আমাদের দেশের শিক্ষকরাই হচ্ছেন জাতি গড়ার কারিগড়। তাদেরকে আমাদের পিতা -মাতার মত সম্মান করি। কারণ পিতা-মাতার পরে তারাই আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত বা উপযুক্ত শিক্ষিত হতে সাহায্য করেন। তাই পথে কোথাও কোন ভাবে আমাদের শিক্ষক বা শিক্ষিকার সাথে দেখা হলে সালাম দেই। আমি এইচ. এস.সি পাশ করে অর্নাস এ র্ভতি পরীক্ষার জন্য ভর্তির ফরম কিনেছিলাম। ফরমটি কেনার দুই দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার শর্ত ছিল। তাই র্শত অনুযায়ী সব কিছু জোগাড় করার চিন্তায় ছিলাম। ফরম কেনার পরেরদিন কলেজে গেলাম নম্বরপত্রের ফটোকপি ও ছবি সত্যায়িত করার জন্য। কলেজ অফিসে যাওয়ার পর সেখানে দেখলাম সবাই অনেক ব্যস্ততা দেখাচ্ছে। আমার সাথে কেউ কোন কথা বলতে চাইলো না। আমি যখন অপেক্ষা করছিলাম সেই সময় আমাদের এক শিক্ষিকা রুমে আসলেন। কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন না। তবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব এই শিক্ষার হাতের দিয়ে গিয়েছিলেন। ম্যাডামকে নম্বরপত্রের ফটোকপিগুলো দিতেই তিনি বললেন দুইঘন্টা অপেক্ষা কর আমি আসছি,সই করে দিব, নইলে স্যার করে দিবেন।
স্যার তখন কলেজে ছিলেন না। সেই স্যারের বাসা আমাদের বাসার সাথে ছিল। তাই ভাবলাম দুই ঘন্টা অপেক্ষা না করে স্যারের বাসায় যাই। তাই কলেজ থেকে স্যারের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। চিন্তা করছিলাম যে কখনও স্যারের বাসায় যাইনি, স্যার কি মনে করবেন এই ভেবে অনেক ভয় করছিল। স্যারের রুম ছিল পাঁচ তালায়। তখন প্রায় সন্ধ্যা। একা একা পাঁচ তালাসিঁড়ি বেয়ে উঠার পর দেখলাম একটা রুমের দরজা খোলা। সেই রুমে স্যারের ছাত্ররা বসে ছিল। আমিও সেই রুমে গিয়ে বসলাম। স্যার তখন ভিতরের রুমে ছিলেন। আমি স্যারের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। তখন আমার মনে ভয় ও চিন্তা এক সাথে কাজ করছিল। তিনি অনেকক্ষণ পর ছাত্রদের পড়ানোর জন্য রুমে ডুকলেন। আমি তাকে সালাম ছিলাম। স্যারকে বললাম, এই ভর্তি ফরম জমা দেবার জন্য আপনার সই লাগবে। আমার কথা শেষ হতে না হতেই তিনি আমার উপর প্রচন্ড রেগে গেলেন। একটা সইয়ের জন্য তার মুখে যা আসল সেই ছাত্রদের সামনে সে তাই বলল। আমাকে অনেক গালাগালি করল সেই ছাত্রদের সামনে। তিনি শুধু তার কথা বলে গেলেন। আমার কথা শুনতে চাইলেন না আমি যে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটা সইয়ের জন্য ছুটাছুটি করলাম সেই কথা শুনতে চাইলেন না। তিনি শুধু তার কথা বলে গেলেন। প্রচন্ড রকম কষ্ট নিয়ে তার বাসা আসলাম। প্রত্যেকটা সিঁড়িতে পা দিচ্ছিলাম আর আমার আমি কিছুতেই কান্না থামাতে পারছিলাম না। হ্যাঁ তিনি অবশ্যই সই করে দিয়েছিলেন।
No comments:
Post a Comment