Saturday, September 6, 2008

সড়ক কন্যা

Title of this post: Road Girl by Surma Akter

বা
স্তবটা যে বড় কঠিন তা বুঝা যায় নাতা বুঝা যায় শুধু এই গৃহহারা শিশুদের দিকে তাকালেইতাদের নিদিষ্ট কোন গৃহ নেই তারা পথের ধারে ফুটপাতে জীবন কাটায়পান্থপথ মোড়ের ট্রাফিক সিগনালে গাড়ি থামলে একদল ছেলেমেয়ে পপকার্নের প্যাকেট হাতে দৌঁড়ে আসেএদের একজন স্মৃতিনয়-দশ বছর বয়সী স্মৃতি প্রায় এক বছর ধরে পপকর্ন বিক্রি করছেসোনারগাঁ হোটেলের পেছনের স্তিতে ওদে বাস ছিলসেই বস্তি ভেঙ্গে যাওয়ায় ওরা এখন থাকে তেজগাঁওয়েস্মৃতির বাবা নেইবাবার নাম সে জানেও নামাও নেই মা স্মৃতিকে ছোট রেখে মারা যায় সে মায়ের কথা একটু একটু বলতে পারেসে জানে তার মা মারা গেছে কিন্তু বাবার কথা সে জানে নাএক ভাই আর ছোট বোন এই নিয়ে তাদে সংসার সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ভাই কাওরানবাজারে কুলির কাজ করেস্মৃতি দিনে প্রায় ৩০-৩৫প্যাকেট পপকর্ন বিক্রি করতে পারেপ্যাকেট প্রতি ২-৩ টাকা লাভ হয় তারসে কোনদিন স্কুলে যায়নিতার স্কুলে যাওয়ার বড় শখ ছিলকিন্তু কে দিবে তার লেখাপড়ার খরচতিন বেলা তিন মুঠো ভাত জোগাড় করতে তারা হাঁপিয়ে উঠেতাও তারা জোগাড় করতে পারে না কোন রকমে দিন কাটে রাত হয়এই ভাবে তাদে জীবন অতিবাহিত হয়তার চেহারা দেখলেই বোঝা যায় সে চরম ভাবে অপুষ্টির শিকারসে বলে অনেক কিছু খাইতে ইচ্ছা করে কিন্তু টাকা পাইনাবেডিরা কত রকম জামা পরেআমার ও পড়তে ইচ্ছা করেকিন্তু কে কিনে দেবে? মা বাবা তো নাদুই ভাই বোন অনেক কষ্টে বাঁইচা আছি।

স্মৃতির মতো অসংখ্য শিশুরা এই কঠিন বাস্তবতার শিকার হচ্ছেতবে তাদে নিদিষ্ট কোন ঠিকানা নেইঢাকায় এবং অন্যান্য শহরে কাজের মেয়েপিচ্চি ইত্যাদি নামে অনেক মেয়ে শিশু কর্মরত আছেতারা নানা রকম নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হচ্ছেপথ শিশু হিসেবে যে মেয়েরা চকলেট, ফুল, পপকর্ন, পানি ইত্যাদি বিক্রি করে তারা ও নানা ধরনে হয়রানি নির্যাতনের শিকার হয়বাসাবাড়িতে যে মেয়ে শিশুরা শ্রম দিচ্ছে তাদের অবস্থাও অতি শোচিনীয়মেয়ে পথ শিশুদের অনেকেরই মা নেই যাদে মা আছে তারাও শিশুকে নিরাপত্তা দিতে অক্ষ অনেক শিশু নারী পাচার কারীর খপ্পরে পরে বিক্রি হচ্ছে।এই শিশুরা অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ বিভিন্ন অধিকার থেকে চরম ভাবে বঞ্চিয়েকটি সরকারী ও বেসরকারী সংগঠন পথ শিশুদের নিয়ে এবং শ্রমজীবি শিশুদে আশ্রয়, শিক্ষা ও পূর্ণবাসনের ক্ষে কাজে করছেকিন্তু তা প্রয়োজনে তুলনায় অনেক কম পথশিশু ও শিশুশ্রমিকদের মধ্যে মেয়ে শিশুরা বেশি নির্যাতনের শিকার আমি মনে করি সরকারি বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি প্রতিটি সচেতন নাগরিককে এই সড়ক কন্যাদে প্রতি সহানুভুতির হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত।