Saturday, February 28, 2009

যুদ্ধ জয়ের মন্ত্র

লিখেছেন: হাদিয়া আক্তার

কয়লাতে যদি না গলতো সোনা
আমার মায়ের নোলক হতোনা।

কঠিন উত্তাপে যদি না গলতো লোহা
সু-প্রাচির অট্টালিকা হতো না।

অতিত যদি নাইবা হতো
আধুনিকতার ছোঁয়া পেতাম না।

সোনার জন্য কয়লা যেমন
জ্ঞানের জন্য সাধনা তেমন।

লোহার জন্য কঠিন উত্তাপ
জয়ের জন্য অপর শ্রম।

অতিতের জীর্ণতার জন্য
ছিকল ছেড়ার সাহস হলো।

যুদ্ধ করার এই মন্ত্র
আমি প্রকৃতির কাছে শিখেছি।

আজ আমি জয় করতে জানি
তাইতো আমি বিশ্বকে চিনেছি।

নতুন পথের স্বপ্ন

লিখেছেন: হাদিয়া আক্তার
যাব আমি অনেক দূরে
ঐ লাল নীল আলোর পথে
প্রজাপতির ডানায় ভেসে।

জাগবো আমি কুড়ি হয়ে
ডাকবে আলো সকাল সাজে
সুভাস দেব সবার মাঝে।

লুকোচুড়ি খেলে কোকিল যে,
দোল খেলানো বসন্তেরই সাথে
পরবো আমি খোপার তারে।

পলাশ-গাঁদার সমারোহে
ডাকছে আমায় আলো হাতে
একটা মালার বাঁধনেতে।

দেখবো না আর পিছন ফিরে
কষ্ট আর গ্লানিকে মুছে ফেলে
জাগবো আমি ফাগুন হয়ে।

বসন্তের আগমনে

Title of this post: “When Falgum comes” by Farzana Akter Tuli

চলতে চলতে জীবনের প্রান্তে
কোন এক ফাগুনে,
দাঁড়িয়ে আছ তুমি
বসন্তের আগমনে।
জান কি, কে সে জন?
সে জন হল শ্রাবনের র্ঝণা ধারা,
যার প্রতিটি জলসোতে রয়েছে
অনুরাগের সাড়া।

সে হল এক ইন্দ্রধনু,
যার প্রতিটি অনুভব
সাত রং-এ রাঙানো রংধনু।
সে হল
আষাঢ়ের কালো মেঘ,
যার প্রতিটি পড়তে রয়েছে
অজানা সব আবেগ।
তুমি জান, জান কি?

Monday, February 16, 2009

কল্পপুরী

Title of this post: Imaginary world by Hadia Akter

পদ্ম ফোটার দিন
কী আর আছে?
আজও কী আর
ঝিলের বুকে মাছরাঙ্গারা হাসে?
গহিন বনে এখন কী আর
মায়া হড়িণ ডাকে?
দাদুর মুখে শুনেছি কত;
আম কাঁঠালের গল্প।
পুকুর ভরা মাছ;
গোয়াল ভরা গাভী;
শীতের দিনের পীঠাপুলি;
এসব এখন কল্পুরী।
সাত সমুদ্র পারি দিতে—
সাজেনাতো সপ্ত ডিঙ্গা।
বাজে নাতো ঢেঁকির নুপুর
যায়না কৃষাণ লাঙ্গল নিয়া
সবুজ শ্যামল মাঠের বুকে
গাঁয়ের কোকিল ডাকে নারে
বসন্ত যে হাড়িয়ে গেছে
গ্রীণ হাউজের চাপে পরে,
আধুনিকতার মুকুট পরে,
ইন্টারনেট এর বিশ্ব গড়ে,
পল্লীগ্রাম দুর্বিসহ মনে করে।

Friday, January 9, 2009

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

Title of this post: Natural beauty of Bangladesh by Ayesha Sanjida Synthia

এমন স্নিগ্ধ নদী কাহার?
ওথায় এমন ধুম্র পাহাড়?
কোথায় এমন হড়িৎ ক্ষেত্র
আকাশ তলে মেশে?
এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায়
বাতাস কাহার দেশে

প্রকৃতির লীলাক্ষেত্র আমাদের এ রূপসী বাংলাদেশ। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়, জলপ্রপাত, বনভূমি এদেশকে করে তুলেছে অপূর্ব রূপময়।এছাড়াও বাংলাদেশের কিছু পাহাড়-পর্বত ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশ এক বিশা বদ্বীপ। অর্থাৎ, সমভূমি অঞ্চল।

ছবি: রাহিমা আক্তার হিরা

আয়তনঃ বাংলাদেশ এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এ দেশ ২০° ৩৪' উত্তর অক্ষরেখা থেকে ২৬° ৩৮' উত্তর অক্ষরেখার মধ্যে এবং ৮৮°০১' পূর্ব দ্রাঘিমারেখা থেকে ৯২° ৪১' পূর্ব দ্রাঘিমারেখার মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ছাড়া সারা দেশটির চারপাশ ঘিরে রেখেছে ভারত।

বাংলাদেশের নদনদীঃ নদী মাতৃক দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ একটি ছোট্ট আয়তনের সবুজ শ্যামলে ঘেরা একটি দেশ। যার সর্বোত্র ছোট-বড় অসংখ্য জলাশয় জালের মত ছড়িয়ে আছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ১৯৯৬-৯৭ সালের তথ্য অনুসারে দেখা যায়, বাংলাদেশের নদী অঞ্চলের আয়তন ৯,৪০৫ বর্গ কিলোবাইট। বাংলাদেশের নদীর সংখ্যা প্রায় ৭০০। আর নদীবহুল দেশ বলে স্বাভাবিকভাবেই এ দেশের মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নদীর প্রভাব রয়েছে। পদ্মা, বহ্মপুত্র, যমুনা মেঘনা ও কর্ণফুলী বাংলাদেশের প্রধান নদী। এ নদীগুলোর উপনদী ও শাখানদী রয়েছে। উপনদী ও শাখানদী সহ বাংলাদেশে নদীর মোট দৈর্ঘ্য হল প্রায় ২২,১৫৫ কিলোমিটার। এ সকল নদনদী এর সমভূমি অঞ্চলকে করেছে শস্য শ্যামলা ও অপরুপ সৌন্দর্যের অধিকারী। প্রকৃতি যে কি আশ্চর্য সুন্দর তা বাংলাদেশের প্রতিটি ঋতুকে দৃষ্টিতে লক্ষ না করলে বুঝা যায় না। তাই বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এদেশে যুগে যুগে এসেছেন বহু পর্যটক, কবিরা লিখেছেন কবিতা। কবি কাজী কাদের নেওয়াজের ভাষায়

"পদ্মা যমুনা মধুমতি আর
মেঘনার মালা কন্ঠে পরি,
দাঁড়ায়ে রয়েছে সুজলা যে দেশ
সেই দেশে বাস আমরা করি।"

ভূ-প্রকৃতিঃ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও রূপ, লাবণ্যের কথা বলে শেষ করা যায় না। যতই বলি মনে হয় যেন কম বলা হয়েছে। এদেশের অনুপম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চিরকাল ধরে মুগ্ধ কবিচিত্তে কাব্যস্রোত বইয়ে দিয়েছে

ভাবুকের হৃদয়ে অনির্বচনীয় ভাবের ঢেউ জাগিয়েছে। বাংলাদেশে যে কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে যে কোন দিকেই দৃষ্টিপাত করি না কেন চোখ দুটো প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে ধন্য হয়, মনপ্রাণ আনন্দে ভরে ওঠে। কি পাহাড় টিলার রমনীয় শোভা, কী গাছপালা ও তৃণমূল শোভিত বনের মনোরম দৃশ্য, কী কলনাদিণী নদনদীর অপরূপ সৌন্দর্য, কী শ্যামল শোভাময় ফসলের ক্ষেত সবই এদেশে সুন্দর ও অনুপম । বাংলাদেশের প্রকৃতির এরূপ সৌন্দর্য দেখেই দ্বিজেন্দ্রলাল রায় লিখেছেন

"ধনধান্যে পুষ্পেভরা আমাদের এই বসুন্ধরা,
তাহার মাঝে এছে দেশ এক-সকল দেশের সেরা;
ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা;
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমা,
সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি।"

বাংলাদেশে এমন কোন স্থান নেই যেখানে সৌন্দর্যের এতটুকু ভাটা পড়েছে। সাগর রাতদিন তার পা ধুয়ে দিচ্ছে, নদী তার কটিদেশ ও গলায় মেঘলা ও চন্দ্রহারের মতো শোভা পাচ্ছে, মাঠের শ্যামলিমা তাকে শাড়ির মতো ঘিরে রেখেছে এবং সবুজ বনরাজি তার শিড়ে মুকুট পরিয়ে দিয়ে রানীর সাজে সাজিয়েছে। চট্টভূমি থেকে বরেন্দ্রভূমি পর্যন্ত সবখানে এ রূপের জোয়ার উতলে উঠেছে কোথাও এতটুকু কমতি নেই।

জলবায়ুঃ বাংলাদেশের এই যে এত সৌন্দর্য এর পেছনে কাজ করছে অনুকূল জলবায়ু। কর্কটক্রান্তি তার ওপর দিয়ে গেলেও সাগর কাছাকাছি থাকায় এবং মৌসুমি বায়ু তার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারনে শীত ও গ্রীষ্মের তীব্রতা এখানে অতিমাত্রায় অনুভূত হয় না। জুন মাসের শুরুতে বঙ্গোপসাগর থেকে উষ্ণ আদ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যায় এবং পূর্ব ও উত্তরের পাহাড়ি এলাকায় বাধা পেয়ে বাংলাদেশের প্রকৃতি এক অভিনব রূপ ধারণ করে। নদনদী কানায় কানায় পানিতে ভরে যায়। মাঠে মাঠে শস্য উৎপাদনের আয়োজন চলতে থাকে। হাঁসেরা দল বেঁধে আনন্দে সাঁতার কাঠতে থাকে। ছোট বড় মাছেরা ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটাছুটি করতে থাকে। শাপলা, কুমুদ প্রভূতি ফুল ফুঁটে অপূর্ব সৌন্দর্য ধারণ করে। গ্রীষ্মের দাবদাহ বর্ষার বর্ষনে অনেকটা কমে যায়। পাট ও আউশ ধানের ক্ষেতগুলো সবুজতায় ভরে যায়।

ছবি: আসমা আক্তার চৈতি

বর্ষার পরে আসে শরৎকাল। তখন গ্রীষ্মের তীব্রতা কিছুটা কমে আসে। শরতের চাঁদনী রাতে কি বনের গাছ-পালা, কী নদী তীরের কাশবন, কী গৃহস্থের কুটির, কী গতিশীল নদীস্রোত নতুন নতুন রূপে আমাদের চোখে ধরা দেয়। নানা রকমের ফুল ফোঁটে। শরতের শেষে কিছুটা শীতের আমেজ শুরু হয়। এর ফঁকে চলে আসে হেমন্তকাল। সোনালি ধানে মাঠ ভরে যায়। ফসলের সওগাত গৃহস্থের ঘরে ঘরে তুলে দিয়ে ধরনী এক সময় রিক্ত হয়। তখন আসে শীতকাল। সে সময় বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে। তীব্র শীত অনুভূত হয় এবং শ্যামল প্রকৃতি যেন বুড়োদের মতো শীর্নমূর্তি ধারন করে। এরপর একটা সময় আসে যখন শীত ও গ্রীষ্মের মিশ্র আমেজ অনুভূত হয়। আসে বসন্তকাল । গাছ-পালা ও তরুলতায় নতুন পাতা গজায় এবং বিচিত্র রঙের ফুল ফুটে। প্রকৃতি যেন নতুন সৌন্দর্যে তার যৌবন ফিরে পায়।

ঋতু প্রকৃতি: বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। ছয়টি ঋতুতে প্রকৃতির ছয় রকম অবস্থা দেখা যায়। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশের প্রকৃতি হয়ে ওঠে এক উদাসীন সন্ন্যাসীর মতো। তার রুক্ষ রৌদ্রের দাবদাহে মানবজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এ সময়ে কালবৈশাখি তার উদ্দামতা নিয়ে আসে। গ্রীষ্মের পর আসে বর্ষা। বর্ষায় এ দেশের প্রকৃতিতে যেন নতুন করে প্রানের সঞ্চার হয়। তখন প্রকৃতি হয়ে ওঠে সজীব ও সতেজ। ফসল ভরা ক্ষেতগুলো দেখলে মনে হয় আবহমান। ধানসিঁড়ির সমুদ্র। তখন মনে হয় প্রকৃতি যেন তার সমস্ত গ্লানি মুছে ফেলে। চাঁদনী রাতের শোভা তখন বড়ই মনোলোভা মনে হয়। কবি তাই বলেন-

“চাঁদনীর সাথে প্রতি রাতে রাতে
গোলা সোনা রং ঢালে যে
খুব মনোচোর শরতের ভোর
আলোছায়া ঋতু বড়সে।

শরতের শেষে, শীতের আগে আসে হেমন্ত ঋতু। এ সময় সোনালী ফসলে ভরা থাকে মাঠ-ঘাট। আর সোনালি ধানের শীষে যখন বাতাসের খেলা চলে তখন বাংলার নিসর্গে স্বর্গের ছোঁয়া লাগে। হেমন্তের পর শুষ্ক শীতল চেহারা নিয়ে আসে শীত। এ সময়ে প্রকৃতি বিবর্ন ও বিষন্ন হয়ে পড়ে। শীতের শেষে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। গাছপালা তখন সজীব হয়ে ওঠে। গাছে গাছে নতুন পাতা গজায় নতুন নতুন ফুল ফোঁটে।

বিভিন্ন দৃশ্য: বাংলাদেশ গ্রাম প্রধান দেশ । তার প্রত্যেকটি গ্রাম যেন প্রকৃতির এক অপূর্ব রঙ্গশালা। যেদিকে চোখ যায়- অবারিত সবুজ মাঠ, ফুলেফলে ভরা গাছপালা, তৃন গুল্মশোভিত বন-বনানী ও শ্যামল শস্যেক্ষত- এই অনুপম রূপসুধা পান করে সকলের হৃদয়ে এক অভিনব আনন্দের শিহরন জাগে। কোথাও প্রকৃতির সবুজ ঘোমটা ভেদ করে পাকা শস্যের সোনালি সুন্দর মুখখানা বের হয়ে আসছে, আবার কোথাও বিশালদেহ বটবৃক্ষ প্রান্তরের এক স্থানে উধ্বর্বাহু হয়ে মৌন তাপসের মত দাঁড়িয়ে সুশীতল ছায়া দিয়ে পথিকের ক্লান্তি দুর করছে । কোথাও তালগাছ এক পায়ে দাড়িঁয়ে আকাশ থেকে নীলিমা ছিনিয়ে আনার জন্যে ওপর দিকে হাত বাড়িয়েই চলছে, আবার কোথাও দীঘির কাকচক্ষু কালো পানিতে লাল সাদা শাপলা ও কুমুদ ফুঁটে অপরূপ সৌন্দর্য বিস্তার করছে। বাংলাদেশের এই সৌন্দর্য বৈচিত্র্য সবার মন আনন্দে ভরে দেয়।

ছবি: জান্নাত আরা আমজাদ

অবশেষে বলব বাংলাদেশ ঋতু বৈচিত্র্যের দেশ। ষড়ঋতুর খেলা চলে এদেশে। প্রত্যেক ঋতুতে এদেশে নতুন নতুন রূপ ধারন করে। নতুন আনন্দ আর সৌন্দর্যে আমাদের মন ভরিয়ে দেয়া। বাংলাদেশের মতো মনোরম প্রকৃতিক সৌন্দর্য পৃথিবীর আর কোন দেশে নেই। তাই কবি বলেছেন-

“সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।
সার্থক জনম মাগো, তোমায় ভালবেসে।”

সম্প্রতি আমি গ্রামে গিয়েছিলাম। আমি আমার জীবনের প্রথম ট্রেনে উঠেছিলাম। আমি, আমার মা, আমার ছোট দুই বোন, আমার খালা এবং আমার বড় মামা আমারা সকাল ৬:০০টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দ্যেশে রওয়ানা হলাম। সেখানে গিয়ে আমরা নির্ধারিত ট্রেনে উঠে বসলাম। আমি বসেছিলাম জানালার কাছে। ট্রেনটি ৭:১৫ মিনিটে ছেড়েছিল। ট্রেনটি ছিল অনেক বড়। ট্রেনটি খুব জোড়ে চলছিল। জানালা দিয়ে প্রচন্ড বাতাস আসছিল। ভোরের বাতাসকে আমি বেশ উপভোগ করলাম। শহরের কিছু পুরাতন ও কিছু নতুন ও মন মোহনীয় কিছু স্থানের পাশ দিয়ে ছুটল ট্রেনটি। ট্রেনটি ঝকঝক আওয়াজ তুলে ও হর্ণ বাজিয়ে বিকট গর্জন তুলে ছুটছে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। ধীরে ধীরে ট্রেনটি শহর পেরিয়ে গ্রামে চলে এলো। আবহাওয়া ছিল অনেক ভাল। উপরে পরিষ্কার আকাশ, নিচে সবুজ শ্যামলা সুন্দর ও মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। ৯ ঘন্টা পর আমরা গ্রামে এসে পৌঁছালাম। আমার গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার গুপিনাথপুর গ্রাম। তবে আমরা প্রথমে উঠি আমার নানাবাড়িতে সাহ‍্পুর গ্রামে। প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য আমাকে এতটাই মুগ্ধ করেছে যে, ক্লান্ত হয়ে আছি যে, তা ভুলেই গিয়েছিল। রাতের বেলায় দেখলাম প্রকৃতির আরেক রূপ ও রঙ। রাতের আকাশ চাঁদের আলোয় আলোকিত করে ফেলে। চাঁদের আলোয় রাতের বাঁশঝাড় ও গাছপালা গুলো অদ্ভুত সুন্দর লাগছিল। সুন্দর বাতাস বইছিল। অপূর্ব সুন্দর লাগছিল। দিনের বেলা কৃষাণীরা শীতল পাটি তৈরী করে এবং ধান ভানে, রোদে শুকায়। যে দিকে তাকাই সবুজের সমারোহ। প্রকৃতি যেন অপূর্ব সাজে সজ্জিত হয়ে আছে। প্রকৃতি যেন শ্যামলের সিংহাসন করে বসে আছে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলাম । এক এক জায়গায় এক এক রূপ বৈচিত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তার দুই ধারে খেজুর গাছ, নারকেল গাছ মাথা উঁচু করে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হয় যেন এরা এখানকার চিরন্তর প্রহরী। পথিকদের স্বাগতম জানাচ্ছে। অতঃপর আমাদের ছুটির দিন শেষ হয়ে এল। আমরা বাসে করে ঢাকায় ফিরলাম। বুঝতে পাড়লাম বাংলাদেশ শুধু সুন্দর নয়, অপূর্ব, অতূলনীয় ও অসাধারণ সুন্দর।


Saturday, January 3, 2009

নীরবে

Title of this post: Silently by Naushin Tarannam


কষ্টের শেকড় বেয়ে বেড়ে ওঠা
ডাল-পালা আর কাটা-পাতা,
ধৈর্য্যের আশে পাশে কাঁদে
এই বেহালা নীরবে।
শীতের ছোঁয়া লাগে
বুকের বাম পাশটা
শুকিয়ে গেছে নীরবে।
ভয়ে জড়ো-সরো আমার গন্তব্য,
বিষাদ আর বিষন্নতা এই মনে
ঘুমগুলো সব হরিয়েছে-নীরবে।
ভেসে গেছে সব,হাওয়ায় হাওয়ায়
নিভে গেছে সব মিথ্যে সময়ের নিয়ত বাতি,
এই আমি তার চোখে তাকিয়ে
জ্বালাতে পারিনি ব্যর্থতার বাতি-নীরবে।

পথের শিশু

Title of this post: Street Children by Naushin Tarannam


পথের শিশু
একটা শিশু পথের মাঝে
দাড়িয়ে থাকে একা
কেউ করেনা খোঁজ যে তার
কেউ বোঝেনা ব্যাথা।
এই শিশুটির পেথই জন্ম
পেথই হলো বড়।
জানেইনা যে অদৃষ্টে কি
দুঃখ আছে আরও !
মা বলে,ডাকেনি যে
ফোটেনি প্রথম কথা,
সেই শিশুটি না পেয়ে মাকে
পায় যে মনে ব্যাথা।
মায়ের আদর বঞ্চিত এই
হতভাগ্য ছেলেটি,
বাবার স্নেহ ভালোবাসাও
ভাগ্যে কখনও মেলেনি।
পথের মাঝে সেই ছেলেটি
দাড়িয়ে থেকে একা,
প্রশ্ন করেও নিরুত্তর সে
কেন এ বেঁচে থাকা?

শুভ নববর্ষ

Title of this post: Happy New Year by Raima Akter Hira


ওই শোনো গো নতুন দিন বুঝি এল আজ
তাই বধু রাখ তোমার হাতের যত কাজ,
নতুন দিনকে বরণ করে নিও বধু তোমার করে
শুনছ না কি তোমার গৃহদ্বারে,
ঘরের শিকলটি কে নাড়ে এমন শিশির ভেজা ভোরে।
দেখ বধু ঘরের দ্বার খুলে,
বরণ করে নিও বধু তার হাত দুটো ধরে।
নিও বধু মাথার ঘোমটা টেনে,
শীতের কুয়াশা ভেজা ভোরে চিনবে কি তারে
যদি সে আসে অচেনা সুরের মত করে।
নতুন আশার আলো সঞ্চার করে,
বরণ করো তাকে মিষ্টি হাসি দিয়ে;
নতুন দিনকে নতুন ভালবাসা দিয়ে।

স্বাগতম নতুন বছর ২০০৯ । এসো নতুন স্বপ্ন ,নতুন সম্ভাবনা নিয়ে। নতুন কিছু সৃষ্টির সুখে ,নতুন উল্লাসে ।আবেগের তরঙ্গে ভেসে নতুন আবেগ সৃষ্টির সুখে। ভালবাসার আশার সঞ্চার করে, নব দিগন্ত উন্মোচন করে। এসো হে নতুন বছর ডিজিট্যাল বাংলাদেশে। সবার মাঝে ডিজিট্যাল সুখে দুখে পাশে থাকবার হয়ে। এসো আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশে শীতের শিশির ভেজা সকালে হাসির প্রদীপ হাতে নিয়ে এই দেশের প্রতিটি ঘরে।

Thursday, December 4, 2008

নারী নির্যাতন বন্ধ করুন

Title of this post: Stop Violence Against Women by Fabliha Tasnim Hridi

আমরা সবাই খুব বড় গলায় বলি আমাদের দেশে নারী-পুরুষের অধিকার সমান। আসলে কি তাই? যৌতুক, এসিড নিক্ষেপ, অপহরণ ইত্যাদি তো আছেই। কিন্তু সমাজের ছোট ছোট ধাপে নারীদের যে কিভাবে বঞ্চিত করা হয় সেটা কে দেখবে? দেখে সবাই কিন্তু কেউ কিছু বলে না। ঘুমন্ত মানুষকে জাগানো যায় কিন্তু যারা জেগে জেগে ঘুমায় তাদের কখনোই জাগানো যাবে না। নারীদের প্রতি অবহেলা হয়তবা কোনদিনই দুর হবে না। কারন কিছু সংখ্যক মানুষ সুন্দর সমাজ চায়, সবাইতো চায় না। আমি আমার পরিচিত কয়েকটি পরিবারের কথা জানাতে চাচ্ছি আর প্রশ্ন করছি সবার কাছে আমাদের সাথে বা আমাদের চারপাশে কি এগুলো হয় না ? তখন আমরা কি করি নীরবে সহ্য করা ছাড়া ?

মা বাবার সখের সন্তান অনিদ্রা । বিয়ের ১২ বছর পর তাদের প্রথম সন্তান অনিদ্রা। অনিদ্রা তার মা-বাবার আশা অনুযায়ী পড়াশুনা করে একদিন একটা ভাল চাকুরি পেল। যখন ওর বাবা জানলো অফিস ছুটি রাত ৮টায় তখন আর কিছু জিজ্ঞেস না করেই চাকরি করতে মানা করে দিল। সে বলল,‍‍‌‌‌‌‌‍ ‍‌‌‌‌‌‌‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌যে চাকরি করলে রাতে বাড়ি ফিরতে হয় সে চাকরির দরকার নেই।‌‌‌‌‍‍ অনিদ্রা স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। কয়েকটা অফিস আছে সন্ধার আগে ছুটি দেয়। আর এ যুগে এত ভাল চাকরি ও আর কোথায় পাবে। তাহলে কি লাভ হলো পড়ালেখা করে? সকল পরিশ্রম কি বৃথা?

মিথলা অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। বাসে করে যেতে হয় ভার্সিটিতে। বাসে এত মানুষের ভিড়েও কিছু ছেলে ধাক্কা দিতে একদম ভুলে না। মহিলাদেরও রেহাই নেই এসব থেকে। মন্দিরে ঘন্টা যেমন একে একে সবাই এসে বাজিয়ে যায়, তেমনি মিথিলাকেও সবাই ধাক্কা দিয়ে যায়। রাস্তা ঘাটে মানুষ যেভাবে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে থাকে মনে হয় মেয়েটা যেন চিড়িয়াখানার একটা জীব আর ওরা জীবটাকে দেখতে এসেছে।

নীলার বিয়ে ঠিক হয়েছে কিন্তু নীলা বিয়েতে রাজি না। কারণ ও কেবল ইন্টার মিডিয়েটে পড়ে। ও আরও পড়তে চায়। ছেলেকে ও এখনো পর্যন্ত দেখেনি, কিন্তু বাড়ির সবাই রাজি। ওকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজনও বোধ করলনা। ও আর কাউকে কিছু বলতে পারল না। বললে সবাই বলবে ও অন্য কাউকে পছন্দ করে, তাই নিজের মাথায় কলঙ্ক নেয়ার চেয়ে বিয়ে করে নেয়াই অনেক ভাল। এটা মেনে নিয়েই নীলা বিয়েতে রাজি হয়ে গেল। যেদিন বিয়ে হল সেদিন ওর পড়াশুনার মৃত্যু হল।

রুপা, রুপার স্বামী অপু, রুপার রাতুল রাতুলের স্ত্রী অনন্যা আর ওদের এক বন্ধু তমাল সিলেট যাচ্ছিল। হঠাৎ এক্সিডেন্ট অপু, অনন্য আর তমাল মারা গেল, আজ পাঁচ বছর রাতুলের বিয়ে অমিয়া সাথে। রাতুল তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারল কিন্তু রুপা পারল না। রুপার কি দোষ? রুপার দোষ ও একটি মেয়ে। তাই ও অলুক্ষণে। গোটা সমাজটা ওকে হেও চোখে দেখে, তাহলে ও কিভাবে বদলাবে। মেয়েদের মন নরম বিধায় ওরা অনেকেই পরবর্তিতে আর বিয়ে করতে পারে না। কিন্তু ও সমাজ কি পারতনা ওর মুখের সেই হাসিটা ফিরিয়ে দিতে?

শুধুই কি এগুলো! আজও মহিলারা মার্কেটে গেলে দাম বেশী আর পুরুষেরা মার্কেটে গেলে দাম কম চায়। স্কুলে ভর্তির ব্যাপারে বাবা না গেলে মূল্য না দেয়া। স্বামীর চেয়ে স্ত্রী বেশী শিক্ষিত হতে পারবে না ইত্যাদি আরও কত কিছু সহ্য করতে হয় মেয়েদের। আজ কত নারী উন্নয়ন সংস্থা গড়ে উঠেছে। তারা নারীদের উন্নতি করছে, কর্মজীবি করছে। অনেক অশিক্ষিত শিক্ষিত হচ্ছে। তারা নারীদের অধিকারের জন্য কত মিছিল, মিটিং করছে। কিন্তু এসব ছোট ছোট বিষয়ও বলে দেখাও কি সম্ভব? কিন্তু জানেন, এসব বিষয় আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেও হবে না। কারণ তারা বুঝতো চায় না। যদি বুঝতে চাইত তাহলে অনেক আগেই বুঝত। আসুন না আমরা সবাই মিলে নারীদের উপর থেকে এই নির্যাতন বন্ধ করি।....

“আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস”- ২৫শে নভেম্বর ২০০৮

Tile of this post: “International Day Against Violence Against Women” 25th November,2008 by Farzana Akter Tuli

নারী এই শব্দটি প্রাচীন কাল থেকে প্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষণ নানাভাবে নির্যাতিত ও শোষিত হচ্ছে। অথচ এই নারীর কারণেই একটি সন্তান পৃথিবীর আলো দেখতে পায়, একটি সুন্দর জীবনের শুভ সুচনা হয়। অথচ নারীদের জীবন আমাদের এই সমাজে শুধুই একজন সামান্য নারী হিসাবে চিহ্নিত, যার কোন অস্তিত্ব নেই। আমাদের সমাজে নারী পুরুষ উভয় সমান অধিকারী। কিন্তু এই অধিকার নারীরা কতটুকু পায়। তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পুরুষ শাসিত এই সমাজে নারীদের কোন কর্মকান্ডই গ্রহণ যোগ্যতা পায় না। অথচ আমাদের দেশে বিগত কয়েক বছর যাবৎ নারীরা দেশ পরিচালনা করে আসছে।

অনেক ক্ষেত্রে আমাদের দেশে নারী নির্যাতনের মুলহোতা থাকে আরেকজন নারী। উদাহরন স্বরুপ বলা যেতে পারে যে, একজন মেয়ের বিয়ের পর সাধারণত সর্বপ্রথম শাশুরী-ননদ বা জা যৌতুকের চাপ প্রয়োগ করে। এতে করে মেয়েটি অসহায় হয়ে পড়ে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে আমাদের দেশের নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এর ফলে তারা নানা রকম সমস্যায় পড়ছে। যেমনঃ

সম্প্রতি দৌলতপুরে এক গৃহ বধুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। গত রোববার রাতে উপজেলার চৌহদ্দিঘাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রোববার রাত ১২টার দিকে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে নায়েব আলী তার স্ত্রী নাজেরা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এমনকি ঘটনা ধামাচাপা দিতে লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখে। এলাকাবাসী লাশ ঝুলিয়ে রাখতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। এলাকাবাসী জানায় নায়েব আলীর ৮ স্ত্রীর মধ্যে হাজেরা খাতুন চতুর্থ স্ত্রী এবং তার অধিকাংশ স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। এর পর থেকে হাজেরার সাথে তার স্বামীর কলহ চলে আসছিল। এর জের ধরেই এই হত্যাকান্ডটি ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। (মানব জমিন২৫শে নভেম্বর-০৮-মঙ্গলবার)

অতএব এ থেকে বোঝা যায় আমাদের নারীরা কত অসহায়। একজন লোক বহু বিবাহে লিপ্ত হয় আর তার বলি চরাতে হয় একজন নারীকে।

অপর দিকে গোলাপগঞ্জের কোটালি পাড়ায় একজন স্কুলছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে তাকে অপহরণ করে ৭দিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আর ৫জন ধর্ষণকারীকে পুলিশ খুঁজছে। (মানব জমিন২৫শে নভেম্বর-০৮-মঙ্গলবার)

এগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি নারীরা কতখানি অনিরাপদ। তাদের প্রতিটি পদেই বিপদের সম্মুখিন হতে হয়। অপরাধীরা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে আশার কথা এই যে, বাংলাদেশে এ নারী নির্যাতন রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর সুত্র ধরে অপরাধীদের অপরাধ প্রমানে ডি,এন,এ প্রযুক্তি এখন বাংলাদেশে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজে অবস্থিত ন্যাশনাল ফরেনসিক ডি, এন, এ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরী কর্তৃক নিম্ন লিখিত সেবা প্রদান করা হয়ঃ

  • ধর্ষণ, হত্যা প্রভৃতি জঘন্যতম অপরাধের অপরাধী সনাক্ত করণ।
  • পিতৃত্ব, মাতৃত্ব নির্ণয়।
  • বিচ্ছিন্ন অথবা বিকৃত মৃতদেহ সনাক্তকরণ।

সর্বশেষে আমরা এটাই বলতে পারি এর সবকিছুর উর্ধ্বে নারী নির্যাতন বন্ধ করতে আমাদের সকলকে একাত্ম হয়ে এর প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে।

Monday, November 10, 2008

আমি চাই না

Title of this post: I don’t want by Firoza Begum Poly


আমি আর বৃষ্টির মত, ঝড়তে চাই না
আমি আর র্ঝণার মত,কাঁদতে চাই না
আমি আর চাঁদের মত, হাসতে চাই না
আমি আর নদীর মত, বইতে চাই না
আমি আর নূপুরের ঝঙ্কারে, নাচতে চাই না
আমি আর কোকিলের সুরে, গাইতে চাই না
আমি আর নিঝুম রাতে, ঘুমাতে চাই না
আমি আর চুরির রিনি-ঝিনি শব্দে
কারো মন কারতে চাই না
আমি আর ভালবাসার মত ভালবাসতে চাই না

নীল

Title of this post: The blue colour By Firoza Begum Poly

তুমি কি সেই স্বপ্নের পুরু?
যাকে আমি লাল নীল রং

তুলি দিয়ে এঁকেছি

তোমার মনটা কেন

নীল আকাশের স্পর্শ করা

বিশাল পাহাড় নয়

এমনটি আমি চাইনি

ভালবাসায় এত দু:খ
,
এত কষ্ট কেন
?
তাহলে কি ভাববো কষ্টের আর এক

নাম ভালবাসা

তাহলে চিৎকার করে পৃথিবীকে বলছি

পৃথিবী
, তোমার সকল নীল,
তুমি আমায় দাও
, আমায় দাও

Sunday, November 9, 2008

রাত্রি প্রহর

Title of this post: Late at night by Asia Afrin Anni


এসেছো রাত্রি প্রহর সায়াহ্নর পর
নতুন স্বপ্ন নিয়ে,
জ্যোৎস্না, পূর্ণিমা, অমাবস্যা
কত রুপে রাঙিয়ে।

ছড়াও তুমি সৌন্দর্য
দিয়ে জ্যোতি পূর্ণিমায়,
কর আঁধার পৃথিবী
হাত আছে অমাবস্যায়,
দেখা যায় সংমিশ্রন আলো-আধারের
রাত্রি প্রহর জ্যোৎস্নায়।

কেঁটে যাও ধীরে তুমি
কখনও বা দ্রুত,
ক্লান্ততা, অবসাদ থেকে
করে সকলকে মুক্ত।

পেরিয়ে সময় দেখাও তুমি
রাঙা প্রভাতের সূর্য,
তোমারই অপেক্ষায় থাকি
তাকিয়ে আমি পূর্ব।


নিষ্ঠুর পৃথিবী

Title of this post: The cruel world by Laily Jahan Meghla

পৃথিবীর মানুষ আমাকে চায়
আমি পৃথিবীর মানুষকে চা না
বিশ্বাস করিনা কোন মানুষকে
বিশ্বাস করিনা বন্ধু নামে কোন মানুষকে
আমি বুঝে গেছি, ন্ধু মানে প্রতারক
পৃথিবীর মানুষ এত নিষ্ঠু
চলে যাবো
একদিন নিষ্ঠুর মানুষের এই নিষ্ঠুর পৃথিবী ছেড়ে,
দূর থেকে বহুদূরে.......


Saturday, October 11, 2008

বিধবা নারী

Title of this post: A Widow Joynab khanam

যার স্বামী মারা গেছে
তারই নাম বিধবা
দুনিয়াতে তার আর
আপন রইল কেবা?
বিধবা নারী বুক ভাসায়
চোখের জলে
শ্বশুর বাড়ীর লোকেরা তাকে
উপহাস করে চলে।
বলে—স্বমীকে তো খেয়েছো
এই বয়সে
টগবগে যৌবন—দুঃখ কিসের
নতুন নাগর জুটে যাবে- অনায়াসে।

স্বামী তাকে বড় ভাল বাসত বলে
মেয়েটি এসব কভু ভাবেও না ভুলে।
স্বামীর শত স্মৃতি সে
রাত জেগে ভাবে
সিদ্ধান্ত তার
স্বামীর স্মৃতি নিয়েই জীবন কাটাবে।
বাবার বাড়ি যায় না সে ভয়ে
তারা যদি জোড় করে
দিয়ে দেয় বিয়ে!

স্বামীর বাড়ীতে পড়ে আছে
বিধবা নারী
শ্বাশুড়ী তাকে পরিচয় দেয়
কাজের মাথারি।
সারা বাড়ির সব কাজ
করছে নিজ হাতে
কথায় কথায় ধমক আর
গালি আছে সাথে।
পরিবারের সবার সবই জোটে
বিধবার জন্য কারো টাকা নেই মোটে।
পরনে ছেঁড়া শাড়ি, ছেঁড়া ব্লাউজ
সেদিকে কারো যেন নেই কোন হুশ।
খাবার খাবে সে সবার শেষে
বুয়ার ঘরে পরে থাকে
ভিখারীর বেশে।
রাত হলে ভয় পায়
কেউ নেই সাথে
ভাবে সে-একা থাকার সিদ্ধান্ত
ভুল আছে কি তাতে?
এই দুর্বিষহ জীবনের যন্ত্রণা
আর যে সওয়া যায়না।

ঈদ এলে বিধবাকে
করা হয় মূল্যবান,
যাকাতের নতুন কাপড়ে
দেয়া হয় সম্মান।
বিধবার মুখ দেখে
বাইরে যায়না কেউ
কারো নতুন বাচ্চার মুখ
সে দেখেনা কভু।
কারণ সে অপয়া, অলক্ষী তাই
সবাই তাকে এড়িয়ে চলে
নির্মম অবহেলায়।

স্বামীকে খেয়েছে সে
এই তার অপরাধ,
বিধবার বাঁচার আর জাগেনা স্বাদ।
গ্রামের মাতবর একদিন মাতাল হয়ে
ঢুকে পড়ে রাতের বেলায়
বিধবার ঘরে।
বিধবা বটি নিয়ে আসল তেড়ে
মাতবর কলঙ্ক রটাল বিধবাকে ঘিরে।
চরিত্র হীনা উপাধি
সহ্য হলনা তার
নদী জলে ডুবে মরে
মেনে নিল হার।