Saturday, February 28, 2009

যুদ্ধ জয়ের মন্ত্র

লিখেছেন: হাদিয়া আক্তার

কয়লাতে যদি না গলতো সোনা
আমার মায়ের নোলক হতোনা।

কঠিন উত্তাপে যদি না গলতো লোহা
সু-প্রাচির অট্টালিকা হতো না।

অতিত যদি নাইবা হতো
আধুনিকতার ছোঁয়া পেতাম না।

সোনার জন্য কয়লা যেমন
জ্ঞানের জন্য সাধনা তেমন।

লোহার জন্য কঠিন উত্তাপ
জয়ের জন্য অপর শ্রম।

অতিতের জীর্ণতার জন্য
ছিকল ছেড়ার সাহস হলো।

যুদ্ধ করার এই মন্ত্র
আমি প্রকৃতির কাছে শিখেছি।

আজ আমি জয় করতে জানি
তাইতো আমি বিশ্বকে চিনেছি।

নতুন পথের স্বপ্ন

লিখেছেন: হাদিয়া আক্তার
যাব আমি অনেক দূরে
ঐ লাল নীল আলোর পথে
প্রজাপতির ডানায় ভেসে।

জাগবো আমি কুড়ি হয়ে
ডাকবে আলো সকাল সাজে
সুভাস দেব সবার মাঝে।

লুকোচুড়ি খেলে কোকিল যে,
দোল খেলানো বসন্তেরই সাথে
পরবো আমি খোপার তারে।

পলাশ-গাঁদার সমারোহে
ডাকছে আমায় আলো হাতে
একটা মালার বাঁধনেতে।

দেখবো না আর পিছন ফিরে
কষ্ট আর গ্লানিকে মুছে ফেলে
জাগবো আমি ফাগুন হয়ে।

বসন্তের আগমনে

Title of this post: “When Falgum comes” by Farzana Akter Tuli

চলতে চলতে জীবনের প্রান্তে
কোন এক ফাগুনে,
দাঁড়িয়ে আছ তুমি
বসন্তের আগমনে।
জান কি, কে সে জন?
সে জন হল শ্রাবনের র্ঝণা ধারা,
যার প্রতিটি জলসোতে রয়েছে
অনুরাগের সাড়া।

সে হল এক ইন্দ্রধনু,
যার প্রতিটি অনুভব
সাত রং-এ রাঙানো রংধনু।
সে হল
আষাঢ়ের কালো মেঘ,
যার প্রতিটি পড়তে রয়েছে
অজানা সব আবেগ।
তুমি জান, জান কি?

Monday, February 16, 2009

কল্পপুরী

Title of this post: Imaginary world by Hadia Akter

পদ্ম ফোটার দিন
কী আর আছে?
আজও কী আর
ঝিলের বুকে মাছরাঙ্গারা হাসে?
গহিন বনে এখন কী আর
মায়া হড়িণ ডাকে?
দাদুর মুখে শুনেছি কত;
আম কাঁঠালের গল্প।
পুকুর ভরা মাছ;
গোয়াল ভরা গাভী;
শীতের দিনের পীঠাপুলি;
এসব এখন কল্পুরী।
সাত সমুদ্র পারি দিতে—
সাজেনাতো সপ্ত ডিঙ্গা।
বাজে নাতো ঢেঁকির নুপুর
যায়না কৃষাণ লাঙ্গল নিয়া
সবুজ শ্যামল মাঠের বুকে
গাঁয়ের কোকিল ডাকে নারে
বসন্ত যে হাড়িয়ে গেছে
গ্রীণ হাউজের চাপে পরে,
আধুনিকতার মুকুট পরে,
ইন্টারনেট এর বিশ্ব গড়ে,
পল্লীগ্রাম দুর্বিসহ মনে করে।

Friday, January 9, 2009

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

Title of this post: Natural beauty of Bangladesh by Ayesha Sanjida Synthia

এমন স্নিগ্ধ নদী কাহার?
ওথায় এমন ধুম্র পাহাড়?
কোথায় এমন হড়িৎ ক্ষেত্র
আকাশ তলে মেশে?
এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায়
বাতাস কাহার দেশে

প্রকৃতির লীলাক্ষেত্র আমাদের এ রূপসী বাংলাদেশ। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়, জলপ্রপাত, বনভূমি এদেশকে করে তুলেছে অপূর্ব রূপময়।এছাড়াও বাংলাদেশের কিছু পাহাড়-পর্বত ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশ এক বিশা বদ্বীপ। অর্থাৎ, সমভূমি অঞ্চল।

ছবি: রাহিমা আক্তার হিরা

আয়তনঃ বাংলাদেশ এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এ দেশ ২০° ৩৪' উত্তর অক্ষরেখা থেকে ২৬° ৩৮' উত্তর অক্ষরেখার মধ্যে এবং ৮৮°০১' পূর্ব দ্রাঘিমারেখা থেকে ৯২° ৪১' পূর্ব দ্রাঘিমারেখার মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশের মাঝামাঝি স্থান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ছাড়া সারা দেশটির চারপাশ ঘিরে রেখেছে ভারত।

বাংলাদেশের নদনদীঃ নদী মাতৃক দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ একটি ছোট্ট আয়তনের সবুজ শ্যামলে ঘেরা একটি দেশ। যার সর্বোত্র ছোট-বড় অসংখ্য জলাশয় জালের মত ছড়িয়ে আছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ১৯৯৬-৯৭ সালের তথ্য অনুসারে দেখা যায়, বাংলাদেশের নদী অঞ্চলের আয়তন ৯,৪০৫ বর্গ কিলোবাইট। বাংলাদেশের নদীর সংখ্যা প্রায় ৭০০। আর নদীবহুল দেশ বলে স্বাভাবিকভাবেই এ দেশের মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নদীর প্রভাব রয়েছে। পদ্মা, বহ্মপুত্র, যমুনা মেঘনা ও কর্ণফুলী বাংলাদেশের প্রধান নদী। এ নদীগুলোর উপনদী ও শাখানদী রয়েছে। উপনদী ও শাখানদী সহ বাংলাদেশে নদীর মোট দৈর্ঘ্য হল প্রায় ২২,১৫৫ কিলোমিটার। এ সকল নদনদী এর সমভূমি অঞ্চলকে করেছে শস্য শ্যামলা ও অপরুপ সৌন্দর্যের অধিকারী। প্রকৃতি যে কি আশ্চর্য সুন্দর তা বাংলাদেশের প্রতিটি ঋতুকে দৃষ্টিতে লক্ষ না করলে বুঝা যায় না। তাই বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এদেশে যুগে যুগে এসেছেন বহু পর্যটক, কবিরা লিখেছেন কবিতা। কবি কাজী কাদের নেওয়াজের ভাষায়

"পদ্মা যমুনা মধুমতি আর
মেঘনার মালা কন্ঠে পরি,
দাঁড়ায়ে রয়েছে সুজলা যে দেশ
সেই দেশে বাস আমরা করি।"

ভূ-প্রকৃতিঃ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও রূপ, লাবণ্যের কথা বলে শেষ করা যায় না। যতই বলি মনে হয় যেন কম বলা হয়েছে। এদেশের অনুপম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চিরকাল ধরে মুগ্ধ কবিচিত্তে কাব্যস্রোত বইয়ে দিয়েছে

ভাবুকের হৃদয়ে অনির্বচনীয় ভাবের ঢেউ জাগিয়েছে। বাংলাদেশে যে কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে যে কোন দিকেই দৃষ্টিপাত করি না কেন চোখ দুটো প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে ধন্য হয়, মনপ্রাণ আনন্দে ভরে ওঠে। কি পাহাড় টিলার রমনীয় শোভা, কী গাছপালা ও তৃণমূল শোভিত বনের মনোরম দৃশ্য, কী কলনাদিণী নদনদীর অপরূপ সৌন্দর্য, কী শ্যামল শোভাময় ফসলের ক্ষেত সবই এদেশে সুন্দর ও অনুপম । বাংলাদেশের প্রকৃতির এরূপ সৌন্দর্য দেখেই দ্বিজেন্দ্রলাল রায় লিখেছেন

"ধনধান্যে পুষ্পেভরা আমাদের এই বসুন্ধরা,
তাহার মাঝে এছে দেশ এক-সকল দেশের সেরা;
ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা;
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমা,
সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি।"

বাংলাদেশে এমন কোন স্থান নেই যেখানে সৌন্দর্যের এতটুকু ভাটা পড়েছে। সাগর রাতদিন তার পা ধুয়ে দিচ্ছে, নদী তার কটিদেশ ও গলায় মেঘলা ও চন্দ্রহারের মতো শোভা পাচ্ছে, মাঠের শ্যামলিমা তাকে শাড়ির মতো ঘিরে রেখেছে এবং সবুজ বনরাজি তার শিড়ে মুকুট পরিয়ে দিয়ে রানীর সাজে সাজিয়েছে। চট্টভূমি থেকে বরেন্দ্রভূমি পর্যন্ত সবখানে এ রূপের জোয়ার উতলে উঠেছে কোথাও এতটুকু কমতি নেই।

জলবায়ুঃ বাংলাদেশের এই যে এত সৌন্দর্য এর পেছনে কাজ করছে অনুকূল জলবায়ু। কর্কটক্রান্তি তার ওপর দিয়ে গেলেও সাগর কাছাকাছি থাকায় এবং মৌসুমি বায়ু তার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারনে শীত ও গ্রীষ্মের তীব্রতা এখানে অতিমাত্রায় অনুভূত হয় না। জুন মাসের শুরুতে বঙ্গোপসাগর থেকে উষ্ণ আদ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যায় এবং পূর্ব ও উত্তরের পাহাড়ি এলাকায় বাধা পেয়ে বাংলাদেশের প্রকৃতি এক অভিনব রূপ ধারণ করে। নদনদী কানায় কানায় পানিতে ভরে যায়। মাঠে মাঠে শস্য উৎপাদনের আয়োজন চলতে থাকে। হাঁসেরা দল বেঁধে আনন্দে সাঁতার কাঠতে থাকে। ছোট বড় মাছেরা ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটাছুটি করতে থাকে। শাপলা, কুমুদ প্রভূতি ফুল ফুঁটে অপূর্ব সৌন্দর্য ধারণ করে। গ্রীষ্মের দাবদাহ বর্ষার বর্ষনে অনেকটা কমে যায়। পাট ও আউশ ধানের ক্ষেতগুলো সবুজতায় ভরে যায়।

ছবি: আসমা আক্তার চৈতি

বর্ষার পরে আসে শরৎকাল। তখন গ্রীষ্মের তীব্রতা কিছুটা কমে আসে। শরতের চাঁদনী রাতে কি বনের গাছ-পালা, কী নদী তীরের কাশবন, কী গৃহস্থের কুটির, কী গতিশীল নদীস্রোত নতুন নতুন রূপে আমাদের চোখে ধরা দেয়। নানা রকমের ফুল ফোঁটে। শরতের শেষে কিছুটা শীতের আমেজ শুরু হয়। এর ফঁকে চলে আসে হেমন্তকাল। সোনালি ধানে মাঠ ভরে যায়। ফসলের সওগাত গৃহস্থের ঘরে ঘরে তুলে দিয়ে ধরনী এক সময় রিক্ত হয়। তখন আসে শীতকাল। সে সময় বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে। তীব্র শীত অনুভূত হয় এবং শ্যামল প্রকৃতি যেন বুড়োদের মতো শীর্নমূর্তি ধারন করে। এরপর একটা সময় আসে যখন শীত ও গ্রীষ্মের মিশ্র আমেজ অনুভূত হয়। আসে বসন্তকাল । গাছ-পালা ও তরুলতায় নতুন পাতা গজায় এবং বিচিত্র রঙের ফুল ফুটে। প্রকৃতি যেন নতুন সৌন্দর্যে তার যৌবন ফিরে পায়।

ঋতু প্রকৃতি: বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। ছয়টি ঋতুতে প্রকৃতির ছয় রকম অবস্থা দেখা যায়। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশের প্রকৃতি হয়ে ওঠে এক উদাসীন সন্ন্যাসীর মতো। তার রুক্ষ রৌদ্রের দাবদাহে মানবজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এ সময়ে কালবৈশাখি তার উদ্দামতা নিয়ে আসে। গ্রীষ্মের পর আসে বর্ষা। বর্ষায় এ দেশের প্রকৃতিতে যেন নতুন করে প্রানের সঞ্চার হয়। তখন প্রকৃতি হয়ে ওঠে সজীব ও সতেজ। ফসল ভরা ক্ষেতগুলো দেখলে মনে হয় আবহমান। ধানসিঁড়ির সমুদ্র। তখন মনে হয় প্রকৃতি যেন তার সমস্ত গ্লানি মুছে ফেলে। চাঁদনী রাতের শোভা তখন বড়ই মনোলোভা মনে হয়। কবি তাই বলেন-

“চাঁদনীর সাথে প্রতি রাতে রাতে
গোলা সোনা রং ঢালে যে
খুব মনোচোর শরতের ভোর
আলোছায়া ঋতু বড়সে।

শরতের শেষে, শীতের আগে আসে হেমন্ত ঋতু। এ সময় সোনালী ফসলে ভরা থাকে মাঠ-ঘাট। আর সোনালি ধানের শীষে যখন বাতাসের খেলা চলে তখন বাংলার নিসর্গে স্বর্গের ছোঁয়া লাগে। হেমন্তের পর শুষ্ক শীতল চেহারা নিয়ে আসে শীত। এ সময়ে প্রকৃতি বিবর্ন ও বিষন্ন হয়ে পড়ে। শীতের শেষে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। গাছপালা তখন সজীব হয়ে ওঠে। গাছে গাছে নতুন পাতা গজায় নতুন নতুন ফুল ফোঁটে।

বিভিন্ন দৃশ্য: বাংলাদেশ গ্রাম প্রধান দেশ । তার প্রত্যেকটি গ্রাম যেন প্রকৃতির এক অপূর্ব রঙ্গশালা। যেদিকে চোখ যায়- অবারিত সবুজ মাঠ, ফুলেফলে ভরা গাছপালা, তৃন গুল্মশোভিত বন-বনানী ও শ্যামল শস্যেক্ষত- এই অনুপম রূপসুধা পান করে সকলের হৃদয়ে এক অভিনব আনন্দের শিহরন জাগে। কোথাও প্রকৃতির সবুজ ঘোমটা ভেদ করে পাকা শস্যের সোনালি সুন্দর মুখখানা বের হয়ে আসছে, আবার কোথাও বিশালদেহ বটবৃক্ষ প্রান্তরের এক স্থানে উধ্বর্বাহু হয়ে মৌন তাপসের মত দাঁড়িয়ে সুশীতল ছায়া দিয়ে পথিকের ক্লান্তি দুর করছে । কোথাও তালগাছ এক পায়ে দাড়িঁয়ে আকাশ থেকে নীলিমা ছিনিয়ে আনার জন্যে ওপর দিকে হাত বাড়িয়েই চলছে, আবার কোথাও দীঘির কাকচক্ষু কালো পানিতে লাল সাদা শাপলা ও কুমুদ ফুঁটে অপরূপ সৌন্দর্য বিস্তার করছে। বাংলাদেশের এই সৌন্দর্য বৈচিত্র্য সবার মন আনন্দে ভরে দেয়।

ছবি: জান্নাত আরা আমজাদ

অবশেষে বলব বাংলাদেশ ঋতু বৈচিত্র্যের দেশ। ষড়ঋতুর খেলা চলে এদেশে। প্রত্যেক ঋতুতে এদেশে নতুন নতুন রূপ ধারন করে। নতুন আনন্দ আর সৌন্দর্যে আমাদের মন ভরিয়ে দেয়া। বাংলাদেশের মতো মনোরম প্রকৃতিক সৌন্দর্য পৃথিবীর আর কোন দেশে নেই। তাই কবি বলেছেন-

“সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।
সার্থক জনম মাগো, তোমায় ভালবেসে।”

সম্প্রতি আমি গ্রামে গিয়েছিলাম। আমি আমার জীবনের প্রথম ট্রেনে উঠেছিলাম। আমি, আমার মা, আমার ছোট দুই বোন, আমার খালা এবং আমার বড় মামা আমারা সকাল ৬:০০টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দ্যেশে রওয়ানা হলাম। সেখানে গিয়ে আমরা নির্ধারিত ট্রেনে উঠে বসলাম। আমি বসেছিলাম জানালার কাছে। ট্রেনটি ৭:১৫ মিনিটে ছেড়েছিল। ট্রেনটি ছিল অনেক বড়। ট্রেনটি খুব জোড়ে চলছিল। জানালা দিয়ে প্রচন্ড বাতাস আসছিল। ভোরের বাতাসকে আমি বেশ উপভোগ করলাম। শহরের কিছু পুরাতন ও কিছু নতুন ও মন মোহনীয় কিছু স্থানের পাশ দিয়ে ছুটল ট্রেনটি। ট্রেনটি ঝকঝক আওয়াজ তুলে ও হর্ণ বাজিয়ে বিকট গর্জন তুলে ছুটছে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। ধীরে ধীরে ট্রেনটি শহর পেরিয়ে গ্রামে চলে এলো। আবহাওয়া ছিল অনেক ভাল। উপরে পরিষ্কার আকাশ, নিচে সবুজ শ্যামলা সুন্দর ও মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। ৯ ঘন্টা পর আমরা গ্রামে এসে পৌঁছালাম। আমার গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার গুপিনাথপুর গ্রাম। তবে আমরা প্রথমে উঠি আমার নানাবাড়িতে সাহ‍্পুর গ্রামে। প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য আমাকে এতটাই মুগ্ধ করেছে যে, ক্লান্ত হয়ে আছি যে, তা ভুলেই গিয়েছিল। রাতের বেলায় দেখলাম প্রকৃতির আরেক রূপ ও রঙ। রাতের আকাশ চাঁদের আলোয় আলোকিত করে ফেলে। চাঁদের আলোয় রাতের বাঁশঝাড় ও গাছপালা গুলো অদ্ভুত সুন্দর লাগছিল। সুন্দর বাতাস বইছিল। অপূর্ব সুন্দর লাগছিল। দিনের বেলা কৃষাণীরা শীতল পাটি তৈরী করে এবং ধান ভানে, রোদে শুকায়। যে দিকে তাকাই সবুজের সমারোহ। প্রকৃতি যেন অপূর্ব সাজে সজ্জিত হয়ে আছে। প্রকৃতি যেন শ্যামলের সিংহাসন করে বসে আছে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলাম । এক এক জায়গায় এক এক রূপ বৈচিত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তার দুই ধারে খেজুর গাছ, নারকেল গাছ মাথা উঁচু করে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হয় যেন এরা এখানকার চিরন্তর প্রহরী। পথিকদের স্বাগতম জানাচ্ছে। অতঃপর আমাদের ছুটির দিন শেষ হয়ে এল। আমরা বাসে করে ঢাকায় ফিরলাম। বুঝতে পাড়লাম বাংলাদেশ শুধু সুন্দর নয়, অপূর্ব, অতূলনীয় ও অসাধারণ সুন্দর।


Saturday, January 3, 2009

নীরবে

Title of this post: Silently by Naushin Tarannam


কষ্টের শেকড় বেয়ে বেড়ে ওঠা
ডাল-পালা আর কাটা-পাতা,
ধৈর্য্যের আশে পাশে কাঁদে
এই বেহালা নীরবে।
শীতের ছোঁয়া লাগে
বুকের বাম পাশটা
শুকিয়ে গেছে নীরবে।
ভয়ে জড়ো-সরো আমার গন্তব্য,
বিষাদ আর বিষন্নতা এই মনে
ঘুমগুলো সব হরিয়েছে-নীরবে।
ভেসে গেছে সব,হাওয়ায় হাওয়ায়
নিভে গেছে সব মিথ্যে সময়ের নিয়ত বাতি,
এই আমি তার চোখে তাকিয়ে
জ্বালাতে পারিনি ব্যর্থতার বাতি-নীরবে।

পথের শিশু

Title of this post: Street Children by Naushin Tarannam


পথের শিশু
একটা শিশু পথের মাঝে
দাড়িয়ে থাকে একা
কেউ করেনা খোঁজ যে তার
কেউ বোঝেনা ব্যাথা।
এই শিশুটির পেথই জন্ম
পেথই হলো বড়।
জানেইনা যে অদৃষ্টে কি
দুঃখ আছে আরও !
মা বলে,ডাকেনি যে
ফোটেনি প্রথম কথা,
সেই শিশুটি না পেয়ে মাকে
পায় যে মনে ব্যাথা।
মায়ের আদর বঞ্চিত এই
হতভাগ্য ছেলেটি,
বাবার স্নেহ ভালোবাসাও
ভাগ্যে কখনও মেলেনি।
পথের মাঝে সেই ছেলেটি
দাড়িয়ে থেকে একা,
প্রশ্ন করেও নিরুত্তর সে
কেন এ বেঁচে থাকা?

শুভ নববর্ষ

Title of this post: Happy New Year by Raima Akter Hira


ওই শোনো গো নতুন দিন বুঝি এল আজ
তাই বধু রাখ তোমার হাতের যত কাজ,
নতুন দিনকে বরণ করে নিও বধু তোমার করে
শুনছ না কি তোমার গৃহদ্বারে,
ঘরের শিকলটি কে নাড়ে এমন শিশির ভেজা ভোরে।
দেখ বধু ঘরের দ্বার খুলে,
বরণ করে নিও বধু তার হাত দুটো ধরে।
নিও বধু মাথার ঘোমটা টেনে,
শীতের কুয়াশা ভেজা ভোরে চিনবে কি তারে
যদি সে আসে অচেনা সুরের মত করে।
নতুন আশার আলো সঞ্চার করে,
বরণ করো তাকে মিষ্টি হাসি দিয়ে;
নতুন দিনকে নতুন ভালবাসা দিয়ে।

স্বাগতম নতুন বছর ২০০৯ । এসো নতুন স্বপ্ন ,নতুন সম্ভাবনা নিয়ে। নতুন কিছু সৃষ্টির সুখে ,নতুন উল্লাসে ।আবেগের তরঙ্গে ভেসে নতুন আবেগ সৃষ্টির সুখে। ভালবাসার আশার সঞ্চার করে, নব দিগন্ত উন্মোচন করে। এসো হে নতুন বছর ডিজিট্যাল বাংলাদেশে। সবার মাঝে ডিজিট্যাল সুখে দুখে পাশে থাকবার হয়ে। এসো আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশে শীতের শিশির ভেজা সকালে হাসির প্রদীপ হাতে নিয়ে এই দেশের প্রতিটি ঘরে।