Saturday, January 26, 2008

ছোট মনের আনন্দ বেদনা !!!

Title of this post: An emotion of a child By Mayanur Akter Maya
Content of this post: A mother wrote on her child’s thinking and emotion.

আমার সেই ছোট সোনামণির কথা বলছিযাকে ঘিরে আমার সমস্ত সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা যাকে ঘিরে আমার সকল আশাসে হচ্ছে আমার একমাত্র মেয়ে, কাজী জান্নাতুল ফেরদৌস (মীম)

মীম

শুধু আমি কেন? প্রত্যেক মা-ই তার সন্তানদেরকে নিয়ে এরকম করে স্বপ্ন দেখেআমিও দেখিআমার সমস্ত মন প্রাণ জুড়ে তার অস্তিত্বসেদিনের কথা বলছিতারিখটা ছিল ২৮/১২/০৭সেদিন ছিল মীমের ফুপাতো বোন ইয়াসমিন দোলন (বৃন্তি)-র জন্ম দিনমীম বৃন্তির চেয়ে বয়সে বড়বৃন্তির জন্ম দিন পালন করা হবে ফ্যান্টাসী কিংডমেআমরা সবাই সেখানে গেলাম মীম তো খুব খুশিযাওয়ার আগে প্রতিমুহুর্তে আমাকে জিজ্ঞেস করে বলত, “আম্মু আর কতদিন পর ২৮ তারিখ আসবে?” আমার অনেক সময় অনেক জায়গায় যেতে ইচ্ছে করে নাতারপরও নিজের অনিচ্ছা থাকা সত্বেও যেতে বাধ্য হইকারণ আমার মনে হয় আমার ইচ্ছের চেয়ে বেশী বড় হচ্ছে আমার মেয়ের আনন্দটা

নতুন নতুন জায়গায় যাবে, নতুন কিছু দেখবে, অজানা কে জানবেআমি সেজন্য একটু সময় পেলেই আমার সোনামণিকে কোথাও না কোথাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করিসেই দিন ফ্যান্টাসী কিংডমে আমার মেয়ের আনন্দ দেখে সত্যি আমি অনন্দিত হয়েছি

বাবা ও ফুফাত বোনদের সাথে মীম

ছোট্ট মনের যে শুধু আনন্দ তা নয়, ছোট মনে যত তাড়াতাড়ি আনন্দ পায়, সে রকম আবার দুঃখও পায় অনেকযা সহজে বুঝানো যায় নাসবাই মিলে যে যার ইচ্ছে মত বিভিন্ন রাইডারে চড়ে সন্ধ্যা ৭ টায় কেক কাটার জন্য একসাথে জড়ো হলামকেক কাটার আগে সারাক্ষণ শুধু আমাকে বলতে লাগল, কখন কেক কাটা হবে আম্মু? যখনি কেক কাটা শুরু হল সবাই হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ বৃন্তি ...... বলতে লাগল তখনি মীমের মন খারাপ হয়ে গেলআমার কাছে এসে মন খারাপ করে বলতে লাগল, ম্মু সবাই শুধু বৃন্তি বলে! কেউই আমার নাম বলেনা কেন? তাকে আবার বলতে হল, তুমি কি বুঝতে পারছ না আজ তো বৃন্তির জন্ম দিন, তাই বৃন্তিকে বলছেএই কথাটা ওকে অনেক বার বুঝাতে হচ্ছিল আমাকেশিশু মনে সাধারণ কথাই লেগে যায়আবার সহজে তা ভুলেও যায়এ যে ছোট্ট মনের চিন্তা চেতনা সত্যি খুব আনন্দময়এই কথাগুলো অন্য লোকদের কাছে ভাল না লাগলেও বাবা মার কাছে স্মৃতিময় হয়ে থাকে জীবন

মা ও ফুফাতো বোনের সাথে মীম

ছোট্ট মনে কতশত প্রশ্ন জাগে, নতুন কিছু দেখলেই সেটা জানার যে গ্রহ তা ছোটদেরকে না দেখলে বুঝা যায় নাকেক কাটা শেষ আবার তার বায়না, আম্মু আমার জন্ম দিন কখন আসবে? আমি যখন বললাম ১ জুন, মীম বলল, এত দেরি কেন? আমি বললাম, বেশী দিন নেইএই তো কিছু দিন পরই তোমার জন্ম দিন সে বলল, আম্মু জন্মদিন কিন্তু এখানে করতে হবে যে, ছোট মনের চাওয়া পাওয়াচেয়ে যদি কিছু না পায়, তাহলেই ওদের মনের মধ্যে একটা কষ্টের জন্ম হয়সেই কষ্ট সহজে দূর করা যায় না তাদের মন থেকেতাই আমি যেটা করতে পারবনা সেটা কখনও বলিনামীম আবার বলতে লাগল, আম্মু আমি জানি তুমি আমার জন্ম দিন এখানে করবে না আমি বললাম, কি ভাবে বুঝলে ? মীম বলল, যে তুমি কিছু বলছ নাআমি জানি তুমি আমার সাথে মিথ্যে কথা বলনাতাই চুপ করে আছ

ফুফাতো বোনের জন্মদিনে বাবা, ফুফু ও ফুফাতো বোনদের সাথে মীম

আমি সব সময় চেষ্টা করি আমার মেয়ে যেন কোন কারণে আমার উপর কোন কিছু নিয়ে বিরক্ত না হয়আমি চাই আমি যেন আমার মেয়ের একজন অর্দশ মা এবং বন্ধু হতে পারিভবিষ্যতে আমার মেয়ে যেন কোন কিছু আমার কাছে গোপন না রাখেআমাকে যেন ভয় না পায়আমার উপর যেন সম্পুর্ন আস্থা থাকেআমার মেয়ে মাঝে মাঝে এমন কথা বলে শুনলে মনেই হয় না যে ও বলেছে

এক দিন আমি ওকে মেরেছি, খেতে চায়না তাইওর বাবা আমাকে যখন বলল, মেয়েকে কেন মেরেছ? বাচ্চাদেরকে এরকম করে মারতে হয় নাআর কোন দিন মারবে না সে কথা শুনে আমার মেয়ে কান্নার মাঝে বলতে লাগল, বাবা আমার আম্মুকে কিছু বলবে নাআমার আম্মুর কোন দোষ নাইআমি দুষ্টমি করেছি তাই আম্মু মেরেছে ওর বাবা হাসতে হাসতে আমাকে বলল, দেখ মেয়ে কি বলেযার জন্য তোমায় বললাম সেই আমাকে উল্টা বলছে ওর বাবা আবার বলল, তাহলে তো তুমি জান দুষ্টমি করলে মারবে, তাহলে দুষ্টমি কর কেন? মীম বলল, বাবা আমি তো ছোট্ট আর ছোটরা তো মাঝে মাঝে দুষ্টমি করেই আমার মেয়ের এই কথার পর আমি আর ওকে দুষ্টমি করলেও মার দেই নাকেউ যদি কখন ওকে জিজ্ঞেস করে, তুমি কাকে সবচেয়ে বেশী ভালবাস?মীম বসময় বলে বাবা ও মাকেসব সময় বলে বাবা মা দুজনকেইকোন দিনও এক জনের কথা বলে না

মাঝে মাঝে খুব মন খারাপ করে বসে থাকেযদি বলি মা-মণি, কি করছ এখানে আস মীম বলে, আমাকে কিছু বলনা আমার মন খারাপ!! সে বলে চুপ করে বসে থাকেআমার মেয়ের খুব রাগসে যা বলবে সবার তাই শুনতে হবেযদি তার কথা কেউই না শুনে সেই তাকে আর পছন্দ করে না তার ছায়াটা ও দেখতে পারে নাযা চাবে তাই দিতে হবেআমি একদিন মেয়েকে বলি, মা-মণি তোমার যে রাগ আল্লাহ জানে তুমি বড় হয়ে কি হবে মেয়ে আমাকে বলে, আম্মু তুমি না কিছু বুঝনা, আমি বড় হয়ে ডাক্তার হব আমি যদি কোথায় ওকে না নিয়ে চলে যাইখুব মন খারাপ হয়বলে, আম্মু আমি না বলেছি যে তুমি অফিসে গেলে আমাকে নিয়ে যেতে হবে নাআর অফিস ছাড়া যে কোন জায়গায় যাও আমাকে নিয়ে যাবে

সভ্যতা

Title of this post: Civilization by Helen Sarkar

বাঃ দেখতে তো ভালই লাগছে
, কিরে বিয়ে করবি নাকি? এই যে ডার্রলিং কোথায় যাচ্ছ? একা একা হাঁটছো কেন? এই কথাগুলো আমার দিকেই তীরের মতই ছুরে দিচ্ছিল ওরা ওরা যে কে তা তো বলা হলো নাওরা আসলে সব সময়ই দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তার বাকেঁ বাকেঁ, কখন কাকে বলবে তাদে বিকৃত নোংরা কথাআর ওদে শিকার তো গোটা সমাজেরই নারীরা

আমিও তো এই নারী সমাজের একজনআমাকেই বা কেন বাদ দেবে ওরাপ্রতিদিন নানা ধরনের বিকৃত অশালীন কথাশুনে আমার গায়ের চামড়া মনে হয় মোটা হয়ে যাচ্ছে নতুবা বোধশক্তি হারিয়ে ফেলছি আমিএই আমার মতই কত হাজারো মেয়ে এই অসভ্য বর্বরদে এই অত্যাচার সহ্য করে নীরবে চলে যায়, আর এভাবেই অত্যাচারিত হয় গোটা এক জীবননতুবা সমাধান একটাই আছে আর তা এই পুরুষ শাসিত সমাজ খুব সাদরে গ্রহণও করেছে তা হলো ঠান্ডা মাথায় গায়ের ওনা অথবা শাড়ী দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে পড়া, নয়তো বিষাক্ত কিছু খেয়ে চিরদিনের মত সব মমতার সম্পর্ক ছিড়ে হারিয়ে যাওয়া মৃত্যু পথে

ভাবতে অবাকই লাগে আবার ওদে মুখেই যখন শুনি মেয়েরা মায়ের জাত, ওদের সম্মান করতে হয়হ্যাঁ, সম্মান তো ওরা ঠিকই জানায় তবে পন্থাটা একটু ভিন্ন প্রকৃতির হয়আর তাই তো প্রতিদিন খবরের কাগজে দেখা যায় কোন অসহায় এসিড দগ্ধ নারীর ছবি নতুন কোন ধর্ষিত নারীর আর্তচিৎকারএভাবেই নারীরা সম্মান পেয়ে আসছে দিনের পর দিন

কিন্তু আমি ভাবি কেন এগুলো? ওরা তো আমার সাথে কথা ছাড়া আর কিছুই করছে নাকিন্তু এত কুৎসিত ছবি যখন চোখের সামনে ভেসে ওঠে, যখন দেখি কোন অসহায় বঞ্চিত নারীর কান্না তখন আমার বুকের ভেতরটাও যে হু-হু করে কেদেঁ ওঠে ওদের জন্যআমার জীবনেও যে এরকম কিছু ঘটবে না তারই বা নিশ্চতা কি?

কিন্তু ভয় পেয়ে চার দেওয়ালের মাঝে বন্দী হয়ে নিজের ভবিষ্যতটা অন্ধকার করে লাভ কি? অনেক তো মানসিক যন্ত্রনা আর কেদেঁছি, কেউ কি দেখেছে না সাহায্য করেছে কোন অসহায় নারীকে তাই মাথা নিচু করে নয়, বাঁচতে হবে প্রাণ ভরেসবাই মিলে ভেঙ্গে দিতে হবে ও অসভ্যতার মেরুদণ্ডকেকেন পারবে ওরা আমাদে শক্তির কাছেপ্রাপ্য শাস্তি দিতে হবে এক একটা জংলী জানোয়ার কেওদের বুঝিয়ে দিতে হবেআধিকার সবার সমান

তাই স্বপ্ন আর শক্তি আছে মনে, হাল ছেড়ো না বন্ধু বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরেপ্রতিবাদ আর প্রতিরোধ গড়ে তোলো ওদের বিরুদ্ধেস্বপ্ন দেখো সুন্দর একটি জীবনের আর বাস্তব করে তোলো নিজের মেধা আর পরিশ্রম দিয়েভয় পেয়ে বন্দী থেকো না- তাহলে এই সুন্দর পৃথিবী হয়তো বঞ্চিত হবে তোমার অমূল্য কোন উপহার থেকেনিজের ভেতরের শিকড়টাকে ছড়িয়ে দিয়ে সব সুন্দর, ভাললাগার, আনন্দে থেকে রস নিয়ে বেঁচে থাকো অনন্তকাল ধরেসভ্যতার শেষ স্তরে

কোচিং সেন্টার

Title of this post: Coaching centre by Nurun Naher Nipa

কোচিং সেন্টার বর্তমানে শি
ক্ষার্থীদের নিকট খুবই পরিচিতকোচিং সেন্টার এমন একটি সেন্টার যেখানে শিক্ষার্থীদের বিশেষ উপায়ে শিক্ষা দেয়া হয়তারা রঙ্গিন ব্যানার ও ফেষ্টুনের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদে আকর্ষণ করছেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ব্যাপারে ১০০% নিশ্চয়তা প্রদান করেতারা পরীক্ষার জন্য শিক্ষার সংক্ষিপ্ত নানা পদ্ধতিও প্রণয়ন করেকোচিং সেন্টার এই বলে নিশ্চয়তা প্রদান করে যে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদে শিক্ষাদানের পদ্ধতি অনুসরন করে তাহলে তারা অবশ্যই বুয়েট ও মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারবেকোচিং সেন্টার হল একটি খেলার নাম এখানে যতটুকু সম্ভব শিক্ষা এবং অন্যান্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষন অন্তর্ভুক্ত করা হয়বিস্তারিতভাবে বললে বলা যায় কোচিং সেন্টারগুলোকে নিচের ধরনগুলোর উপর ভিত্তি করে বিভক্ত করা যেতে পারে

১. বিশেষ শিক্ষাদানের জন্য কোচিং
২.ভর্তি কোচিং
৩.কম্পিউটার ও গাড়ি চালানো ইত্যাদি কারিগরি কোচিং
৪.ভাষা শেখার কোচিং ইত্যাদি

এই জন্য আমাদে শিক্ষার উপাদানের সাথে জ্ঞানের বিকাশ কোচিং সেন্টার উপর গন্ডিবন্ধ হতে থাকেকোচিং সেন্টার সারা দেশে বিস্তার লাভ করেছেএকমাত্র রাজধানীতেই অসংখ্য কোচিং সেন্টার রয়েছে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে রয়েছে অসংখ্য কোচিং সেন্টারশহরের বাইরে ও এই রকম কোচিং সেন্টার খুঁজে পাওয়া যায়সেগুলো সীমিত শিক্ষা প্রদান বলেকোন কিছু শেষ নেইকোচিং সেন্টার ছাত্র- ছাত্রীদে উত্তরনের জন্য একটি সহজ পদ্ধতিএটি অবশ্যই বলা যাবে যে অধিক মেধাবী ছাত্র- ছাত্রীরা এই সকল সেন্টারে আসেসফল ও সুপরিচিত কোচিং সেন্টারের মূল্য খুবই বেশিযা হোক কোচিং সেন্টার ভাল এবং মন্দ উভয় দিকই আছে

অন্ধকারের ছেলে

Title of this post: Boys in the dark By Helen Sarkar
Content of this post: Helen written about a boy (one of her friends) Hima who is addicted. She tried to back Hima in his normal life but he did not back and gone in darken life…..

ছেলেটার সাথে পরিচয় হয় হঠাৎ করেই। যে এলাকায় আমরা থাকি সেও এই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। আমার বাসার বারান্দায় আমি যখন এসে দাড়াঁতাম, প্রায়ই দেখতাম তাকে, উদ্দেশ্যহীন এলোমেলো ছিল তার পথ চলা। কখনো এখানে তো কখনো সেখানে। সকাল, সন্ধ্যা বা রাত কোন সময় জ্ঞানই বোধ হয় ওর ছিল না। কখনো কখনো মাঝ রাতে হয়তো শোনা যেত ওর গান। গলাটা বেশ ভালই, গান শুনতে তাই হয়তো ভালই লাগতো। বোঝাই যায় সে ঠিক ৮/১০ টা মানুষের মত স্বভাবিক জীবন যাপন করে না। খুব বেশি কথা ওর সাথে আমার হতো না, আমিই ওকে এড়িয়ে চলতাম, ভাবতাম কি দরকার ঝামেলা বাড়িয়ে। যে যেমন আছে থাকুক, আমার কি? কিন্তু কে জানতো এই উদ্ভট ঝামেলার সাথে আমার ও কয়েকটা দিন জড়িয়ে যাবে।

সেদিন ছিল আমার জন্মদিন। আমার খুব আনন্দের একটা দিনই বটে। আমার প্রিয় সব মুখগুলো একে একে সব আমার বাসায় এসে ভীড় করেছে-আনন্দে উচ্ছাসে আমার ইচ্ছে করছিল প্রজাপতির মত নেচে বেড়াতে। আমি মিষ্টি একেবারেই পছন্দ করি না, তাই বাসায় এই শুভদিনেও কোন মিষ্টি বা কেক ছিল না। কিন্তু আমার প্রিয় বান্ধবীরা তা শুনবে কেন? ওদের মিষ্টি কিছু খাওয়াতেই হবে। কি আর করা, ওদের বললাম এখানে তো ভালো কোন মিষ্টি পাওয়া যাবে না; আইসক্রীম আনি। ওরা আমার কথায় সবাই রাজি। অগত্যা আমিই গেলাম আইসক্রীম কেনার জন্য।

কিন্তু সিঁড়ি ভেংগে যেই না পথে পা বাড়িয়েছি ওমনি পেছন থেকে কে যেন বললো- কোথায় যাচ্ছ? পিছনে ফিরে দেখি- সেই হাসি মুখ আর দুষ্ট দুষ্ট চোখ করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। কিছুটা রাগ করেই বললাম জাহান্নামে যাচ্ছি, যাবে তুমি? ওমা এতো দেখি মহা বাঁদর- আমার কথার সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে আমার সাথে সাথে হাঁটা শুরু করে দিয়েছে। রাগে তো আমি গজ গজ করে বললাম- কেন এলে? উত্তরে ও বললো আমি জীবনেও কোনদিন জাহান্নামে যাইনি আর তুমি য়খন পথচেনো তখন তোমার সাথেই যাওয়া ভালো। আমি আর কিছুনা বলে কিছু দুর হেঁটে গিয়ে দোকান থেকে ১ লিটার এর একটা আইসক্রীম আর ২ লিটার পানীয় নিয়ে বাসার দিকে আসছি।

তখন ও সে আমার পিছু পিছু হাঁটছে আর বলছে- আইসক্রীমের এক কোনা থেকে কিছুটা তো খাওয়াও। জাহান্নামে নয় নাই গেলে। এতো মামা বাড়ীর আবদার, ওকে পাত্তা না দিয়েই আমি আমার বাসার গেট পর্যন্ত- এসেছি কিন্তু যেই না সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠবো তখনই আমার হাত থেকে সব কিছু পড়ে যায় ঠিক ওর পায়ের উপর। ও বললো-আমাকে না দিয়ে তুমি কিছুই খেতে পারবে না। তারচেয়ে আমি ওগুলো তোমার বাড়ীতেই দিয়ে আসি। আমি আর কোন আপত্তি করলাম না, ভাবলাম কিছু খাইয়ে-দাইয়ে বিদায় দেবো। ঘরে নিয়ে এসে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম ওকে। বললাম ওর নাম হিমা, এই এলাকায়ই থাকে।

ভেবেছিলাম বাসায় এসে কিছুক্ষণ থেকেই সে বিদায় হবে, কিন্তু এতো দেখি কাঁঠাল গাছের আঁঠা হয়ে বসে আছে আর আমাদের দুষ্টমিগুলে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে। সেই থেকেই ওর সাথে আমার কথা বলা আগের থেকে একটু বেশি হতো। ওর জীবনে ভালবাসার একটা কষ্ট আছে আমাকে বলেছিলো ও। তাই সব ভুলে থাকতেই নাকি নেশা ধরেছে সে। ওর এসব কষ্টের কথা শুনে আমার ভীষণ খারাপ লাগতো ভাবতাম আমার একটু সহযোগিতায় ও যদি ভালো একটা জীবন পায় তাকে ক্ষতি কি? তাই যোগাযোগ রাখতাম ওর সাথে, কখনো নিজের কাজ রেখে সময় দিতাম ওকে। সবসময়ই শাসন করতাম এটা করো না, ওটা খাবে না, আরও কত কি।

কিন্তু যে জেগে ঘুমায় তাকে জাগানো যায় কি? এটা আমি অনেক পড়ে বুঝতে পেরেছি। আমি যখন এর উপর কোন কারনে রাগ করে ফোন বন্ধ করে রেখেছি দিনের পরদিন ও তখন সে নেশা নতুবা অন্য কোন মেয়েদের নিয়ে দিন কাটাতো। এসব অবশ্য আমি জানতাম একটু পরে। আমি তো চেয়েছিলাম ওকে ভালো একটা পথ দেখাতে কিন্তু ও চাইতো হারিয়ে যেতে আরো অন্ধকারে। আমি চেষ্টা করেছি বহুবার যেন ফিরে আসে স্বাভাবিক জীবনে। ওর জীবনটা সুন্দর করতে গিয়ে আমার সময়, পড়াশুনাই নষ্ট হয়েছে কিন্তু ও ফিরে আসেনি। ও বলতো একটা মেয়েকেই ও ভালোবাসে কিন্তু আমি তো দোখেছি যখন যে ওর সামনে আসে ও তাকেই ভালবাসে। সবচেয়ে বেশি ভালবাসে নেশাকে। আমার মত বন্ধু ওর কোন প্রয়োজন নেই কারন আমার সাথে থাকলে যে ভালো হতে হবে।

আমি ওর পথ থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছি। আর কোন যোগাযোগ নেই ওর সাথে। কারন ওর সাথে থাকলে ওর লাভ বা ক্ষতি কি হতো জানিনা কিন্তু আমি ও হয়তো হারিয়ে যেতাম অন্ধকারে। আমি তাই চলে এসেছি আমার পথে আর হিমা একটা উশৃঙ্খল জীবন নিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার থেকে আরও গভীর অন্ধকারে............

Thursday, January 24, 2008

ব্লগার প্রোফাইল- (শিক্ষার্থী)

Title of this post: Bloggers profile (Students)

সিফাত বিনতে কাইয়ুম






"আমি সিফাত বিনতে কাইয়ুমমি ভৈরব জেলায় ৮ই এপ্রিল ১৯৮৫ সালে জন্ম গ্রহণ করি আমি ২০০সালে আলী আহমদ স্কুল থেকে এস.এস.সি পাশ করেছি এবং ২০০২ সালে মতিঝিল মডেল স্কুল কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করি। আমার বাবার নাম আব্দুল কাইয়ূম এবং মার নাম মিসেস লিলি আক্তারআমার বাবা একজন ব্যবসায়ী এবং মা একজন গৃহিনী

আমি বিভিন্ন বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় বই হচ্ছে মেমসাহেব আমার সখ হচ্ছে সাংবাদিকতা সম্পর্কে বই পড়া এবং বাংলা গল্পের বই। আমি ভ্রমন করতে পছন্দ করি। আমি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে পছন্দ করি। আমার ভবিষ্য পরিকল্পনা হচ্ছে পড়ালেখা শেষ করার পর সাংবাদিকতা নিয়ে কাজ করা এবং শক্তভাবে নিজের ভবিষ্যৎ গড়া। পাশাপাশি একটি বুটিকশপ গড়ে তোলা আমার স্বপ্ন

নারী জীবন একটি সুন্দর প্রতিষ্ঠান, যে প্রতিষ্ঠান নারীদের উন্নয়নের জন্য কাজ করছে এবং নারীদের আলোর দিশারী দেখাচ্ছে। আমি খুব আনন্দিত এই প্রতিষ্ঠানে আসতে পেরে। আমি নারী জীবনের ইংলিশ-১.৫ ক্লাসের শিক্ষার্থী।"

বুশরাত বিনতে কাইয়ুম (লামিয়া)







আমার নাম বুশরাত বিনতে কাইয়ুম (লামিয়া)। আমি ৩১শে আগষ্ট, ১৯৮৬ সালে ঢাকায় জন্ম গ্রহন করি। আমার পরিবারে আছেন বাবা, মা, তিন বোন এং এক ভাই।
আমি ২০০সালে আলী আহমদ স্কুল থেকে এস.এস.সি পাশ করেছি এবং ২০০ সালে ঢাকা সিটি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করি। এখন আমি সিদ্বশরী গালস্ কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনাস্ ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী।

আমার শখ হচ্ছে পড়া। আমি বিভিন্ন ধরনের উপন্যাস পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় বই উত্তরাধিকার লেখক সমরেশ মজুমদার এবং প্রিয় জায়গা হচ্ছে কক্সবাজার। ভবিষ্যৎতে আমি কোন ব্যাংকে অথবা কোন প্রাইভেট কোম্পানীতে কাজ করতে আগ্রহী। আমি নারী জীবনের কম্পিউটার এবং ইংলিশ বিভাগের ছাত্রী। আমি আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে নারী জীবনের কথা জানতে পারি। এটা নারীদের জন্য খুব সুন্দর একটি প্রতিষ্ঠান। নারী জীবনে আসার পর আমি ব্লগ সম্পর্কে জানি। এই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ন একটি অংশ হল নারী জীবন সাইবার ক্যাফে। আমি খুব খুশি এখানে শেখার সুযোগ পেয়ে আমি খুব খুশি। এখন আমি ইংলিশ এবং কম্পিউটার দক্ষতায় আত্মবিশ্বসী।

ছেলে বেলায় শোনা রূপকথা

Title of this post: Fairy tales that I heard in my childhood by Nilufa Akter

প্রথম অংশ
এক গ্রামে এক কৃষক ছিলতার স্ত্রী ছিল এবং তাদে একটি মেয়ে ছিলকিন্তু তাদে খুব অভাব ছিলকৃষকের দুই বিঘা জমি ছিলসেই জমি চাষ করত এবং যা ফসল আসত তাই দিয়ে কোন রকম তাদে চলত গ্রামে রাজা ছিলতার একটি রাজকুমার পুত্র ছিলসে একদিন বনে শিকার করতে যায় পথে হঠা সাপে কাঁটেএরপর রাজা গ্রামের সকলের কাছে রাজ কুমারের জীবন বাঁচাতে আবেদন করে কিন্তু গ্রামের কেউ এলো নারাজা গ্রামের সকলের কাছে বলে, যে যা চাইবে তাই পাবে তার বদলে রাজ কুমারের জীবন ফিরে পেতে চায়হঠা কৃষকের মেয়েটি বলে আমি রাজিমেয়েটি রাজ কুমারকে সুস্থ রে তুলেমেয়েটিকে রাজা জিজ্ঞাসা করে কি চাও, মেয়েটি কোন উত্তর দিল নারাজা কৃষকের কথা ভেবে, কৃষকে ৬ বিঘা জমি দিয়ে দিলকৃষক তার মেয়েটিকে নিয়ে বাড়ি চলে যায়কৃষক সব জমি চাষ করে নেক ফসল পেয়ে বাজারে বিক্রি করে নেক মূল্য পায় তাই দিয়ে নতুন ঘর তুলেতার মেয়েটিকে বিয়ে দিয়ে দেয়এরপর কৃষকরা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলোতাদের জীবনে আর আভাব রইল না.......

দ্বিতীয় অংশ
এক শহরে একটি পরিবার ছিলবাবা, মা ও একটি মেয়ে ছিলছুটিতে তারা সবাই বর্ষাকালে বেড়াতে যায় সুন্দরবন এবং ঘুরে ফিরে দেখে সুন্দরবনহঠা আকাশে মেঘ ডাকে সকলে ভয় পায়, তাড়াতাড়ি করে লঞ্চে উঠে চলে যায়বাবা, মা ভুলে মেয়েকে রেখে যায়মেয়েটি সারাদিন নদীর ধারে বসে থাকেমেঘ ডাকে তাতে মেয়েটি ভয় পায়এবং বৃষ্টিতে ভিজে মেয়েটি আসুস্থ হয়ে পড়েএমন সময় একটা লোক এসে মেয়েটিকে দেখে, তার বাড়িতে নিয়ে যায়ডাক্তার দেখিয়ে সে মেয়েটি কে সুস্থ করে তুলে কিন্তু মেয়েটি তার বাড়ি ঠিকানা বলতে পারে নাসেই থেকে মেয়েটি সেখানে থোকে যায়..........

Wednesday, January 23, 2008

মনোয়ারা বেগম: একজন নির্যাতিত মহিলার কথা

Title of this post: “Monowara Begum who faced domestic violence after marriage” By Taslima Akter

আমার নাম মনোয়ারা বেগম। আমি ঢাকার আড়াইহাজার থানায় জন্মগ্রহন করি। আমার বাবা ছিলেন চাকুরীজীবি আর মা ছিলেন গৃহিনী। আমরা দুই বোন, এক ভাই এবং আমি আমার বাবা-মায়ের বড় সন্তান। যখন আমার বয়স মাত্র আট বছর তখন আমার বাবা মারা যায়। আমার বাবার মূত্যুর পর আমার পরিবার চরমভাবে অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে পড়ল। আমার মা আমাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেনি। আমার এক প্রতিবেশী (আমি তাকে খালা ঢাকি) আমাকে ঢাকা নিয়ে আসে এবং আমাকে একটি বাসায় কাজ দেয়। প্রতিমাসে আমার বেতন ছিল মাত্র ৫০ টাকা। মাসের শেষে এই টাকা আমি আমার মায়ের জন্য পাঠিয়ে দিতাম। প্রায় ৫ বছরের মত আমি সেখানে কাজ করেছিলাম। যখন আমার বয়স ১৩ তখন একজন দোকানদার(আমি যেখানে কাজ করতাম তার পাশেই ছিল তার দোকান) আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। প্রথমে আমি তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেই এবং তাকে বলি যে আমি গরীব ঘরের মেয়ে। সে তার উত্তরে বলল, এমন কোন নিয়ম তো নেই যে গরীব ঘরের মেয়েরা বিয়ে করতে পারবে না। তার ভাল ব্যবহার এবং আবেগ দেখে আমি তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি এবং তাকে ভালবেসে ফেলি।

আমরা আমার মায়ের অনুমতি ছাড়াই বিয়ে করে ফেলি। বিয়ের দুইদিন পরে আমরা সিন্ধান্ত নিলাম যে আমরা আমার শশুর বাড়ি ব্রাম্মনবাড়িয়া চলে যাব। আমার শশুর বাড়ি পৌঁছানোর পর থেকেই শুরু হল আমার কষ্টের জীবন। আমাদের বিয়েকে ভিত্তি করে আমাকে অনেক বাজে কথা শুনতে হয়েছে। আমার শাশুরী এবং আমার ননদ আমার সাথে কোন কারন ছাড়াই খারাপ আচরন করতে শুরু করল। আমার শশুর বাড়িতে আমি এমন একজনকে পেলাম না যে আমাকে পছন্দ করত। তারা আমাকে শারিরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে শুরু করল। তাদের কোন আর্থিক সমস্যা ছিলনা কিন্তু তারপরও তারা আমাকে পরিমিত খাবার এবং পরিধানের জন্য কাপড় চোপড় দিত না। আমার স্বামী সবই জানত কিন্তু বাবা মার অমতে বিয়ে করার কারনে সে কাউকে কিছু বলতে পারত না।

আমাদের বিয়ের কিছুদিন পরে, আমি আমার মায়ের সাথে দেখা করার জন্য আমাদের বাড়িতে আসি। মায়ের সাথে কিছুদিন ছিলাম কিন্তু আমার শশুর বাড়ি থেকে কেউ আমার সাথে কোন যোগাযোগ করেনি। কিছুদিন পরে আমার স্বামীর চাচী সম্পর্কের এক প্রতিবেশী আমাদের বাড়িতে যায় এবং আমাকে তার সঙ্গে করে নিয়ে আসে, এটাই ছিল আমার অপরাধ। শাস্তি স্বরূপ সারা রাত্রি আমাকে বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তারা কেউ ঘরের দরজা খুলেনি। পরেরদিন সকালে গ্রামের লোকজন এব্যাপারে জানতে আসে এবং গ্রামের লোকদের মুখ বন্ধ করার জন্য আমার শশুর আমাকে ঘরে জায়গা দেয় (এটা ছিল লোক দেখানো)। এই ঘটনার পরে তারা তাদের অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু বাইরের লোকেরা কিছুই জানত না।

বিয়ের এক বছর পর আমি গর্ভবতী হই। কিন্তু গর্ভকালীন সময়ে আমি পাইনি পরিপূর্ন বিশ্রাম এবং খাবার; বিপরীতে আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। এই কষ্টের দিনগুলো পারি দিয়ে আমি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেই। জন্মের ২ দিন পর থেকেই আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পরে। কিন্তু কেউ তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়নি এবং অবশেষে সে মারা যায়। হয়তবা অসতর্কতা এবং কঠিন পরিশ্রম করার কারনে আমার মেয়ে জন্মের দুইদিন পরে মারা যায়। কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়া এটা হয়ে দাড়াঁল আমার আরেকটা অপরাধ এবং এই কারনে অনান্যদের সাথে আমার উপর চড়াঁও হল স্বামীর নির্যাতনও। আমার স্বামী কোন কারন ছাড়াই আমার উপর রাগ করত। সে ছিল বেকার কারণ বিয়ের পর আমার শশুর তার ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছিল।

একদিন আমার স্বামী তার বাবাকে অনুরোধ করে টাকা দিয়ে তাকে বিদেশ পাঠানোর জন্য। আমার শশুর বলে, আমরা আশা করেছিলাম তোমার শশুর বাড়ি থেকে যৌতুক নিব। আর যদি আমরা যৌতুক নিতে পারতাম তবে তোমার ভবিষৎতের জন্য আমাদেরকে কোন চিন্তা করতে হত না কিন্তু তুমি গরীব ঘরের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছ এবং কোন যৌতুক নাওনি। আমার শশুর খুবই রাগান্বিত ছিল এবং বলেছিল যে সে কোন টাকা পয়সা দিবে না। অনেক অনুরোধের পর আমার শশুর টাকা দিতে রাজী হলেন এবং আমার স্বামী মালয়শিয়া চলে যায়।

আমার স্বামী মালয়শিয়াতে যাওয়ার পর আমি আমার শশুর বাড়িতেই ছিলাম। তারা পুনুরায় আমাকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতে শুরু করল, আমার শাশুরী চাইতেন আমি যেন তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে আসি। তারা সব সময়ই চাইত আমি যেন তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে আসি এবং তারা যেন আবার তাদের ছেলেকে বিয়ে করাতে পারে।

জাল বিশার কারনে আমার স্বামী বেশিদিন মালয়শিয়ায় থাকতে পারেনি। তিনমাস পরেই সে বাংলাদেশে ফিরে আসে। মালয়শিয়া থেকে ফিরে আসার কারনে সে খুব হতাস ছিল। আমার শশুর বাড়ির লোকজন আমাকে অপবাদ দিতে শুরু করল এবং বলল আমি অপয়া। এইসব নির্যাতন সহ্য করেও আমি আমার স্বামীর বাড়িতেই ছিলাম এবং আবার গর্ভবতী হলাম। আমি আমার অনাগত সন্তানকে রক্ষা করার জন্য কাউকে কিছু না বলে তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে আসি।

আমার শশুর বাড়ি থেকে আমি আমার মায়ের কাছে চলে আসি কিন্তু আসার পর কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। কিছুদিন পরে আমি একটা ছেলে সন্তানের জন্ম দিলাম। সেই সময়টা ছিল আমার জীবনের সবচাইতে সুখের সময় কিন্তু এই সুখ বেশিক্ষন স্থায়ী হল না কারণ সন্তানের বাবার কথা ভেবে মন খারাপ হয়েগিয়েছিল। কারন সে সেখানে ছিল না। আমার বাবার মূত্যুর পর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন কারন আমার ভাইটি তখন ছোট ছিল। আমাদের পরিবার ছিল গরীব তাই আমি অনুভব করতে লাগলাম যে আমি তাদের জন্য একটা বুঝা। যখন আমার ছেলের বয়স ৬ মাস তখন আমার এক প্রতিবেশীর সাথে ঢাকায় চলে আসি এবং আমার এক আত্মীর বাসায় আশ্রয় নিই। ঢাকা শহরটা আমার কাছে অপরিচিত ছিল এবং আমি বুঝতে পারছিলাম না কোথায় গেলে আমি কাজ পাব। আমার আত্মীয়ের এক প্রতিবেশীর সহযোগিতায় আমি গার্মেন্টেসে কাজ নিলাম এবং আমার বেতন ছিল মাত্র ৩০০ টাকা। আমাকে ওভারটাইম ও করতে হয়েছে। কাজ পাওয়ার পর আমি আমার মা ও ছোট ভাইকে ঢাকায় নিয়ে আসি এবং আমরা একটি ঘর ভাড়া নিয়েছিলাম। আমার স্বামী আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি এমনকি ছেলেকে পর্যন্ত দেখতে আসেনি।

অনেকদিন পরে আমার স্বামী আমাদের সাথে দেখা করার জন্য গ্রামের বাড়িতে যায় কিন্তু সেখানে আমাদেরকে পায়নি যেহেতু আমরা ঢাকায় ছিলাম। পরে সে আমাদের ঠিকানা পায় এবং আমাদের প্রতিবেশীকে নিয়ে ঢাকায় আসে। আমার স্বামী আমার কাছে আসে এবং তার পূর্বের খারাপ আচরনের জন্য ক্ষমা চায়। আমি তাকে ক্ষমা করে দেই কারন আমি তাকে অনেক ভালবাসি। সে একটা গার্মেন্টসে চাকুরী নেয়। তার আয় ছিল খুবই কম। আমাদের পরিবারের জন্য বেশি অর্থ উপার্জন করতে গিয়ে আমাদের কঠিন পরিশ্রম করতে হয়েছে। কয়েক মাস পর আমার স্বামী গার্মেন্টসের কাজ ছেড়ে দিয়ে একটি ট্রাবেল এজেন্সিতে কাজ নেয়। এখন তার উপার্জন আগের চেয়ে অনেক ভাল। এখন আমরা আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। আমি গার্মেন্টসের কাজ ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমি দুই ছেলে সন্তানের মা। আমি আমার ছেলেদেরকে লেখাপড়া শিখাতে চাই।

আমি আমার এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে নারী জীবনের কথা জানতে পারি। নারী জীবনে আসার পর আমি এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী হই। আমি অশিক্ষিত ছিলাম কিন্তু আত্মবিশ্বাস ছিল যে আমি শিখতে পারব এবং এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে নারী জীবনের বাংলা শাখায় ভর্তি হয়ে যাই। আমার একটি স্বপ্ন আছে, নারী জীবন থেকে প্রশিক্ষণ শেষে আমি টেইলরিং বিজনেস্ করতে চাই। আমি আমার পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করতে চাই। পরিবারে আমার স্বামী সকল কাজের সিদ্বান্ত নেয়। আমার মতামতের তেমন কোন মূল্যই থাকে না কিন্তু আমি মনে করি যদি আমি আমার পরিবারকে অর্থিক দিক থেকে সাহায্য করতে পারি তখন হয়ত সবাই আমার মতামতের মূল্যায়ন করবে। হয়তবা তখন আমার স্বামী আমার মতামতকে প্রাদান্য দিবে। এখন আমি বাংলায় লিখতে, পড়তে ও বাক্য তৈরি করতে পারি, ছোট ছোট কিছু ইংরেজী শব্দ পড়তে ও তৈরি করতে পারি এবং ছোট যোগ, বিয়োগ ও গুন করতে পারি।

আমি নারী জীবনের সকল ডোনারদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছি নারী জীবনের মা-কে (প্রতিষ্ঠাতা) যে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং আমাদের শেখার সুযোগ করে দিয়েছে।

মনোয়ারার ভিডিওটি দেখুন,



জরিনা বেগম: পিঠা বিক্রেতা

Title of this post: "Jarina Begum: Who Makes & Sells Cake" By Nina Sultana Mim

পিঠা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী খাদ্যএদেশের মানুষের অত্যন্ত প্রিয় খাদ্য হচ্ছে পিঠাগ্রাম অঞ্চ ও শহর উভয় স্থানেই পিঠা সমান ভাবে জনপ্রিয়শীতের সকালে গরম পিঠা অতুলনীয় আমাদের দেশের শহর অঞ্চলে এই পিঠা বিক্রি করা হয়যারা এই পিঠা বিক্রি করেন তাদের বেশির ভাগই নারীবাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে পিঠা নারীগন রাস্তার পাশে ফুটপাতে পিঠা তৈরি ও বিক্রি করে থাকে এবং বেশির ভাগ ক্রেতাই রিক্সাচালক, সি.এন.জি চালক প্রভৃতি

সাম্প্রতি, আমি একজন পিঠা নারীর সাথে কথা বলেছিতার নাম জরিনা বেগমসে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পিঠা তৈরি করেএকটি মাটির চুলা, একটি মাটির হাড়ির মাধ্যমে পিঠা তৈরি করে থাকেপিঠা তৈরির জন্য চালের গুড়া, গুড় ও হাড়ির উপরে দেয়ার জন্য একটি পাতলা কাপড় লাগেখুবই কম মূল্যে এই পিঠা বিক্রি হয়ে থাকে জরিনা বেগম বলেছে পিঠা বিক্রির অর্থ দিয়ে তার সংসার চালানোর চেষ্টা করেতার স্বামী একজন রিক্সা চালকজরিনা বেগমের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে অর্থে অভাবে তারা স্কুলে যেতে পারে নাদুঃ -কষ্ট ও অভাব-অনটনের মধ্যে জরিনা তার জীবন নিবার্হ করছেজরিনা বেগম তার পরিবার নিয়ে একটি দূষিত পরিবেশে বাস করেতারা গরিব হওয়ার কারনে বঞ্চিত হচ্ছে বিশুদ্ধ খাবার, পানি এবং ভাল আশ্রয় থেকে এবং তার শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে সুশিক্ষা থেকেকিন্তু শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ডকোন জাতি শিক্ষা ছাড়া উন্নতি করতে পারে না আমি দেখেছি, জরিনা এবং তার শিশুরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছেতারা বন্যা, অতিবৃষ্টি, মশা এবং দূর্গন্ধ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অনেক কষ্ট করেআমার মনে হয় তাদের অবস্থা খুবই দুঃখজনকএই অবস্থায় জীবন খুবই কষ্টকর এবং অভিশাপের মত সে বলেছে পিঠা তৈরির জন্য চাল ও গুড় কিনতে প্রচুর রচ হয় যা তার জন্য কষ্টসে ভাঁপা পিঠা, চিতই পিঠা ইত্যাদি নানা ধরনের সুস্বাদু পিঠা তৈরি করে থাকে

আমি তার সাথে কথা বলার সময় তার তৈরি দুঠো পিঠা খেয়েছিসে খুব খুশি হয়েছে এবং তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে দুফোঁটা পানি নেমে গিয়েছিল সে আরও বলেছে, বুজি আমাগো অনেক দুঃখ, মোগো দেখার কেউ নেই কিন্তু হাজার দুঃখ ও অভাবের মধ্যেও জরিনা বেগমের তৈরি পিঠা প্রচন্ড মিষ্টি ও সুস্বাদু এবং অতুলনীয়

Monday, January 21, 2008

ব্লগার প্রোফাইল- (শিক্ষার্থী)

লাইলী জাহান মেঘলা






"আমার নাম লাইলি জাহান মেঘলাআমি ২০শে নভেম্বর, ১৯৮৬ সালে, ঢাকায় জন্মগ্রহন করি ছোটবেলায় থেকেই আমি ঢাকায় বড় হয়েছি। আমি ২০০১ সালে দক্ষিণ বনশ্রী মডেল হাই স্কুল থেকে এস.এস.সি পাশ করি এবং ২০০৩ সালে সিদ্বেশরী গালস্ কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করিএখন আমি সিদ্বেশরী গার্লস কলেজে হিসাব বিজ্ঞানে অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ছি

আমার সখ হলো ফুলের বাগান তৈরি করা, গান শুনা ক্রিকেট খেলা দেখাআমার পচ্ছন্দের জায়গা হলো ঢাকা কার্জন হলআমার প্রিয় লেখক সমরেশ মজুমদার, হুমাযুন আহমেদআমি ব্যাংকার হতে চাই অথবা সংবাদ উপস্থাপিকা হতে চাইআমি নারী জীবনে এসছি আমার এক বান্ধবীর সাথেএখন আমি নারী জীবনে কম্পিউটার ও ইংলিশের ছাত্রী

ব্লগ আমার কাছে সম্পূন নতুন একটি জিনিস যা আমি নারী জীবনে এসে জেনেছি। এটি অনেক আনন্দদায়কএকজন নতুন লেখিকা হিসাবে আমি চেষ্টা করব আমাদের দেশের সংস্কৃতি ও মানুষের জীবনচিত্র পৃথিবীদের অনান্যদের সামনে তুলে ধরতে। আমি নারী জীবনের সাইবার ক্যাফ পছন্দ করি এবং নারী জীবন থেকে প্রশিক্ষন নিতে পেরে আমি খুব খুশি।"


আয়েশা পারভীন





"আমার নাম আয়েশা পারভীন। আমি ১৯৮৩ সালের ৫ই ডিসেম্বর ঢাকা জেলায় জন্ম গ্রহন করেছি। আমি১৯৯৯ইং সালে কেদমতলা হাই স্কুল হতে ঢাকা বোর্ডে আধীনে এস.এস.সি পাস করেছি এবং ২০০১ইং সালে ইস্পাহানী বালিকা বিদ্যালয় হতে ঢাকা বোর্ডে আধীনে এইচ.এস.সি পাস করেছি বর্তমানে আমি ইডেন মহিলা কলেজে সমাজ বিজ্ঞানে অর্নাস পড়ছি।

আমার বাবা একজন চাকুরিজীবী,তার কর্মস্থল হল শওয়ালেস শিপিংলিমিটেড মহাখালী, ঢাকাআমার মা একজন গৃহিনী আমার এক বোন এবং এক ভাই আছেআমার বোন একজন গৃহিনী এবং আমার ভাস্ট্যমফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে ইংলিশে অনার্স পড়ছে। আমার প্রিয় জায়গা সমুদ্র সৈকত আমার প্রিয় সখ হচ্ছে বন্ধুদে সাথে আড্ডা দেয়া এবং উপন্যাস পড়া

মি ভবিষ্যতে দেশের বাইরে থেকে উচ্চ ডিগ্রী লাভ এবং কোন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকরি করতে আগ্রহী নারী জীবন এই উদ্যোগ একটি সফল উদ্যোগ আমি নারী জীবনের ইংরেজী-১.৫ ক্লাসের শিক্ষার্থী।