Wednesday, November 28, 2007

সেই মেয়ে

Title of this post: That Girl (A short story) written by Zannat Ara Amzad (English & computer student)
Content of this post: In this short story, author has written a story about a family from her imagination.

দ্বিতীয় অংশের পর

কি খুব পঁচা দেখাচ্ছিল? আমি জানি আপা এখন মনে মনে এসবই ভাবছিলআপা একটু নিরব প্রকৃতির, কিন্তু মনে মনে বেশ রোমান্টিক
আপা হয়ত ভাবছে না - না মোটেও পঁচা দেখাচ্ছে না আমাকেবরং আমি না সাজলেও হয়ত আরিফ সাহেব বলত ওয়াও! ইউ আর সো সুইট হানি, আই ওয়ানা বি উইথ ইউ আমি খুব সুইট একটা মেয়ে আমি জানি! আশপাশের মানুষগুলো এ ব্যাপারে মনে হয় আমার চেয়েও ভলো জানে, আর আমার বন্ধুদের চোখে-মুখেতো সারাক্ষনই মুগ্ধতা ঝরে- ওয়াও! ইউ আর সো- ও সুইট!এটা ছেলে বন্ধুদের কথা আর মেয়ে বন্ধুরা আমার গ্লামারটাকে বেশ পছন্দ করে এটা খুব ভালো করেই বুঝতে পারি!
আমার মতে সত্যিই বিথি আপা সুন্দরের অপ্সরী
আমি আপার রুমে ঢুকে বললাম, আপা এই নাও, এটা আরিফ সাহেব দিয়েছেন
আপা বলল, আরিফ সাহেব!
আপা এমন ভাব করছে যেন এই কাগজটা দেয়াতে আরিফ সাহেবের প্রতি বিরক্ত হয়েছে
আপা বলল, আচ্ছা এটা টেবিলে রাখ

আমি কাগজটা রেখে পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম আপা পেছনে তাকিয়ে আগে দেখে নিল কেউ আছে কিনাআপা কাগজটা পড়ছে আর হাসছে, কাগজটাতে কি লেখা ছিল তা তো জানাই আছেতিন শব্দের আমাদের সবার প্রিয় সেই কথাটি......আমি তোমাকে ভালোবাসিআপা একা একাই লজ্জা পাচ্ছেসেই সাথে তার ফোন নাম্বারটি পেয়ে বোধ হয় খুশিই হয়েছে, কিন্তু আমি জানি আপা তাকে ফোন করবে না, কারণ আপা ভিষণ লাজুক
পরের দিন সকালে আমি আরিফ সাহেবকে ফোন করি, ফোন রিসিভ করল আরিফ সাহেবইআমি হ্যালো বলার সঙ্গে সঙ্গে
আরিফ সাহেব বলল, সে বলল, আমি জানি তুমি কে, বিথি?
কথাটা শুনে আমি মুখ চেপে হাসলামভালোই হল তার সাথে একটু মজা করা যাবে, অসুবিধে কি! দুলাভাইয়ের সঙ্গে একটু মজা করতেই পারি
আরিফ সাহেব বললেন, কি হল চুপ করে আছেন যে? বুঝতে পারছিআমাকেই কথা বলতে হবেগতকাল তোমাকে দেখেই আমি মুগ্ধ হয়েছি ইউ আর সো-ও সুইট হানিতোমাকে আমার এবং আমাদের পরিবারের সবাই ভিষণ পছন্দ করেছেবিথি, আমি তো একাই সব বলে যাচ্ছি তুমি তো কিছুই বলছো না!
আমি কন্ঠটা ঝেরে পরিষ্কার করে বললাম এখনও কি আমার কণ্ঠটা চিনতে অসুবিধা হচ্ছে দুলাভাই!
আরিফ সাহেব বললেন, কে-কে-কে? আরিফ সাহেব হকচকিয়ে গেলেন
আমি বললাম, লজ্জা পাবার কিছুই নেই আমি তিথিভাগ্যিস্‌ ফোনটা আমার মা করেননি এবার তিনি জোরে কাশঁছেন
আমি বললাম, আপনার জোরে কাশঁবার প্রয়োজন নেইআমি আপনার কণ্ঠটা চিনতে ভুল করিনি, কি! এবার আপনি চুপসে গেলেন যে? থাক আর কথা বাড়াতে চাই নাআমার ইউনিভার্সিটির সময় হয়ে এল বিথি আপা আমাকে বলল, আপনাকে ফোন করে বলার জন্য যে, আপা আপনার সাথে সরাসরি কথা বলতে চায়আপনি কি একটু সময় দিতে পারবেন?
আরিফ সাহেব বললেন, নিশ্চয়ইতোমার আপা কবে কথা বলতে চায়?
আমি বললাম, আজ বিকেলে বোটানিকেল গার্ডেন
আরিফ সাহেব বললেন, বিকেল কয়টার দিকে?
আমি বললাম, ৪টার দিকে
আরিফ, আচ্ছা তোমার আপাকে বলবে আমি ৪টার আগেই সেখানে থাকবোআচ্ছা খোদা হাফেজ
আমি রিসিভার টি রেখেই আপার ঘরে গেলামআপা শুয়ে শুয়ে ম্যাগাজিন পড়ছেমনে হচ্ছে আপার মুড খুব ভালো
আমি বললাম, আপা আসবো?
আপা বলল, আয়
আমি বললাম, আরিফ সাহেব ফোন করেছিলেনতিনি বললেন তোমার সাথে সে সরাসরি কথা বলতে চায়
আপা বলল, সরাসরি কথা বলতে চায়, কি কথা?
আমি বললাম, তা আমি কি করে বলবো?
আপা বলল, উনি তোকে ফোন করে কি বলেছে?
আমি বললাম, আরিফ সাহেব আমার কণ্ঠ শুনে ভেবেছেন ফোনটা বুঝি তুমি রিসিভ করেছআমার কণ্ঠ শুনেই তিনি বলে উঠলেন, কে বিথি? কথাটা শুনে আপাও মিটমিট করে হাসলোআমি বললাম, না আমি তিথি, ইয়ে মানে আমি আরিফতোমার আপা কি বাসায় আছেন? আমি বললাম, জি আছে আপনি হোল্ড করুন, আমি আপাকে ডেকে দিচ্ছিউনি বললেন, না না তোমার আপাকে ডাকতে হবে নাতুমি তোমার আপাকে বলো আমি তোমার আপার সাথে আজ বিকেলে বোটানিকেল গার্ডেনে বিকেল ৪টায় কথা বলতে চাইওকে ঠিক ৪টায় সেখানে থাকতে বলোতোমাকে অবশ্যই, অবশ্যই যেতে বলেছেআপা তুমিকি যাবে সেখানে?
আপা বলল, দেখি

আমি চলে এলাম বসার ঘরেএটাই সুযোগ ফোন করারমা রান্না করছে, অভি স্কুলে, আর বাবা অফিসেরিং হচ্ছে, কিন্তু কেউ ফোন ধরছে নাবোধ হয় বাসায় কেউ নেইআমি যার সাথে ফোনে কথা বলি, ওর নাম হচ্ছেরূপও ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার এর ছাত্রআমি ওকে ছোট বেলা থেকেই চিনিও আমাকে চেনেআমার সাথে সব সময়ই ওর দেখা হয় কথা হয়আমি যখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি তখন থেকেই ওকে চিনতামকিন্তু ওর সাথে কখনও কথা বলতাম নারূপদের পাশের বাড়িতেই আমারা থাকতামআমি যখন বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াতাম ঠিক তখনই ও এসে দাঁড়াতো ওদের বারান্দায়ও ফেল ফেল করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতোআর ও একটু বোকা টাইপের, ভীষণ ভিঁতুও বলা যেতে পারে আমরা রূপদের ওখান থেকে চলে আসি, অন্য আর এক এলাকায়ওর সঙ্গে এরপর থেকে স্কুলেই দেখা হতও আর আমি একই স্কুলে পড়তামও আমার তিন বছরের সিনিয়রদুজনেই দিনে দিনে বড় হতে থাকিআর যতই বড় হচ্ছি ততই বুঝতে শিখছিও এখন আর আগের মত নেইও আমাকে দেখলেই বন্ধুদের সঙ্গে আমাকে নিয়ে কথা বলতএমনি করে কেটে গেল ছয়-ছয়টি বছররূপ এতদিন স্কুলে থেকে বেরিয়ে কলেজ থেকে বেড়বার পথেওর সাথে প্রথম যেদিন ফোনে কথা বলি, সেদিন ও নিজেই ফোন রিসিভ করেছিল,আর এমনিতেও,ও বাসয় থাকলেও নিজেই সব সময় ফোন রিসিভ করেরূপ হ্যালো বলার পরই

আমি বললাম, কেমন আছ?
রূপ বলল, আপনি কে?
আমি বললাম, ফাজলামো করছ কেন, তুমি জানো না আমি কে?
রূপ বলল, না আমি আপনাকে চিনি না,আপনি আপনার পরিচয় না জানালে চিনব কেমন করে?
আমি বললাম, রূপ তুমি কিন্তু মিথ্যা বলছরোজ তুমি আমাকে দেখ, আমিও তোমাকে দেখিতবুও তুমি বলছো, তুমি আমাকে চেননা আচ্ছা বেশ, তুমি আমাকে চেননা মানলামতোমার সঙ্গে আমার জরুরি কথা আছে
রূপ বলল, দেখুন আমি আপনাকে চিনি বা জানিনাআমার সাথে আপনার কিসের জরুরি কথা?
আমি বললাম, দেখ, রূপ আগে থেকেই কেউ কাউকে চেনেনাকথাবার্তার মাধ্যমেই একজন অপরজনকে চিনতে পারেযাই হোক তোমাকে আমি যেই কথাটা বলতে চাই তা হল, আমি তোমার সাথে ফ্রেন্ডশীপ করতে চাইতুমি কি করে আমার বন্ধু হবে?
রূপ বলল, আচ্ছা?কে আপনি? আগে তো আপনার নামটা আগে বলুন, তারপর বন্ধুত্ব
আমি বললাম, আচ্ছা ঠিক আছেআমার নাম তোমার জানার দরকার নেইতুমি আমাকে চিনতে পারবে, তুমি এখনই চলে আস
রূপ বলল, কোথায় আসবো? তুমি বেলি রোডে চলে আসআর এখানেই তুমি আমাকে দেখতে পাবে
রূপ বলল, ঠিক আছে, আমি আসছি

চলবে.......................

ঘূর্নিঝড় “সিডর” এবং অর্ন্তনিহিত ভয়ানক রাত্রির অভিজ্ঞতা

Title of this post: “Cyclone Sidr and experience of a horrible night” by Laily Jahan Meghla
Content of this post: In this post writer expressed her feelings on a horrible night of cyclone sidr.

জীবনের বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতার সাথে মানুষের পরিচয় ঘটে। দৈনন্দিন জীবনের গতানুগতিকতার মধ্যে এমন কিছু খন্ডমুহূর্ত আসে যেগুলো স্বাতন্ত্র ও অর্ন্তনিহিত স্মৃতির তালিকায় রেখায় চিহ্নত হয়। এই প্রথম নিজের চোখে দেখা ঘুর্নিঝড়
সিডর রাত্রিকে ঘিরে সেরকম রেখাঙ্কিত স্মৃতি আমার জীবনে কতবার কতভাবেই তো ঝড় হয়েছে কাল অকালে শিতে-গ্রীষ্মে, বর্ষায় একটি ঘুর্নিঝড়ের ভয়ঙ্কর রাত্রি স্মৃতিগুলোকে বিশেষত্ব ও স্বাতন্ত্রে তুলে ধরতে চেষ্ঠা করেছি।

আমাদের দেশে ১৯৯১ সালে ২৯ই এপ্রিলের রাতে চরম দুঃখের ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছিল। তখন আমি খুব ছোট ছিলাম। কোন কিছু আমার মনে নেই। বড় হয়ে পরিবার থেকে যতটুকু শুনেছি তা রক্তাক্ত হৃদয়ের আহাজারি এবং হাজারো মানুষের ক্ষয়ক্ষতি। এই দিন উপকূলীয় অঞ্চলের হাতিয়া, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালী চর বরকত সহ প্রায় সমগ্র অঞ্চল প্রচন্ড ঘুর্নিঝড় আর জল্লোচ্ছাসে ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়। এই প্রথম নিজের চোখে দেখা ঘুর্নিঝড় সিডর বাংলাদেশে অতিক্রম করে গেছে। ঢাকা অফিস জানিয়েছে সিলেট পার হওয়ার সময় ঝড়টি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে এখন এর প্রভাব মুক্ত। গত বৃহস্পতিবার(১৫.১১.০৭) রাতে আঘাত হানা ঘুর্নিঝড় সিডর এর আয়তন ছিল দুই লাখ ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার। একলাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাংলাদেশে ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। এ বিশাল আয়তনের ঝড়টি ওই দিন রাত আটটার পর হারিকেনের শক্তি নিয়ে সিডর দক্ষিন উপকুল দিয়ে উঠে পৌনে তিনটার দিকে উত্তর পূর্বে সিলেট দিয়ে ভু-খন্ড অতিক্রম করবে। এই খবরগুলো বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার করেছে এবং ১-১০ নম্বর বিপদ সংকেত দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সেদিন সকাল থেকে কালো কালো পুঞ্জিভুত মেঘ স্তবকে স্তবকে পরিগ্রহ করছিল ঘনরূপে। সারাদিন আকাশ তোলপাড় করে ঝড়ো হাওয়া বইছিল। মেঘাচ্ছন্ন সারাটি দিন রাতের মতো প্রতিভাত হয়েছিল। রাতের প্রথম প্রহরে শুরু হল নিমর্ম নিষ্ঠুর প্রচন্ড ঝড়। রাত দশটার পর ঢাকায় শুরু হল ঝড়ের মহাপ্রলয়ের তান্ডবনৃতা। আর এদিকে বিদুৎ নেই অনেক সময় ধরে। আমার পরিবার যার যার রুমে সবাই ঘুমাতে চলে গেলো। আমি আর আমার ছোট ভাই একই রুমে ঘুমাই। জানালার কপাটে পট পটকের শব্দ হচ্ছে বাইরে বাতাসের শন শন শব্দ প্রচন্ডভাবে কানে শুনা যাচ্ছে। আমার ছোট ভাই ভয়ে আমার বড় বোনের রুমে ঘুমাতে চলে গেল। এখন আমি বড় একা হয়ে গেছি, ভয়ের পরিমান আরও তিনগুন বেড়ে গেলো। ঝড়ের লন্ডভন্ড তছনছ করে দিচ্ছে সব। আমারা ৫ম তলায় থাকি। আমার মনে হচ্ছে এই বুজি বিল্ডিং ভেংগে যাবে। জীবনের শেষ রাত্র বুঝি আজকে। আমার মনের ভিতরে এইসব কথা চিন্তা হচ্ছে। আমি আমার বন্ধু-বান্ধব এর কাছে ফোন করতে চাইলাম কিন্তু কোন নেটওয়ার্ক পাচ্ছিনা। অবশেষে রাত্র ১২-১০ মিনিটে আমার বড় ভাইয়ের একটি ফোন আসল আমরা কেমন আছি তা সে জানতে চাইল এবং ঘুমাতে বলল, কিন্তু তখন বাইরে প্রচন্ড বাতাসের শব্দ আর তাই শুনে আমার ভিতরে তখন দারুন উত্তেজনা। দরজা খুলে বাইরের অবস্থা দেখতে ইচ্ছা করছে কিন্তু মোটেও সাহস পাচ্ছিলাম না। জানালর ফাঁক দিয়ে দৃষ্টি দিলে মনে হল বাতাস আমাকে টেনে নিয়ে যাবে। অন্ধকারের সমুদ্র যেন সহসা উত্তাল, ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। মাঝে মাঝে আকাশে বিদুৎতের চমক এ মেঘের গর্জনে ধরনী খন্ড-বিখন্ড হওয়ার উপক্রম। ভাবলাম পৃথিবীর অন্তীম দশা উপস্থিত আর কয়েক মূহুর্তের মধ্যে ধ্বংসের অতলে তলিয়ে যাবে। আমি আল্লাহর কাছে আমার গুনাহ্ মাপের জন্য প্রার্থনা করছি। আমার আর ভাল লাগছে না কেবল ঝড় থামার অপেক্ষায় আছি। তখন রাত ২:০০টা বাজে। বাতাসেরর শব্দ প্রচন্ড বেড়ে গেছে আমি আমার বন্ধুর কাছে ফোন করলাম এবং কথা বললাম তখন মনে মনে স্থথির অনুভব করলাম। সে আমাকে নানাভাবে আশ্বস্ত করল এবং ঘুমাতে বলল কিন্তু তবুও আমার ভয় থেকেই গেল এবং ঘুমাতেও পারলাম না। রাত্র তিনটার পর ঝড় কিছুটা থামতে লাগলো। সারাটা রাত্র একফোঁটা ঘুমাতে পারলাম না কিন্তু সকালে চিন্তা করলাম কখন বিদুৎ আসবে এবং কখন খবর দেখব যে দেশের কি অবস্থা। কিন্তু দু্ইদিন একটানা বিদুৎ ছিল না এবং বিদুৎ না থাকার দরুন পানিও ছিল না। সংবাদপত্র পড়ে জানলাম পটুয়াখালী, বাগেরহাট, সুন্দরবন, বরিশাল, চট্টগ্রাম দেশের উত্তর ও দক্ষিন অঞ্চলে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান অনেক বেশি হয়েছে। রেডক্রিসেন্ট ধারন করেছে যে মৃতের সংখ্যা ১০,০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই ধরনের সংবাদ পড়ে আমার মনটা আরও বেশি খারাপ হয়ে গেল। সবচেয়ে বেশি মন খারাপ হল প্রথম আলোর একটা সংবাদ পড়ে যে, শরীয়তপুরে ১৫.১১.০৭ তারিখ সকালে একটি মেয়ে শিশু জন্ম গ্রহণ করেছে সকালে পৃথিবীর মুখ দেখেছে মেয়েটে আর রাতের ঘূর্নিঝড়েই নিভে গেল তার জীবনের প্রদীপ।

বাস্তবিকই ঝড়ের এমন দুলর্ভ আভিজ্ঞতা আমার আর কখনো হয়নি। ঘূর্নিঝড় সিডর রাত্রের সেই নিদারুন অভিজ্ঞতায় যে, প্রকৃতির মধ্যে শান্তির যেমন প্রলেপ আছে, তেমনি আছে ধ্বংসের তান্ডব নৃত্য। সেই ঝড়ের রাত্রির নিদারুন অভিজ্ঞতা আমার মনের দুঃস্বপ্নের স্মৃতি হয়ে গেঁথে থাকবে অনাদিকাল।

প্রলয়ঙ্করী সাইক্লোন সিডর

Title of this post: The cyclone sidr by Irin Sultana

সাইক্লোন, যা একটি ভয়ঙ্কর রূপ মানুষের জন্য, প্রকৃতির জন্য, যাবতীয় জীবনের জন্যএকবার আঘাত হানলে সব কিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায়এটি বিভিন্ন রূপ নিয়ে আসেসিডর সাইক্লোন প্রকৃতি ধবংসের এক ভয়ঙ্কর রূপ যা সম্প্রতি বাংলাদেশে আঘাত হেনেছেএর ফলে হাজার হাজার মানুষ হারিয়েছে তাদের ঘরবাড়ি, আত্বীয়-স্বজন, সহায় সম্পদমানুষ হারিয়েছে তাদের সর্বস্ব আর প্রকৃতি হারিয়েছে তার সৌন্দর্যএই সিডররূপি হারিকেন প্রধানত এর শীতল হাত বাড়িয়েছে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরগুনা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য দক্ষিনাঞ্চল এলাকায়হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে এই ঝড়েবাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি আশঙ্কা করেছে যে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারে পৌছতে পারেবেচেঁ থাকা মানুষ ভোগ করছে নানা সমস্যাবিভিন্ন সমস্যা গুলো হচ্ছে- বিদ্যুৎ সমস্যা, পানি সমস্যা, খাবার সমস্যা, নেটওয়ার্ক সমস্যাএটি গত ১৫ই নভেম্বর আঘাত হানেএবং তখনই মানুষ সম্মুখীন হয় তীব্র বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক সমস্যায়মানুষের সাধারণ কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়পুরো বাংলাদেশ ডুবে ছিল গভীর অন্ধকারেনেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে বহু এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত লোকজন এখন খাদ্য, পানযোগ্য পানি, বস্ত্র, ওষুধের অভাবে আক্রান্তবেচেঁ থাকার জন্য খাবার ও পানির জন্য দুয়ার থেকে দুয়ারে ঘুরছে তারাবাড়িঘর, সম্পদ, স্বজন হারানোর কষ্টের চেয়েও বড় সংকট এখন তাদের কাছে ক্ষুধাঅনেক লোক এক কাপড়ে বেচেঁ আছেএই ঝড় বহু মানুষকে পথে বসিয়েছেতার পরেও তারা নতুন করে তাদের জীবন শুরু করেছেদেশে এবং বিদেশ থেকে বিভিন্ন সংগঠন তাদের সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়েছেআশা করছি মানুষের এর মানবতার স্পর্শে তারা আবার নতুন করে বাঁচতে শিখবে