Content of this post: Helen written about a boy (one of her friends) Hima who is addicted. She tried to back Hima in his normal life but he did not back and gone in darken life…..
ছেলেটার সাথে পরিচয় হয় হঠাৎ করেই। যে এলাকায় আমরা থাকি সেও এই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। আমার বাসার বারান্দায় আমি যখন এসে দাড়াঁতাম, প্রায়ই দেখতাম তাকে, উদ্দেশ্যহীন এলোমেলো ছিল তার পথ চলা। কখনো এখানে তো কখনো সেখানে। সকাল, সন্ধ্যা বা রাত কোন সময় জ্ঞানই বোধ হয় ওর ছিল না। কখনো কখনো মাঝ রাতে হয়তো শোনা যেত ওর গান। গলাটা বেশ ভালই, গান শুনতে তাই হয়তো ভালই লাগতো। বোঝাই যায় সে ঠিক ৮/১০ টা মানুষের মত স্বভাবিক জীবন যাপন করে না। খুব বেশি কথা ওর সাথে আমার হতো না, আমিই ওকে এড়িয়ে চলতাম, ভাবতাম কি দরকার ঝামেলা বাড়িয়ে। যে যেমন আছে থাকুক, আমার কি? কিন্তু কে জানতো এই উদ্ভট ঝামেলার সাথে আমার ও কয়েকটা দিন জড়িয়ে যাবে।
সেদিন ছিল আমার জন্মদিন। আমার খুব আনন্দের একটা দিনই বটে। আমার প্রিয় সব মুখগুলো একে একে সব আমার বাসায় এসে ভীড় করেছে-আনন্দে উচ্ছাসে আমার ইচ্ছে করছিল প্রজাপতির মত নেচে বেড়াতে। আমি মিষ্টি একেবারেই পছন্দ করি না, তাই বাসায় এই শুভদিনেও কোন মিষ্টি বা কেক ছিল না। কিন্তু আমার প্রিয় বান্ধবীরা তা শুনবে কেন? ওদের মিষ্টি কিছু খাওয়াতেই হবে। কি আর করা, ওদের বললাম এখানে তো ভালো কোন মিষ্টি পাওয়া যাবে না; আইসক্রীম আনি। ওরা আমার কথায় সবাই রাজি। অগত্যা আমিই গেলাম আইসক্রীম কেনার জন্য।
কিন্তু সিঁড়ি ভেংগে যেই না পথে পা বাড়িয়েছি ওমনি পেছন থেকে কে যেন বললো- কোথায় যাচ্ছ? পিছনে ফিরে দেখি- সেই হাসি মুখ আর দুষ্ট দুষ্ট চোখ করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। কিছুটা রাগ করেই বললাম জাহান্নামে যাচ্ছি, যাবে তুমি? ওমা এতো দেখি মহা বাঁদর- আমার কথার সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে আমার সাথে সাথে হাঁটা শুরু করে দিয়েছে। রাগে তো আমি গজ গজ করে বললাম- কেন এলে? উত্তরে ও বললো আমি জীবনেও কোনদিন জাহান্নামে যাইনি আর তুমি য়খন পথচেনো তখন তোমার সাথেই যাওয়া ভালো। আমি আর কিছুনা বলে কিছু দুর হেঁটে গিয়ে দোকান থেকে ১ লিটার এর একটা আইসক্রীম আর ২ লিটার পানীয় নিয়ে বাসার দিকে আসছি।
তখন ও সে আমার পিছু পিছু হাঁটছে আর বলছে- আইসক্রীমের এক কোনা থেকে কিছুটা তো খাওয়াও। জাহান্নামে নয় নাই গেলে। এতো মামা বাড়ীর আবদার, ওকে পাত্তা না দিয়েই আমি আমার বাসার গেট পর্যন্ত- এসেছি কিন্তু যেই না সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠবো তখনই আমার হাত থেকে সব কিছু পড়ে যায় ঠিক ওর পায়ের উপর। ও বললো-আমাকে না দিয়ে তুমি কিছুই খেতে পারবে না। তারচেয়ে আমি ওগুলো তোমার বাড়ীতেই দিয়ে আসি। আমি আর কোন আপত্তি করলাম না, ভাবলাম কিছু খাইয়ে-দাইয়ে বিদায় দেবো। ঘরে নিয়ে এসে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম ওকে। বললাম ওর নাম হিমা, এই এলাকায়ই থাকে।
ভেবেছিলাম বাসায় এসে কিছুক্ষণ থেকেই সে বিদায় হবে, কিন্তু এতো দেখি কাঁঠাল গাছের আঁঠা হয়ে বসে আছে আর আমাদের দুষ্টমিগুলে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে। সেই থেকেই ওর সাথে আমার কথা বলা আগের থেকে একটু বেশি হতো। ওর জীবনে ভালবাসার একটা কষ্ট আছে আমাকে বলেছিলো ও। তাই সব ভুলে থাকতেই নাকি নেশা ধরেছে সে। ওর এসব কষ্টের কথা শুনে আমার ভীষণ খারাপ লাগতো ভাবতাম আমার একটু সহযোগিতায় ও যদি ভালো একটা জীবন পায় তাকে ক্ষতি কি? তাই যোগাযোগ রাখতাম ওর সাথে, কখনো নিজের কাজ রেখে সময় দিতাম ওকে। সবসময়ই শাসন করতাম এটা করো না, ওটা খাবে না, আরও কত কি।
কিন্তু যে জেগে ঘুমায় তাকে জাগানো যায় কি? এটা আমি অনেক পড়ে বুঝতে পেরেছি। আমি যখন এর উপর কোন কারনে রাগ করে ফোন বন্ধ করে রেখেছি দিনের পরদিন ও তখন সে নেশা নতুবা অন্য কোন মেয়েদের নিয়ে দিন কাটাতো। এসব অবশ্য আমি জানতাম একটু পরে। আমি তো চেয়েছিলাম ওকে ভালো একটা পথ দেখাতে কিন্তু ও চাইতো হারিয়ে যেতে আরো অন্ধকারে। আমি চেষ্টা করেছি বহুবার যেন ফিরে আসে স্বাভাবিক জীবনে। ওর জীবনটা সুন্দর করতে গিয়ে আমার সময়, পড়াশুনাই নষ্ট হয়েছে কিন্তু ও ফিরে আসেনি। ও বলতো একটা মেয়েকেই ও ভালোবাসে কিন্তু আমি তো দোখেছি যখন যে ওর সামনে আসে ও তাকেই ভালবাসে। সবচেয়ে বেশি ভালবাসে নেশাকে। আমার মত বন্ধু ওর কোন প্রয়োজন নেই কারন আমার সাথে থাকলে যে ভালো হতে হবে।
আমি ওর পথ থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছি। আর কোন যোগাযোগ নেই ওর সাথে। কারন ওর সাথে থাকলে ওর লাভ বা ক্ষতি কি হতো জানিনা কিন্তু আমি ও হয়তো হারিয়ে যেতাম অন্ধকারে। আমি তাই চলে এসেছি আমার পথে আর হিমা একটা উশৃঙ্খল জীবন নিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার থেকে আরও গভীর অন্ধকারে............
No comments:
Post a Comment