আমি আফরোজা, আমি যখন স্কুলে পরতাম তখন থেকেই আম্মু আমাকে স্কুলে নিয়ে যেত এবং নিয়ে আসতো। এখন আমি মেয়েদের কলেজে পড়ি এখনো আমাকে আম্মু নিয়ে যায় নিয়ে আসে। অথচ ভাইয়া মাত্র তিন বছরের বড় সে একা যায় একা আসে। ভাইয়া কত স্বাধীন !
আমি রিফাত একই এলাকায় একটি স্কুলে পড়ি এবং একা বান্দুবীদের সাথে যাতায়াত করি। একদিন একা স্কুলে যাচ্ছিলাম রাস্তায় এক গোয়ালা যুবক এমন উক্তি করল, যা আমাকে খু্ব আঘাত করল আমি কাঁদলাম! আমি রেগে গিয়েছিলাম বেশ কয়েকজন লোক জমেছিল আমি তখন আর ও লজ্জা পেয়েছিলাম আমি কাঁদলাম! বাবা, মা, ভাইয়া আমাকে কয়েক সপ্তাহ স্কুলে যেতে দেয়নি। বাসা পরিবর্তন করেছিল , কারণ ওরা বাসা চিনেছিল। পরে অন্য রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতাম বোরকা পরে এবং উপদেশ মত মাথা নিচু করে রাস্তা দেখে চল ফেরা করি। এখন আমি কলেজে পড়ি ভাইয়া ও কলেজে পড়ে, ভাইয়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে ছাত্র আন্দোলনে মিছিলে অংশ নেয়। বাবা মা কিছু বলেনা। ভাইয়া কত স্বাধীন! যখন ইচ্ছে তখন বাসায় আসে। আর যদি আমি একদিন বোরকা না পড়ি অনেক বকা খেতে হয় - যত গরমই হোক আমাকে বোরকা পড়ে যেতেই হয়। আমি সুরভী (১৭) ঢাকায় একটি প্রাইভেট ডেন্টাল কলেজে পড়ি। আমার বাবা ও মা শিক্ষিত। দ্বিতীয় বর্ষে উঠায় বাবা-মা একটি মোবাইল ফোন কিনে দেয় যোগাযোগ রক্ষার জন্য এক বান্ধুবীর অনুপ্রেরনায় অন্য একটি মোবাইলে এক ছেলের সাথে প্রায় কথা হত। কারণ মোবাইলে প্রেম ও হয়ে গিয়েছিল। ব্যপারটা নিকটতম কয়েকজনে জানার পর বাবা মার কানে ও চলে আসে। শেষে আমাকে লেখাপড়া বন্ধ করে ঢাকা থেকে বাড়িতে নিয়ে যায়। অথচ আমি বাবা ও মার বিনা অনুমতিতে বা লেখাপড়ার শেষ হওয়ার আগে কখনোই বিয়ে করতাম না। এখন সারাদিন বাসায় বসে থাকি মোবাইল প্রেম করেছি বলে সব বান্ধুবীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ। বাবা মা বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
আমি কুলছুম বানু (২৫) ওরফে বাণুর মা বিয়ে হয়েছে সাত বছর আগে। গ্রামের এক রাজ মিস্ত্রিরির সাথে। ইতিমধ্যে আমাদের দুটো ছেলে সনন্তান হয়েছে। বড় ছেলের বয়স ৪ বছর ছোট ছেলের বয়স ১ বছর। স্বামীর অল্পবাড়ী ভিটা এবং ছোট ঘর ছাড়া স্থায়ী কোন সম্পদ নেই। প্রতিদিনের আয়ে চলে সংসার, গত পাঁচ মাস আগে স্থানীয় একটি এন.জি.ও থেকে পাঁচ হাজার টাকা লোন নেই আমার নামে স্বামী ব্যবসা করবে চিন্তা করে। একমাস পর স্বামী ঢাকায় চলে যায়। রাজমিস্ত্রির কাজ করবে বলে। এন.জি.ও লোক এসে কিস্তির জন্য। অভাবের জন্য অন্য লোকের বাড়িতে সনন্তানদের মুখে পর্যন্ত খাবার দিতে পারি না। প্রতিদিন কাজ পাওয়া যায় না। সন্তানরা কাঁদের ক্ষুধার কষ্টে এন.জি.ও সদস্যদের অপমান, আমার স্বামীর ঠিকানা জানা নেই। আমি কি এখন আত্নহত্যা করব!!! ঢাকায় স্বামীর খুঁজে যেতে সবাই নিষেধ করে কারণ আমি মেয়ে মানুষ ।
উপরে উল্লেখিত ঘটনা সম্মুহ আমাদের চারদিকে অনেক মেয়েদের জীবনে অহরহ ঘটছে। এই সকল ঘটনা সাধারনত কেউ প্রকাশ করে না, নারীরা এসব নির্যাতন নিরবে সহ্য করে যাচ্ছে। আর কত কাল.....???
1 comment:
কষ্ট লাগলো মনে লেখাগুলো পড়ে......
Post a Comment