একবিংশ শতাব্দির যুগেও বাংলাদেশ এখনও দারিদ্র এবং অশিক্ষার কড়াল গ্রাশে নিমজ্জীত। এখানে নিম্নবিত্ত পরিবারে স্কুল বয়সী ছেলে মেয়েরা স্কুল যাওয়ার পরিবর্তে কাজে বের হয়। তাদের পরিবার তাদের উপর নির্ভরশীল হয়। আমাদের চারপাশে এখনও অনেক দুঃখী মেয়ে রয়েছে। যাদের জীবন অনেক কষ্টে কেটেছে। আমি এখন একজন মেয়ের কথা বলব যার জীবনে নেমে এসে ছিল দুঃখের কালো ছায়া। মেয়েটির নাম ঝর্ণা।
তার জীবনের প্রতিটা ঘটনাই কান্নার। সুখের কোন ছায়া নেই সেখানে। পাহাড় তার কষ্টের কথা অন্যকে বুঝানোর জন্য কান্না দ্বারা প্রকাশ করে । কিন্তু এই কান্নাকে আমরা ঝর্ণা বলে থাকি। ঠিক তেমনি ঝর্ণা মেয়েটির প্রতিটা ঘটনার সাথে তার নামের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। পাহাড় তার কষ্টের কথা প্রকাশ করলেও ঝর্ণা তার কষ্ট এবং কান্নার কথা কারও কাছে প্রকাশ করতে পারেনি । সে তার কষ্টগুলো তার বুকে পাথর দিয়ে চেপে রেখেছে। সে তার সংগ্রামী জীবনে ধৈর্য্যের সাথে এগিয়েছে।
ঝর্ণার জন্মস্থান ফরিদপুরে। সেখানে সে মা এবং ভাই বোনের সাথে বসবাস করে। তারা ৬ বোন ১ ভাই। ভাই বোনের মধ্যে ঝর্ণার অবস্থান ৩য়। ঝর্ণা তার বাবাকে হারিয়েছে তিন বছর বয়সে। তাই তাদের সংসারের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। ঝর্ণার অন্যান্য ভাই বোনেরা বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত তাদের সংসারে ব্যয় বহন করত। কিন্তু বিয়ের পর তারা নিজ নিজ সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই বাধ্য হয়ে ঝর্ণাকেই সংসারের হাল ধরতে হয়। এই কষ্টের মাঝে ঝর্ণা ভালবেসেছে একজনকে এবং তাকে বিয়েও করেছে। সে তার দুটি মেয়ে এবং স্বামীকে নিয়ে সুখী জীবন যাপন করত। ঝর্ণা ভেবেছিল তার কষ্টের জীবন শেষ হয়েছে। কিন্তু সংসার জীবনে ও ঝর্ণা সুখী হতে পারে নি। কারন স্বামী তাদের ফেলে চলে যায়। ঝর্ণার কষ্টের পরিমান বেরে যেতে থাকে। সে তার মা এবং মেয়েদের মুখে খাবার দেয়ার জন্য বের হয় কাজের সন্ধানে। সে বাসা বাড়িতে প্রথমে কাজ নেয়। এবং সে মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়। কিন্তু সে যে কাজ করে তাতে তার সংসার চলে না। তাই সে আরেকটা কাজের খুঁজ করে। এবং সে একটা কাজ পেয়ে যায়। সে আমাদের কলেজের ক্যান্টিনে কাজ করে। সে সব সময় হাসি মুখ করে থাকে। এত কষ্টের মাঝেও সে হাসতে পারে। এখানে সে ছয় মাস ধরে কাজ করছে। সে এই কাজের টাকা দিয়ে বাসা বাড়িতে থাকে এবং মেয়ে দুটকে লেখাপড়া শিখায়। সে বুঝতে পেরেছে জীবনে, লেখাপড়া ছাড়া কোন মূল্য নেই। সে তার এই ছোট জীবনে অনেক সংগ্রাম করেছে। জীবনে কারও কাছে মাথা নত করেনি। সে জীবনের কাছে সংগ্রাম করে টিকে আছে। তার মেয়েদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখে। তাই সে তার মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করে দেয়। তার বড় মেয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে এবং ছোট মেয়ে ক্লাশ ওয়ান পড়ে। তার মনে অনেক আশা মেয়েদের সে লেখাপড়া শিখাবে মানুষের মত মানুষ করবে। তার জীবনের মতো যেন না হয় তাদের জীবন।
আমার মনে হয় জীবনে ভালবাসাই সব না। জীবনে বেচেঁ থাকার জন্য চাই প্রতিষ্ঠা। আমাদের সমাজে নারীরা এমনিতেই অবহেলিত ও বঞ্চিত। নানা ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে তারা। তাই আমাদের সবার উচিৎ আমাদের পায়ের নিচের মাটিকে শক্ত করে তোলা। আমাদের এগিয়ে চলা উচিৎ নতুন এক আলোর পথে.............
1 comment:
i,nurul islam study in dhaka university,seeking for help because i am severly affectd by sidr.and now we are in uncertainty.
Post a Comment