই থাকে

এই প্রথাটি এখনও চালু আছে কারণ বাংলাদেশের মানুষ সচেতন নয়একমাত্র সচেতনতার অভাবে যৌতুকের মত একটি প্রকট সমস্যা বাংলাদেশে বিরাজ করছেএছাড়া এই সমস্যা উৎখাতের জন্য বিভিন্ন কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছেএই আইনগুলোকে আমরা যদি সঠিক ভাবে কাযর্কর করি এবং নিজেরা সচেতন হই তাহলে আমরা যৌতুক প্রথা প্রতিরোধ করতে পারব, পারব বাংলাদেশকে যৌতুক প্রথাবিহীন দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে

Friday, October 10, 2008

ভালোবাসা

Title of this post: Love by Laily Jahan Meghla

ভালোবাসা দিয়ে আমরা মানুষ
জীবনটাকে গড়ি
ভালোবাসা হতে তৈরী যত মন
অনিন্দ্র সৃষ্টি
কখনো বা এই ভলোবাসা
আশার স্বপ্ন দেখায়
কখনো বা এই ভালোবাসায়
চিরদিন বেঁচে থাকে আজীবন
খোদার কাছে এই দোয়া করি
কখনো বা এই ভালোবাসা
পরে চোখের জলের বৃষ্টি
ভালোবাসা দিয়ে যুদ্ধ শুরু
ভালোবাসা আনে শান্তি
এই ভালোবাসা দুর করে দেয়,
হাজারো ভুলভ্রান্তি।

সুখ

Title of this post: Happiness by Pretty Ahmed

সুখ তোমাকে পাইনি বলে হয়ে গিয়েছি
আকাশের কালো মেঘ

সুখ তোমাকে পাইনি বলে রূপ
নিয়েছি সাগড়ের হাঙ্গরে
সুখ তোমাকে পাইনি বলে মিতালী
করেছি মানুষ খেকো গাছের সাথে

সুখ তোমাকে পাইনি বলে তাই ঝড়ে
গেছি শ্রাবনের ফোটা ফুল হয়ে
সুখ তোমাকে পাইনি বলে তাই
পড়ে আছি ডানা ভাঙা পাখির মত করে

সুখ তোমাকে পাইনি বলে তাই
বন্ধুত্ব করেছি চিতা বাঘের সাথে
সুখ তোমাকে পাইনি বলে তা
বয়ে যাচ্ছি বহতা নদীর মত করে

সুখ তোমাকে পাইনি বলে পুড়ে
যাচ্ছি লেলিহান অনলের মধ্যে পড়ে
সুখ শুধুই তোমাকে পাইনি বলে
নিশেঃষ হয়ে যাচ্ছি তিলেতিলে

Thursday, October 9, 2008

একজন নারীর আত্মকথা

Title of this post: A tale of a woman by Ayesha Sanjida Synthia.


পারভিন হচ্ছে আমাদের মতই একজন অতি সাধারণ মেয়ে। কৃষক পরিবারের এই অতি সাধারণ মেয়েটি তার ভাই-বোনদের মধ্যে বড়। বাবা-মা আর ভাই বোনদের নিয়ে তার পরিবার। শহরে পারভিনের জন্ম হলেও সে গ্রামেই বড় হয়েছে।

পারভিন পড়ালেখায় ভাল ছিল। গ্রামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সে পড়ত। কিন্তু গ্রাম বাংলায় আজও বাল্য বিবাহের একটি প্রথা প্রচলিত আছে। মেয়ে বড় হয়েছে ওকে তাড়াতাড়ি বিবাহ না দিলে পরে আর বিবাহ হবে না। তাই ৫ম শ্রেণীতে অধ্যায়ন অবস্থায় পারভিনের বাবা পারভিনকে বিবাহ দেয়।

প্রতিটি মেয়েরই স্বপ্ন থাকে ভাল স্বামী সুন্দর সংসার। কিন্তু পারভিনের সেই স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই রয়ে গেল। বিবাহের কিছুদিন পর স্বামীর অত্যাচার শুরু হয়ে যায়। পারভিনের মতে তার স্বামী বউ মারায় পৈশাচিক আনন্দ পেত। সে কারণে-অকারণে শুধু মারত। ওকে খেতে দিত, কাপড় দিত না।

বিবাহের কয়েক মাস পর পারভিন গর্ভবতী হল। গর্ভকালীণ অবস্থায় স্বামীর অত্যাচারের হাত থেকে মেয়েকে ও নবজাতকটিকে রক্ষা করতে, পারভিনের বাবা পারভিনকে নিতে আসে। মেয়ের বাড়িতে তার কোনো আদর-সমাদোর কিছুই হল না। তিনি কষ্ট ভরা মনে মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন।

অবশেষে পারভিনের আধাঁর ঘর আলোকিত করে ফুটফুটে সুন্দর একটি পুত্র সন্তান এল। শিশু জন্মের খবরটি পেয়েও পারভিনের স্বামী তার সন্তান ও স্ত্রীকে একটিবারের জন্যে দেখতে আসেনি। বরং, সে তার সন্তানকে অস্বীকার করে।

বাঙালি নারী শত অত্যাচার সহ্য করেও স্বামীর চরনে পড়ে থাকে। পারভিনও তার ব্যতিক্রম করল না। এবার পারভিনের উপর তার স্বামীর অত্যাচার আরো বেড়ে গেল। তার স্বামীর অবিশ্বাস, সন্দেহ এবং অসহনীয় মারধোর পারভিনকে একদিন প্রতিবাদী করে তোলে। অবশেষে পারভিন বাধ্য হয় তার স্বামীকে তালাক দিতে।

পারভিন ও তার ছেলে বাবু সেই পৈচাশিক লোকটির হাত থেকে মুক্তি পেলেও, মুক্তি পায়নি অভাব-অনটন, দারিদ্রতা ও সমাজের কটুকথার হাত থেকে। বাবু এখন গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর একজন ছাত্র। বাবু তার নানার বাড়িতে থাকে। পারভিন তার পরিবারের দারিদ্রতা মোচনের জন্য শহরে মানুষের বাসায় কাজ করে। তবুও আছে তাদের অভাব অনটন। কখনো হয়তো তারা পেটপুড়ে দু‌‌‌‌‍‍‍‍'বেলা খেতে পায় কখনো বা পায় না। এটাই হচ্ছে আমাদের দেশে নারী জাতির অবস্থান।

বাংলাদেশের আনাচে কানাচে এমন আরও অনেক পারভিন আছে যারা প্রতিনিয়ত এধরনের অত্যাচারের সম্মুক্ষীন হচ্ছে। নারী জাতির এ অবস্থানের অবসানও একদিন নারীকেই করতে হবে। আসুন আমরা সবাই আমাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হই।

Sunday, September 14, 2008

ঘুরে আসুন সোনার গাঁও

Title of this post: Visit Sonargaon By Sujon

শত ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটাতে কাটাতে হাঁপিয়ে উঠেছেন? পরিবার পরিজন নিয়ে কোথাও ঘুরে আসার কথা ভাবছেন? কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত, সুন্দরবন বা সিলেট যাবেন কিন্তু এত সময় কোথায়তারপরও ব্যস্ততার মাঝে একটু বিনোদন প্রয়োজনঅনেকদিন হয়ে গেল পরিবার পরিজন কে নিয়ে কোথাও যেতে পারছেন না ঐ সময়ের সল্পতায় কারনেইসল্প সময়ের মধ্যেই মনোমুগ্ধকর বাংলার প্রাচীন রাজধানী গ্রাম বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৈষ্টিত সোনারগাঁও জাদুর ঘুরে আসতে পারেনবাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনার গায়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতি সম্পর্কে ধারনা নিতে পারবেন অল্প সময়েনদী-নালা, খাল-বিল পরিবেষ্টিত এবং অসংখ্য গাছপালা সবুজের সমারোহ আপনাকে সহজেই আকৃষ্ট করবেআর এজন্য দূরের ভ্রমন পিপাসু মানুষ, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী এবং বিদেশী পর্যটকরা প্রতিনিয়ত আসছেঈশা খাঁর বাড়ীটি অসাধারন স্থাপত্যশীল আর মধ্যযুগে পানাম নগরী আপনাকে কিছু্‌ক্ষনের জন্য হলেও ভুলিয়ে দেবে ব্যস্ততা, দুঃখ, বেদনা

কিভাবে যাবেন :

ঢাকার যে কোন জায়গা থেকে সায়েদাবাদ- যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর ব্রীজ পার হয়ে মোগড়াপারা বাসষ্ট্যন্ড থেকে প্রায় ২কি:মি:অভ্যন্তরে সোনারগাঁ যাদুঘরের অবস্থান এবং এর সাথেই রয়েছে পানাম নগরীবাস, মিনিবাস বেবি-ট্যক্সি, মোটরছাইকেল সহ যে কোন বাহনেই এখানে আসা যায়যাদুঘরের গেটেই রয়েছে সকল প্রকার যানবাহনের নিরাপদ র্পাকিং স্থা

যা দেখবেন:

ঈশা খাঁর বাড়ীটি লোক ও কারুশিল্প যাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়এই বাড়ীটির নির্মান শৈলী অত্যন্ত চমৎকার কারুকার্যেগড়াসময়ের আবর্তে এর নকশা গুলি প্রসনে মুছে যেতে বসেছে, ঠিক এবং নির্মান শেলী বলে দেয় বাংলার পুরোনো ইতিহাস এবং ঐতিহ্যএই যাদুরে ১১টি গ্যালারী আছে যাতে দেখবেন গ্রামীণ,পটচিত্র, মুখোস ও নৌকার মডেল, উপজাতি, লোকজ বাদ্যযন্ত্র,ও পোড়ামাটির নিদর্শনলোহা, তামা, কাশা, পিতলের তৈজশ পত্র,অলংকারমৎশিল্প, কাঠতৈরী, শামুক, ঝিনুক, নারিকেল, কারুশিল্প, জামদানী শাড়ী, তাত বস্ত্র, শতরস্তী, রেশম বস্ত্র,পাটজাত শিল্প, ও লোহার কারুশিল্পযা বাংলার প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্যকে ফুঁটিয়ে তুলেছে


শিল্পচার্য জয়নুল লোক ও কারুশিল্প:

১৯৯৬ সালে শিল্পচার্য লোক ও কারুশিল্প স্থাপন করা হয়এর দুটি গ্যালারী আছে নিচতলায় রয়েছে কাঠ খোঁদাই করা বিভিন্ন প্রাচীন ঐতিহ্যের আকর্ষনীয় দ্রব্যাদী এবং দ্বিতীয় তলায় রয়েছে জামদানী ও নকশী কাথার গ্যালারী

পিকনিক স্পট :
সবুজ ঘেরা সব প্রকার সুবিধা সম্মনিত তিনটি পিকনিক স্পট রয়েছেএগুলো ভাড়া ব্যবহার করা হয়ে থাকে

নৌকা ভ্রমন:

সোনারগাঁও যাদুঘর পুরো এলাকাটাই মনোরম লেকদ্বারা পরি বেষ্টিতআর এখানে রয়েছে সুসজ্জিত ৬টি নৌকা, ঘন্টা হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়আরো রয়েছে, মেলা প্রদর্শনী, নাগোর দোলায় চড়া, শিশুদের ঘোড়ায় চড়া, এবং বড়শীতে মাছধরা সহ বিনোদনের যাবতীয় ব্যবস্থা


পাশেই রয়েছে: প্রাচীন পানাম নগরী যেখানে দেখতে পাবেন অসংখ্য পুরাতন বহুতল পুরোনো ভবন
জনপূন্য ভবন গুলো যেন প্রাচীন বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছেসোনারগাঁ এলাকা সবুজের প্রাচুর্যতা এতই বেশী যা আপনাকে ভূলিয়ে দেবে লোহা আর ইটের নগরী দুঃখ বেদনা আর ব্যস্ততা

উল্লেখ্য:

যে সপ্তাহের বুধ এবং বৃহস্পতিবার সোনারগাঁ জাদুঘর বন্দ থাকেজাদুঘরের প্রবেশ মূল্য মাত্র ১০ টাকা

Thursday, September 11, 2008

নির্যাতিত অবলা

Title of this post: Woman who faced violence by Sufiya Akter

অনেক দিনের একটা ইচ্ছা ছিল নার্সিং র্কোস শেখারচ্ছা পূরন ও হয়েছেআমি ছিলাম নারী জীবন প্রজেক্টের একজন নিয়মিত ছাত্রী এবং বাংলা ব্লগের একজন নিয়মিত লেখিকাসব ছেড়ে চলে এলাম নার্সিং র্কোস শিখতে কুমিল্লার ব্রাম্মনবাড়িয়ায়, একটা অপরিচিত যায়গাপ্রথম প্রথম সমস্যা হচ্ছিএখন একটু দ্বিধাবোধ কেটে গেছেতো যাই হোকআমি যেখানে থাকি এটা একটা হাসপাতালনতুন হাসপাতাল বলে রোগীর সংখ্যা কম দিনে ১০-১২টা রুগী সেআলাদা কোন র্নাস নেইআমরা এখানে শিখি এবং পাশাপাশি র্নাসিং এর দায়িত্ব পালন করিবিভিন্ন ধরনের রুগী আসেতাদে সেবা করিভালই লাগে

কিছু দিন আগে সকালে একটা রুগী এসেছেদৌড়ে গেলাম রুগীটাকে দেখতে প্রয়োজন মত সেবা দেয়াও শুরু করলামরোগীটি ছিল মহিলাপ্রথমবস্থায় বুঝতে পারিনি যে রোগীটির কি হয়েছেকিন্তু রে জানতে পারলাম মহিলাটি স্বামী ও শ্বাশুড়ীর নির্যাতনের স্বীকারতাকে এত পরিমানে মারধর করেছে যার ফলে তার জীবন নিয়ে টানাটানিমহিলাটিকে যথেষ্ট পরিমানে চেষ্টা করলাম সুস্থ রে তুলতেকিন্তু পারলাম না আমাদে ডাক্তার তাকে শহরের বড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেনকিন্তু পাষন্ড স্বামী তা মেনে নিলো নাবলল, আপনারা যা পারেন তাই করেননা পারলে বলেন আমি বাড়ি নিয়ে যাই ডাক্তার বলল, পনার স্ত্রীর অবস্থা খুব খারাপএই মুহুর্তে বাড়ি নিয়ে গেলে কিছু একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে লোকটি বলল,”ঘটুক সমস্যা নাইস্যার কিছু না বলে আরেকটা রুগী দেখতে চলে গেল আমি ও আমার সাথে যারা আছে আমরা রুগীটির কাছে থাকলামআমি রোগীটিকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার এঅবস্থা কিভাবে হয়েছেরোগীটি কথা বলতে পারছে না, শুধু চোখের পানি ফেলছে আর বলছে আমাকে খুব মেরেছেতার মুখ থেকে কোন কথা বেড়োচ্ছে না অবলা নির্যাতিত নারীদের জীবনে কোন স্বাধীনতা নেই আছে শুধু একটি স্বাধীনতা আর তা হল চোখের জল ফেলাআর কিছু বলতে হল না তাকে আমি বুঝতে পারলাম ইনি একজন স্বামীর নির্যাতনের স্বীকারসান্তনা দেয়ার ভাষা ছিল নাতবু ও যেহেতু সেবিকার পোষাক পড়েছি সেহেতু কিছু না কিছু সান্তনা দিতে তো হবেই তাই সান্তনা দিলামজরুরি বিভাগে রোগীটির স্যালাইন চলছেরুম থেকে হাসপাতালের বারান্দায় এসে দেখি মহিলার সেই পাষন্ড স্বামী দাঁড়িয়ে আছেতাকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনার স্ত্রীর সমস্যাটা কি? লোকটি বলল, কি আর সমস্যা, রে পেত্নিতে পাইছে, অয় সারা জীবন আমারে জালাইছেখালি খালি কোন কারণ ছাড়াই অজ্ঞান হইয়া যায় তখন আমার খুব রাগ হচ্ছিআমি তখন নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনিবলে ফেললাম এটা কোন কথা? আপনি এখনো পেত্নিতে বিশ্বাস করেননিজেকে সামলে নিয়ে বললাম , এধরনের বাজে কথা রোগীর সামনে বলা ঠিক নাআপনি তার স্বামী, আপনি যদি তাকে সান্তনা না দেন তবে কে দেবে?” আপনি সবসময় তার পাশে থাকবেন এবং স্যার যেটা বলল সেটা করেন, ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া সদ হাসপাতালে নিয়ে যানএই বলে আমি চলে এলাম রিসিপসনের রুমে ঐ যে আগেই বলেছি এটা নতুন হাসপাতাল তাই রিসিপসনের জন্য আলাদা কোন লোক নেইঅবশ্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেযাই হোক আমি রিসিপসনে গিয়ে বসলামওখানে আরো ও মেয়েরা ছিলগিয়ে দেখি মধ্য বয়স্ক একজন পুরুষ ও মহিলা এবং ছোট একটা বাচ্চা ওখানে বসে আছেতারপর জানতে পারলাম যে তারা অসুস্থ মহিলার বাবা এবং মাতারা উভয়েই কাদঁছে আমি ও আমার রুমমেট তাকে সান্তনা দিলাম এবং বললাম, পনার মেয়েকে কি সবসময় এরকম অত্যাচার করে? তিনি বললেন হ সব সময়ই করে, বিয়ার পরেততেই এমন করে তখন আমার রুমমেট জোরে চেঁচিয়ে বলল, আপনারা এর পদক্ষেপ নেন না কেন?” তারা বলল, শুধু মাত্র এই নাতিটার মুখের দিকে তাকাইয়া সহ্য কইরা আছি কাথাটা শুনে একবার চ্ছে হল আরও কিছু বলি কিন্তু চ্ছে থাকলেও উপায় ছিল নাএর মধ্যেই পাষন্ড সেই লোকটি এসে হয়ত বা আমাদে সব কথা শুনে ফেলেছিলতাই তার শ্বাশুড়ীকে ধমক দিয়ে বলল, এই বেটি এহেনে কি? মেয়ে জামাইয়ের কথায় মহিলাটি ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি ওখান থেকে ওঠে চলে গেলোলোকটি আরও অনেক কটু কথা বলল তার শ্বশুর এবং শ্বাশুড়ীকে আমাদে বলার কিছু ছিল নাশুধু পাষন্ড লোকের পাষন্ডতম ব্যবহারগুলো ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখলামঐ এলাকার কিছু মেয়ে আছে আমাদেসাথে নার্সিং শেখেওরা বলল লোকটি নাকি খুব খারাপবড় ছোট মানে না প্রচন্ড বেয়াদপ

৩০-মিনিট সময় যেতে না যেতেই দেখলাম মহিলাটিকে রিক্সায় তুলছে দেখে খুশি হলাম ভাবলাম সদ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেকিন্তু ভাগ্য যখন খারাপ হয় তখন ভাগ্যকে ভাল করার কোন রাস্তা থাকে নাকিছুক্ষণ পর জানলাম ওনাকে সদ হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতে নিয়ে গেছেবুঝতে পারলাম মহিলাটির ভাগ্যে শুধু নির্যাতন জুটলো কিন্তু সু-চিকিৎসা জুটলো না একেই কি বলে নারীর অধিকার? এ কেমন অধিকার যার ফলাফল শুধু নির্যাতন অন্যায়, অত্যাচার, অবজ্ঞা আর অবহেলারবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কথা আমার মনে পড়ে গেল-

অবহেলিত অসহায় নারীদে
বিচারের বানি নিরবে নিভৃতে কাঁদে

একথাটা কি আজ সত্যি হয়ে গেল? নে হচ্ছে তাইএকটা মেয়ে বাবার আদ মায়ের স্নেহ, ভালোবাসা ভুলতে চায় শুধু তার স্বামীর ভালোবাসা পাবার জন্যঅথচ সেই ভালোবাসাই যদি না পায় তবে একটা মেয়ের জীবনে আর কি থাকতে পারে? বাবা, মায়ের ভালোবাসার আঁচল ছেড়ে শ্বশুর, শ্বাশুড়ীর আঁচলে আশ্রয় নেয় চ সেই শ্বশুর শ্বাশুড়ী যদি তাদে ত্রু হয়ে দাঁড়ায়, তবে সেই অসহায় মেয়েটি কোথায় যাবে? র্নিযাতিত অসহায় নারীর আর্তনাদ চিৎকার আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছে,গাছের পাত ঝড়ে পড়ছে তবুও পাষন্ড স্বামীর মন গলে নাজানিনা মহিলাটি বেঁচে আছে কি না? নাকি পাষন্ডের নির্যাতন সহ্য করছেসরকার নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছেতারপরেও নারী নির্যাতন বেড়ে চলেছে দিনের পর দিনঅবলা নারীদে বর্তমান জীবনটা ধাপে ধাপে চলছেপ্রথম ধাপ বাবা মায়ের সংসারে দুঃখে কষ্টে মানুষ হওয়াতার পর বিয়েশ্বশুর বাড়ি যাওয়া শ্বাশুড়ীর ও স্বামীর নির্যাতনের স্বীকার হওয়াঅবশেষে ফলাফল মৃত্যুএটাই কি বর্তমান নারীদের পরিচয়? এর কি কোন প্রতিকার নেই? আমরা নারী এটাই কি আমাদের অপরাধ? না তা কিছুতেই হতে পারে না আমাদের অগ্রধিকার চাইআমরা সুন্দর ভাবে বাচঁতে চাইআমরা ভালোবাসা দিতে চাইভালোবাসা পেতে চাইআমরা স্বাধীনতা চাই এটা আমাদে চাওয়া, এটা আমাদে আকাঙ্খা

অসীম ইচ্ছা

Title of this post: Unlimited wills by Afiya Akter

জানিনা কি চাও তুমি
তবে মনে মনে ভাবি আমি
তুমি কাছে আসলে
আমার পাশে বসলে
আমার পৃথিবী থমকে যায়
নিজেকে সে প্রকাশ করতে পারে না
আমার পৃথিবীর স্বপ্নরা স্বপ্ন
দেখতে ভীষম ভয় পায়।
অনুভবে অভিমানে সে
নিজেকে গুটিয়ে রাখতে চায়
আপন অক্ষমতায় সে নিরবে
নিরব হয়ে থাকে।

গ্রামের নারী ও শহরের নারী

Title of this post: Women from rural and urban area by Jainub Khanam

নারী-গ্রামের হোক
, শহরের হোক, আধুনিক কিংবা সাধারন হোক, চালাক হোক কিংবা আনাড়ী- তার পরিচয় কিন্তু একটাই, সে নারীকিন্তু আমি যা নিয়ে ভাবছি তা হলো - নারীতে নারীতে কত তফাৎ? আমার জন্ম গ্রামেতাই খুব কাছ থেকে গ্রামের মেয়েদের জীবন যাত্রা আমি দেখেছিবিয়ের পরে আমার স্বামী আমাকে ঢাকা নিয়ে আসে। আমি এখন ঢাকা শহরে থাকিতাই শহরের মেয়েদের জীবন যাত্রা ও আমি কাছ থেকে দেখেছিশহর আর গ্রামের নারীদের জীবনে কত পার্থক্য ? গ্রামে বেশির ভাগ নারী লেখপড়ায় খুব একটা জোর দেয় নাকোন রকম এস.এস.সি পাশ করতে পারলেই অনেক কিছুকয়েক জন ব্যতীক্রম অবশ্যই আছেআমি আমাদে এলাকার কথাই বলছি৯ম বা ১০ম শ্রেণীতে পড়লেই বাবা মায়েরা বিয়ের কথা ভাবেনএরপর কোন একটা পাত্র বিদেশী হলে ভাল হয়বয়স বাবার বয়সের হোক, সমস্যা নেই, প্রচুর টাকা আছেলেখা পড়া কম, সমস্যা নেই, মোহরানা দেবে ৫লাখআমার মনে হয়, বাবা-মার জ্ঞানহীন ধ্যান ধারণার জন্যই মেয়েদের এই অবস্থামায়েরা ছোটবেলা থেকেই মেয়ের মনে একটা ধারণা তৈরী করে দেন যে, তোমরা নারীমক্তবে কোরান শরীফ শেষ করবে, বাংলা শিখে চিঠি পত্র লিখতে পারলেই হবে, তার পর বিয়ে দেব, বাচ্চা পালন, সংসার গুছানো ব্যাস তোমার দায়িত্ব শেষ

অথচ সংসার সুন্দর করে গুছানোর জন্য
, সংসার কে সুখী করার জন্য, স্বামীর সঠিক মূল্যায়ন, বাচ্চার সঠিক যত্ন, পরিবারের অন্যদের সাথে ভালব্যবহার, সবার প্রতি দায়িত্ববোধ, সচেতনতা এসব গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলোর জন্য উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক অর্থাৎ ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে হবে, সব কাজে পারর্দশী হতে হবেগ্রামের মায়েরা এসব কখনোই ভাবেন নাএতো গেলো অবিবাহিতা মেয়েদের কথা, এবার বউদের কথায় আসিতারাতো স্বামীর বাড়ীতে এসে রাজরানীসংসারের চাবী তার শাড়ীর আঁচলে, স্বামীর টাকা তার ড্রয়ারেইচ্ছে মত, খেয়াল মত সংসারে কর্তৃত্ব খাটায় তারাআমাদের বাড়ির বউরা এত সুখিসকালে উঠে নাস্তা খেয়ে উঠানে বসে সবাই আড্ডা দেয়১০ টায় বাচ্চাদের স্কুলে পাঠায়১১টায় বা ১২ টায় রান্না করে হিটার বা সিলিন্ডার গ্যাসে দুপুরে খেয়ে ঘুম দেয়, বিকালে নাস্তা খেয়ে আবার আড্ডা দেয়সন্ধ্যায় ঘরে যায়বাচ্চাদের পড়ালে পড়ায় না পড়ালে নাই৮টা বাজলে টিভি ছাড়ে ১০/১১ টা পর্যন্ত দেখা হয়এরপর ঘুমবউদের চিন্তা বা কোন টেনসন নেই বাজারেরস্বামীরা সবকিছু এনে হাজির করেতাদের গল্প, হাসি তামাশায় কেটে যায়ঘড়ির দিকে তাকানোর প্রয়োজন যেন নেইঅথচ শহরের নারীর জীবন গ্রামের নারীর জীবন থেকে সম্পূর্ন ভিন্নশহরের নারীরা একরকম সংগ্রামী জীবন কাটায়তাদের সময় চলে ঘড়ির সাথে পাল্লা দিয়েবাচ্চাদে স্কুলে নিয়ে যাওয়া, আনা, ঘর গুছানো, বাজার করা, রান্না করা, বাচ্চাকে কোচিং এ নেওয়া, গান, ড্রয়িং শিখাতে নেওয়া, সময় মত ঘুম পাড়ানো, রাত্রে রান্না সেরে আবার বাচ্চাকে পড়ানো, নিজের পড়া, ব্যক্তিগত কাজ, সবই তারা করছে দক্ষতার সাথেআমি দেখেছি আমার চতুর্পাশের বেশির ভাগ মেয়ে অনেক পরিশ্রমীঅবিবাহিতা মেয়েরা ও অলস সময় কাটায় নাতারা উচ্চ শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার, গ্রাফিক্স ডিজাইন, সেলাই, অত্যাধুনিক রান্না সহ আরো বিভিন্ন কোর্স শিখে নিজেকে দক্ষ, কর্মঠ ও সাবলম্বী করছেসারাদিন তারা কাজের মধ্যেই সময় কাটায়অবশ্য গ্রামে সুযোগ সুবিধা ও কমচাইলেই তারা কম্পিউটারে বসতে পারে নাইন্টারনেটে বিচরন করতে পারে না