বাস্তবটা যে বড় কঠিন তা বুঝা যায় না। তা বুঝা যায় শুধু এই গৃহহারা শিশুদের দিকে তাকালেই। তাদের নিদিষ্ট কোন গৃহ নেই তারা পথের ধারে ফুটপাতে জীবন কাটায়। পান্থপথ মোড়ের ট্রাফিক সিগনালে গাড়ি থামলে একদল ছেলেমেয়ে পপকার্নের প্যাকেট হাতে দৌঁড়ে আসে। এদের একজন স্মৃতি। নয়-দশ বছর বয়সী স্মৃতি প্রায় এক বছর ধরে পপকর্ন বিক্রি করছে। সোনারগাঁ হোটেলের পেছনের বস্তিতে ওদের বাস ছিল। সেই বস্তি ভেঙ্গে যাওয়ায় ওরা এখন থাকে তেজগাঁওয়ে। স্মৃতির বাবা নেই। বাবার নাম সে জানেও না। মাও নেই। মা স্মৃতিকে ছোট রেখে মারা যায়। সে মায়ের কথা একটু একটু বলতে পারে। সে জানে তার মা মারা গেছে । কিন্তু বাবার কথা সে জানে না। এক ভাই আর ছোট বোন এই নিয়ে তাদের সংসার । সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ভাই কাওরানবাজারে কুলির কাজ করে। স্মৃতি দিনে প্রায় ৩০-৩৫প্যাকেট পপকর্ন বিক্রি করতে পারে। প্যাকেট প্রতি ২-৩ টাকা লাভ হয় তার। সে কোনদিন স্কুলে যায়নি। তার স্কুলে যাওয়ার বড় শখ ছিল। কিন্তু কে দিবে তার লেখাপড়ার খরচ। তিন বেলা তিন মুঠো ভাত জোগাড় করতে তারা হাঁপিয়ে উঠে। তাও তারা জোগাড় করতে পারে না। কোন রকমে দিন কাটে রাত হয়। এই ভাবে তাদের জীবন অতিবাহিত হয়। তার চেহারা দেখলেই বোঝা যায় সে চরম ভাবে অপুষ্টির শিকার। সে বলে অনেক কিছু খাইতে ইচ্ছা করে কিন্তু টাকা পাইনা। বেডিরা কত রকম জামা পরে। আমার ও পড়তে ইচ্ছা করে। কিন্তু কে কিনে দেবে? মা বাবা তো নাই। দুই ভাই বোন অনেক কষ্টে বাঁইচা আছি।
Saturday, September 6, 2008
সড়ক কন্যা
Title of this post: Road Girl by Surma Akter
বাস্তবটা যে বড় কঠিন তা বুঝা যায় না। তা বুঝা যায় শুধু এই গৃহহারা শিশুদের দিকে তাকালেই। তাদের নিদিষ্ট কোন গৃহ নেই তারা পথের ধারে ফুটপাতে জীবন কাটায়। পান্থপথ মোড়ের ট্রাফিক সিগনালে গাড়ি থামলে একদল ছেলেমেয়ে পপকার্নের প্যাকেট হাতে দৌঁড়ে আসে। এদের একজন স্মৃতি। নয়-দশ বছর বয়সী স্মৃতি প্রায় এক বছর ধরে পপকর্ন বিক্রি করছে। সোনারগাঁ হোটেলের পেছনের বস্তিতে ওদের বাস ছিল। সেই বস্তি ভেঙ্গে যাওয়ায় ওরা এখন থাকে তেজগাঁওয়ে। স্মৃতির বাবা নেই। বাবার নাম সে জানেও না। মাও নেই। মা স্মৃতিকে ছোট রেখে মারা যায়। সে মায়ের কথা একটু একটু বলতে পারে। সে জানে তার মা মারা গেছে । কিন্তু বাবার কথা সে জানে না। এক ভাই আর ছোট বোন এই নিয়ে তাদের সংসার । সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ভাই কাওরানবাজারে কুলির কাজ করে। স্মৃতি দিনে প্রায় ৩০-৩৫প্যাকেট পপকর্ন বিক্রি করতে পারে। প্যাকেট প্রতি ২-৩ টাকা লাভ হয় তার। সে কোনদিন স্কুলে যায়নি। তার স্কুলে যাওয়ার বড় শখ ছিল। কিন্তু কে দিবে তার লেখাপড়ার খরচ। তিন বেলা তিন মুঠো ভাত জোগাড় করতে তারা হাঁপিয়ে উঠে। তাও তারা জোগাড় করতে পারে না। কোন রকমে দিন কাটে রাত হয়। এই ভাবে তাদের জীবন অতিবাহিত হয়। তার চেহারা দেখলেই বোঝা যায় সে চরম ভাবে অপুষ্টির শিকার। সে বলে অনেক কিছু খাইতে ইচ্ছা করে কিন্তু টাকা পাইনা। বেডিরা কত রকম জামা পরে। আমার ও পড়তে ইচ্ছা করে। কিন্তু কে কিনে দেবে? মা বাবা তো নাই। দুই ভাই বোন অনেক কষ্টে বাঁইচা আছি।
স্মৃতির মতো অসংখ্য শিশুরা এই কঠিন বাস্তবতার শিকার হচ্ছে। তবে তাদের নিদিষ্ট কোন ঠিকানা নেই। ঢাকায় এবং অন্যান্য শহরে “কাজের মেয়ে” পিচ্চি ইত্যাদি নামে অনেক মেয়ে শিশু কর্মরত আছে। তারা নানা রকম নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। পথ শিশু হিসেবে যে মেয়েরা চকলেট, ফুল, পপকর্ন, পানি ইত্যাদি বিক্রি করে তারা ও নানা ধরনে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়। বাসাবাড়িতে যে মেয়ে শিশুরা শ্রম দিচ্ছে তাদের অবস্থাও অতি শোচিনীয়। মেয়ে পথ শিশুদের অনেকেরই মা নেই যাদের মা আছে তারাও শিশুকে নিরাপত্তা দিতে অক্ষম। অনেক শিশু নারী পাচার কারীর খপ্পরে পরে বিক্রি হচ্ছে।এই শিশুরা অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ বিভিন্ন অধিকার থেকে চরম ভাবে বঞ্চিত। কয়েকটি সরকারী ও বেসরকারী সংগঠন পথ শিশুদের নিয়ে এবং শ্রমজীবি শিশুদের আশ্রয়, শিক্ষা ও পূর্ণবাসনের লক্ষে কাজে করছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। পথশিশু ও শিশুশ্রমিকদের মধ্যে মেয়ে শিশুরা বেশি নির্যাতনের শিকার। আমি মনে করি সরকারি বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি প্রতিটি সচেতন নাগরিককে এই সড়ক কন্যাদের প্রতি সহানুভুতির হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত।
বাস্তবটা যে বড় কঠিন তা বুঝা যায় না। তা বুঝা যায় শুধু এই গৃহহারা শিশুদের দিকে তাকালেই। তাদের নিদিষ্ট কোন গৃহ নেই তারা পথের ধারে ফুটপাতে জীবন কাটায়। পান্থপথ মোড়ের ট্রাফিক সিগনালে গাড়ি থামলে একদল ছেলেমেয়ে পপকার্নের প্যাকেট হাতে দৌঁড়ে আসে। এদের একজন স্মৃতি। নয়-দশ বছর বয়সী স্মৃতি প্রায় এক বছর ধরে পপকর্ন বিক্রি করছে। সোনারগাঁ হোটেলের পেছনের বস্তিতে ওদের বাস ছিল। সেই বস্তি ভেঙ্গে যাওয়ায় ওরা এখন থাকে তেজগাঁওয়ে। স্মৃতির বাবা নেই। বাবার নাম সে জানেও না। মাও নেই। মা স্মৃতিকে ছোট রেখে মারা যায়। সে মায়ের কথা একটু একটু বলতে পারে। সে জানে তার মা মারা গেছে । কিন্তু বাবার কথা সে জানে না। এক ভাই আর ছোট বোন এই নিয়ে তাদের সংসার । সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ভাই কাওরানবাজারে কুলির কাজ করে। স্মৃতি দিনে প্রায় ৩০-৩৫প্যাকেট পপকর্ন বিক্রি করতে পারে। প্যাকেট প্রতি ২-৩ টাকা লাভ হয় তার। সে কোনদিন স্কুলে যায়নি। তার স্কুলে যাওয়ার বড় শখ ছিল। কিন্তু কে দিবে তার লেখাপড়ার খরচ। তিন বেলা তিন মুঠো ভাত জোগাড় করতে তারা হাঁপিয়ে উঠে। তাও তারা জোগাড় করতে পারে না। কোন রকমে দিন কাটে রাত হয়। এই ভাবে তাদের জীবন অতিবাহিত হয়। তার চেহারা দেখলেই বোঝা যায় সে চরম ভাবে অপুষ্টির শিকার। সে বলে অনেক কিছু খাইতে ইচ্ছা করে কিন্তু টাকা পাইনা। বেডিরা কত রকম জামা পরে। আমার ও পড়তে ইচ্ছা করে। কিন্তু কে কিনে দেবে? মা বাবা তো নাই। দুই ভাই বোন অনেক কষ্টে বাঁইচা আছি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment