আমরা সবাই খুব বড় গলায় বলি আমাদের দেশে নারী-পুরুষের অধিকার সমান। আসলে কি তাই? যৌতুক, এসিড নিক্ষেপ, অপহরণ ইত্যাদি তো আছেই। কিন্তু সমাজের ছোট ছোট ধাপে নারীদের যে কিভাবে বঞ্চিত করা হয় সেটা কে দেখবে? দেখে সবাই কিন্তু কেউ কিছু বলে না। ঘুমন্ত মানুষকে জাগানো যায় কিন্তু যারা জেগে জেগে ঘুমায় তাদের কখনোই জাগানো যাবে না। নারীদের প্রতি অবহেলা হয়তবা কোনদিনই দুর হবে না। কারন কিছু সংখ্যক মানুষ সুন্দর সমাজ চায়, সবাইতো চায় না। আমি আমার পরিচিত কয়েকটি পরিবারের কথা জানাতে চাচ্ছি আর প্রশ্ন করছি সবার কাছে আমাদের সাথে বা আমাদের চারপাশে কি এগুলো হয় না ? তখন আমরা কি করি নীরবে সহ্য করা ছাড়া ?
মা বাবার সখের সন্তান অনিদ্রা । বিয়ের ১২ বছর পর তাদের প্রথম সন্তান অনিদ্রা। অনিদ্রা তার মা-বাবার আশা অনুযায়ী পড়াশুনা করে একদিন একটা ভাল চাকুরি পেল। যখন ওর বাবা জানলো অফিস ছুটি রাত ৮টায় তখন আর কিছু জিজ্ঞেস না করেই চাকরি করতে মানা করে দিল। সে বলল, “যে চাকরি করলে রাতে বাড়ি ফিরতে হয় সে চাকরির দরকার নেই।” অনিদ্রা স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। কয়েকটা অফিস আছে সন্ধার আগে ছুটি দেয়। আর এ যুগে এত ভাল চাকরি ও আর কোথায় পাবে। তাহলে কি লাভ হলো পড়ালেখা করে? সকল পরিশ্রম কি বৃথা?
মিথলা অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। বাসে করে যেতে হয় ভার্সিটিতে। বাসে এত মানুষের ভিড়েও কিছু ছেলে ধাক্কা দিতে একদম ভুলে না। মহিলাদেরও রেহাই নেই এসব থেকে। মন্দিরে ঘন্টা যেমন একে একে সবাই এসে বাজিয়ে যায়, তেমনি মিথিলাকেও সবাই ধাক্কা দিয়ে যায়। রাস্তা ঘাটে মানুষ যেভাবে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে থাকে মনে হয় মেয়েটা যেন চিড়িয়াখানার একটা জীব আর ওরা জীবটাকে দেখতে এসেছে।
নীলার বিয়ে ঠিক হয়েছে কিন্তু নীলা বিয়েতে রাজি না। কারণ ও কেবল ইন্টার মিডিয়েটে পড়ে। ও আরও পড়তে চায়। ছেলেকে ও এখনো পর্যন্ত দেখেনি, কিন্তু বাড়ির সবাই রাজি। ওকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজনও বোধ করলনা। ও আর কাউকে কিছু বলতে পারল না। বললে সবাই বলবে ও অন্য কাউকে পছন্দ করে, তাই নিজের মাথায় কলঙ্ক নেয়ার চেয়ে বিয়ে করে নেয়াই অনেক ভাল। এটা মেনে নিয়েই নীলা বিয়েতে রাজি হয়ে গেল। যেদিন বিয়ে হল সেদিন ওর পড়াশুনার মৃত্যু হল।
রুপা, রুপার স্বামী অপু, রুপার রাতুল রাতুলের স্ত্রী অনন্যা আর ওদের এক বন্ধু তমাল সিলেট যাচ্ছিল। হঠাৎ এক্সিডেন্ট অপু, অনন্য আর তমাল মারা গেল, আজ পাঁচ বছর রাতুলের বিয়ে অমিয়া সাথে। রাতুল তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারল কিন্তু রুপা পারল না। রুপার কি দোষ? রুপার দোষ ও একটি মেয়ে। তাই ও অলুক্ষণে। গোটা সমাজটা ওকে হেও চোখে দেখে, তাহলে ও কিভাবে বদলাবে। মেয়েদের মন নরম বিধায় ওরা অনেকেই পরবর্তিতে আর বিয়ে করতে পারে না। কিন্তু ও সমাজ কি পারতনা ওর মুখের সেই হাসিটা ফিরিয়ে দিতে?
5 comments:
nari nirjaton bondho korte shobaike agea ashte hobe.
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আশা করছি, নারী নির্যাতন বন্ধ করতে আপনি আমাদের সাথে এগিয়ে আসবেন...
আপনি বলছেন যে স্বামী শিক্ষিত বেশী হলে তা অনেকেই মানে না। আমি নিজেই দেখেছে যে নারী ই চায় তার স্বামী বেশী শিক্ষিত হোক। আসলে এর জন্য নারী জাতিই দ্বায়ী। এর সমাধানের জন্য আগে তাদের দাসত্ব চিন্তা, মনমানষিকতা পরিবর্তন করতে হবে। নারী তখনই নির্যাতিত হয় যখন তার স্বামীর পরিবার তার নিজের পরিবারের থেকে ধনী বা ক্ষমতাশালী হয়ে থাকে। কিন্তু এই সুযোগ নারী ই দিয়ে থাকে। তারা চায় অতিরিক্ত বড় ঘর। ফলে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়। আমি নিজেই অনেক মেয়েকে দেখেছি একটি ছেলের সাথে প্রেম করে, বিয়ে করে ধনী/বড় চাকরীজীবি ছেলেকে। ফলে সেখানে সে নির্যাতিত হতেই পারে, কিন্তু এতে তার বা তার পরিবারের কিছুই বলার থাকে না। কিন্তু কোন মেয়েই চিন্তা করে না যে ছেলেটি তাকে মন-প্রাণদিয়ে ভালবাসে তার সাথে প্রতারণার ফলএকদিন পেতেই হবে। মেয়েরা প্রথম জীবনে প্রেম করে সমবয়সী ছেলের সাথে, কিন্তু পরবর্তী জীবনে তারা বিয়ে করে বড় ঘরের এবং তার থেকে অনেক সিনিয়র একটি ছেলেকে। এক্ষেত্রে নির্যাতিত হলে কিছুই সে বলতে পারে না। আমি চাই মেয়েরা ঘরের বাইরেও কাজ করুক, কিন্তু আমি সেইসব স্বার্থবাদী মেয়েদের ঘৃণা করি। এবং এদের জন্যই আমি কোন মেয়েকে দেখতে পারি না। তবে আমি নিজেই দেখেছি যে মেয়ে স্বার্থের জন্য প্রেমিকের সাথে প্রতারনা করে অন্যকে বিয়ে করে তাকে অনেক কষ্টে সংসার করতে হয়। আজ আর লিখলাম না অন্যদিন লিখবো। অনেক কাজ রয়েছে। সকল ব্লগার আপুদের কে ধন্যবাদ
পোষ্টটি খুব ভাল। দেশ বিদেশের বিভিন্ন সংবাদ জানতে http://www.bangladesherpatro.com/ এবং http://jatiyatv.com/
Sir/Madam,
At first take my salam.
Your poem is very interesting & lovely for me.
Really you are great.
I am also sugest you.
You Can Join Us.
SMsudipBD.Com
Post a Comment