Thursday, December 13, 2007

ব্লগার প্রোফাইল- (শিক্ষার্থী)

Title of this post: Bloggers profile (students)

আফরিনা আফরোজ এ্যানি









"আমার নাম
আফরিনা আফরোজ এ্যানি, আমি ১৯৯০ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করি । আমার বাবা একজন ব্যাবসায়ী এবং আমার মা একজন গৃহিনী। আমরা দুই ভাই এক বোন । আমার দুই ভাই আমার ছোট্‌ আমি মানবিক শাখা থেকে ২০০৫ সালে এস.এস.সি এবং ২০০৭ সালে এইচ.এস.সি পাস করেছি আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা হচ্ছে আমার গ্রামের বাড়ি। সেখানে আমরা অনেক কিছু দেখতে পাই যা আমরা শহর এলাকায় দেখতে পারি না। সেখানে কোন দূষিত বায়ু নেই, নেই কোন শব্দ দূষন, চারিদিকে সবুজের সমারোহ। আমার অবসর সময়ে সখ হচ্ছে টিভি দেখা, গান শুনা। আমি ভবিষৎতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই এবং আমার বাবা ও মাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করব। আমি নারী জীবনে ইংরেজী কোর্স করছি। এখন আমি ইংরেজী কোর্স শেষ করে কম্পিউটার শিখছি। নারী জীবনে আসার পর আমি অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পেরেছি।"


সুরমা আক্তার






"আমার নাম সুরমা আক্তার। আমি ল
ক্ষীপুর জেলার রাম গতি থানার ভান্ডার গ্রামে ১৯৮৬ সালের ১লা জুলা জন্ম গ্রহণ করেছি। আমি নোয়াখালী বিভাগের বাসিন্দা আমি ছোট বেলা গ্রামে কাটিয়েছি । বর্তমানে ঢাকা বাস করছি। মা আর ছয় বোন ও এক ভাইকে নিয়ে আমাদের সংসার। আমার মা একজন গৃহিনী। আমি ২০০২ সালে আলেকজান্ডার পাইলট হাই স্কুল থেকে এস.এস.সি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়েছি এবং ২০০৫ সালে আলেকজান্ডার সরকারী কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পরিক্ষায় উত্তীর্ন হয়েছি। বর্তমানে আমি বি.এ প্রথম বর্ষে পড়ছি । আমার সখ বই পড়া। আমি গল্পের বই পড়তে অনেক পছন্দ করি। বই অবসর মুহুর্তে আমাকে অনেক আনন্দ দেয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমার প্রিয় কবি । লেখাপড়া শেষে আমি একটা ভাল চাকুরী করতে চাইনারী জীবনে ইংলিশ-১ থেকে উত্তীর্ন হয়ে ইংলিশ-২ তে ভর্তি হয়েছি। নারী জীবন সংস্থা মেয়েদের জন্য একটা ভাল সংস্থা।"

ব্লগার প্রোফাইল- (শিক্ষার্থী)

Title of this post: Bloggers profile (students)

হাছিনা আকতার







"আমার নাম হাছিনা আকতার । আমার জন্ম স্থান নোয়াখালী এবং আমার জীবনে উনিশটি বছর নোয়াখালীতেই কাটাই। এখন ঢাকা থাকি। আমার বাবার নাম, (মৃত) ছিদ্দিকুর বহমান, তিনি সরকারী চাকুরী করতেন তিনি ২০০১ সালে মৃত্যু বরন করেন। আমার মায়ের নাম ছালমা আক্তার্‌, তিনি গৃহিনি। আমরা তিন ভাই দুই বোন।

আমি দাখিল” পাশ করি ২০০১ সালে বেগম” খালেদা জিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবং আলিম পাশ করি ২০০৩ সালে সোনাইমুড়ী হামিদীয়া কামিল মাদ্রাসার এর পাশাপাশি হ্যানিম্যান হোমিও প্যাথি মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতাল কুমিল্লা ডিপ্লোমা ইন হোমিও প্যাথিক মেডিসিন এন্ড সার্জরী র্কোসের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী। আমার বেড়াতে ভালো লাগে। আমি সেলাই কাজ করতে পারি, সেলাই করতে আমার ভালোলাগে। আমি সিনেমা দেখতে পছন্দ করি আর আমার পছন্দের ছবির নাম মাটির ময়না। আমি একজন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই এবং পাশাপাশি হতে চাই কম্পিউটার অপারেটর নিজেকে ভালো ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই এবং সুন্দর ভাবে গড়তে চাই।

নারী জীবন মহিলাদের জন্য সুন্দর একটা প্রতিষ্ঠান। আমি প্রথমে ইংলিশ- ক্লাসে ভর্তি হই এবং কোর্স কমপ্লিট করে ইংলিশ-ক্লাসে পড়ছি এবং কম্পিউটার শিখছি। প্রথমে আমি ব্রগ সম্পর্কে কিছুই জানতাম না কিন্তু নারী জীবনে এসে আমি ব্লগ সম্পর্কে জেনেছি এবং ব্লগে লিখার চেষ্টা করছি।"


আফরোজা আখতার








"আমার নাম আফরোজা আখতার। ১৯৮৭ সালে ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানার মহেশ পুর গ্রামে আমি জন্মগ্রহণ করেছি। মা-বাবা ও চার ভাই বোন নিয়ে আমাদের সংসার। আমার বড়ভাই তিনি একজন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক বড় বোন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা । মেজো ভাই এক মাওলানা এবং সেজোভাই পুলিশ সার্জন।

আমি একজন ছাত্রী । আমি বিবাহিত। আমার স্বামী একজন ইঞ্জিনিয়ার। ২০০২ সালে আমি আজিম র্গালস্‌ স্কুল” থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস,এস,সি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছি এবং ২০০৪ সালে আখতার সুলতানা মহিলা কলেজ” থেকে প্রথম বিভাগে উর্ত্তীণ হয়ে বর্তমানে স্বিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ এ বি,এস, এস এ পড়ছি। তার পাশাপাশি নারী জীবনে ইংলিশ ক্লাস করছি। আমার প্রিয় সখ হল বই পড়া। শরৎচন্দ্র ও ইমদাদুল হক মিলনের বই পড়তে আমার খুব ভাল লাগে। লেখা পড়া শেষে আমি একজন আদর্শ শিক্ষিকা হতে চাই । আমি ইংলিশ ভাষায় দক্ষতা অর্জন করার জন্য নারী জীবন” প্রজেক্টে এসেছি কারন এখানে খুব ভাল ভাবে ইংলিশ শিক্ষা দেওয়া হয় পাশাপাশি আমি ব্লগে ও অংশ গ্রহণ করছি যাতে আমি আমাদের নিজেদের সংস্কৃতি অন্যান্য দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারি।"

Monday, December 10, 2007

একজন নির্যাতিত নারীর জীবনের গল্প

Title of this post : "A Story of a Tortured Girl" By Mayanur Akter Maya
Content of this post: It is a story of a girl who was being tortured by her husband. Her name is Mitali. Her parents influenced her to marry only for money. So her husband treats her as a servant, not as a wife. She is so helpless that she doesn’t have any shelter in her parent’s house.


আমাদের সমাজ চায়, মেয়েরা তাদের সব আনন্দ ত্যাগ করে খুশি থাকবে সরাইকে নিয়েআর তা না করলে বলা হয় সে ভাল মেয়ে নাঅন্য দিকে হাসি মুখে মেয়েরা সব কাজ করে গেলেও সে তার কাজের স্বীকৃতি চায়যখন নিত্য দিনের ছোট খাটো কোন ত্যাগের স্বীকৃতি সে পায় না, তখনি শুরু হয় হতাশাচাইলেও এই হতাশা খুব বেশি দিন চেপে রাখা যায় নাতা কোন না কোন দিন বিস্ফোরিত হবেইএতে একদিকে যেমন সম্পর্কের ফাটল শুরু হয়, অন্য দিকে ধুকে ধুকে কষ্ট পায় মেয়ে নিজেই

আমি এমন একজন মেয়ের কথা বলছিমিতালী আমার ছোটবেলার বান্ধবীও দেখতে খুব সুন্দরীও যখন ৯ম শ্রেনীতে পড়ে তখন রানা নামের ধর্নাঢ্য এক ব্যক্তির সাথে তার বিয়ে হয়সে মিতালীর চেয়ে ১৭ বৎসরের বড়বিয়ে কি সে কথাটি বুঝে উঠার আগেই বাবা, আর বড় ভাই দুজন মিলে তাকে বিয়ে দিয়ে দেয় রানার সাথে

ঘরই যদি নিরাপদ না হয় তবে কোথায় যাবে নারী? ঘরের বাইরে এক পা, একটি দিন মানেই অসংখ্য অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় নারীকেযখনি সে বিয়ে করবেনা বলে আপত্তি করল তখনই শুরু হল মিতালীর উপর বাবা ভাইয়ের অমানবিক নির্যাতনতার ঘর থেকে বের হওয়া, স্কুলে যাওয়া সব বন্ধ করে দেয়া হলএমনকি স্কুলের সব বান্ধবীদের সাথেও দেখা করা বন্ধ করে দিল মানুষ কোন সমস্যার মুখোমুখি হলে তার একমাত্র আশ্রয় বা স্থান হয় ঘর, তার পরিবার-- বাবা, মা, ভাই, বোন, আত্নীয়-স্বজনআর সেখানেই যদি হয় নির্যাতনের কেন্দ্র তখন নারীরা কোথায় যাবে বলতে পারেন?

মিতালীকে এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে দেয়া হলশুরু হল মিতালীর নতুন জীবননির্যাতনের এক ধাপ পার হয়ে অন্য ধাপ শুরু হল! ভাই ও বাবা দুজন মিলে সেই রানার কাছ থেকে মিতালীর বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেরানা কম বয়সি ও দেখতে সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করতে পেরেছে, সে জন্য সে সব কিছু করতে রাজিকিন্তু বিয়ের পর শুরু হল মিতালীর উপর অমানবিক নির্যাতনমিতালীকে কখনও তার স্ত্রী মনে করতেন নাসব সময় তাকে মনে করা হত কেনা দাসী

আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে যেভাবে নারীদের ক্রীত দাসী হিসেবে ব্যবহার করা হতমিতালীর সাথেও রানা সে রকম আচরণই করতআর সব সময় বলত, আমি তোকে তোর ভাই আর বাবার কাছ থেকে টাকা দিয়ে কিনেছিআমি তো আর তোকে বউ করে আমার ঘরে আনিনি, যে তোর সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবেতোকে সব সময় আমার কথা মত চলতে হবেআমি যা করতে বলি তাই করতে হবে মিতালী সব কষ্ট মুখ বন্ধ করে সহ্য করেতাছাড়া কি বা করার আছে তারসে কাকে বলবে তার এই কষ্টের কথা? বাবাকে? ভাইকে? না, তারাই তো তার অসল শত্রু সে ভাবে আমি কি করব? বাবার বাড়িতে যাবে তারাই তো তার সর্বনাশ করেছেভাবতে ভাবতে ভাবনার রাজ্যে ডুবে যায় ,কিন্তু কোন কুল সে খুঁজে পায় না

কলি থেকে ফুল হয়, আর সে ফুল থেকে মালাকিন্তু ফুল ফোটার আগেই যদি সেই কলি কোন বিষাক্ত কোন ক্রীট দ্বারা আক্রান্ত হয়, তাহলে সেই কলি থেকে কিভাবে সুস্থ ফুলের আশা করা যায়তার স্বামী সব সময় তাকে অবিশ্বাস করতসে সব সময় বলে মেয়েদের প্রশয় দিতে নেইমেয়েরা শুধূই মেয়েতারা পুরুষের হুকুম মেনে চলবে, সংসার গোছাবে শশুর শাশুরী স্বামী সন্তান দেখাশুনা করবেতাদের আবার চাওয়া পাওয়ার কি আছে? কষ্ট সহ্য করতে না পেরে মিতালী একদিন সিদ্ধান্ত নিল আত্মহত্যা করবেএত বড় পৃথীবিতে তার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার একটও জায়গা নেই কোথাও

মরিতে চাহিনা এই সুন্দর ভুবনে!মিতালীর অনেক ইচ্ছা হয় বেঁচে থাকতে এই পৃথিবীতেকিন্তু যখনি মনে অসংখ্য প্রশ্ন জাগে কেন বেঁচে থাকব? কিসের আশায় বেঁচে থাকব? কার জন্য বেঁচে থাকব? সে কোন উত্তর খুঁজে পায় না, শুধু তার চোখের সামনে ভেসে উঠে তার মার সেই অসহায় মুখখানা! মনে পরে মায়ের কথাযখনি দেখত মা নিজের জন্য কিছুই করছে নাছেলে পছন্দ করে-- তাই বাড়িতে ভাল রান্না হচ্ছে , মেয়ে শুনতে ভালভাসে-- তাই এই গানটা প্রায়ই শোনা হয়স্বামী ঘুরতে পছন্দ করেন-- তাই বেড়ানো হয় অনেককিন্তু শুধুই নিজের ভালো লাগার প্রাধান্য দেয়নিমাকে মাঝে মাঝে প্রশ্ন করা হলে মা বলতেন, মেয়েদের অবার পছন্দ! সবাইকে খুশি করতে পারলেই খুশি তারা সবার খুশিতেই নিজের খুশি !এসব কথা ভাবতে ভাবতে দুচোখের পাতা এক করতে পারেনা মিতালী

একদিন সকালে মিতালী পাশের দোকান থেকে ঘুমের ঔষদ কিনে আনে, আত্মহত্যা করার জন্যযখন রাত গড়িয়ে সন্ধ্যা হল, সবাই যখন ঘুমে বিভোর, তখন মিতালী ঘুমের ঔষধ খেয়ে শুয়ে পরেহঠাৎ কিভাবে যেন রানা বুঝতে পারল মিতালী কিছু একটা ঘটিয়েছেমিতালী মারা যাচ্ছে সেই জন্য না -- নিজেকে বাঁচানোর জন্য মিতালীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলআর তার বাবা, ভাইয়ের কাছ থেকে লিখিত ডকুমেন্ট রাখল-- যদি কোন দিন কোন কারণে মিতালী মারা যায় এর জন্য রানা কোন রকম দায়ী থাকবেনা!

রানা এতদিন মিতালীকে মানসিক নির্যাতন করতএখন সে শারীরিক নির্যাতন করতে শুরু করলঘরের বাহিরে বের হওয়া বন্ধ করে দিলরানা সিদ্ধান্ত নিল মিতালীকে আর এভাবে রাখবেনা, সে সন্তানের বাবা হতে চায়আর মিতালীর বয়স তখন ১৫ বছর চলছেএই পুরুষ শাসিত সমাজে নারীদের কোন মূল্যই নেইসেখানে সন্তান নেওয়া , না নেওয়ার সব সিদ্ধান্ত পুরুষেরইনারীরা হচ্ছে তাদের খেলার পুতুল; যেভাবে নাচাবে, সেভাবেই নাচতে হবে
মিতালী সন্তানের মা হতে চলেছেএত যন্ত্রনার নির্যাতনের মাঝেও কি মিতালী পারবে একজন সুস্থ সন্তানের মা হতে? নানা প্রতিকুলতা পার হয়ে মিতালী মা হলেনতার যমজ সন্তান হলসে তাদের নাম রাখল সবুজ ও সাথী

এখন রানা মিতালীর উপর নির্যাতন করে অভিনব পদ্ধতিতেমিতালী মা হয়ে গেছে এখন সে আবার বিয়ে করবেমিতালী দুসন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সব কষ্ট সহ্য করে নিচ্ছেতাহলে মেয়েরা কি পাচ্ছে এই পৃথিবীতে এসে? প্রতিটি পদে পদে নির্যাতিত হচ্ছে নারীরা

দেখা যায়, পরকীয়া আর যৌতুকের জন্য স্বামী ও তার আপনজনদের সহযোগিতায় স্ত্রীকে হত্যা করা হয়কলঙ্কিত হয়ে সংসার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উপায় না পেয়ে মিতালীর মত অনেক মেয়েরাই ধুকে ধুকে মরে, কেউ বা আবার লাশ হয়ে বের হয়তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হলে কতগুলো জীবন ধ্বংসের পথে চলে যায়যেখানে অভিভাবকরা নিজেদের সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে সন্তানদের সঠিক পথে রাখার জন্য আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, সেখানে এই আভিভাবক অনন্দ-ফুর্তি করার জন্য সন্তানদের দুনিয়াতে এনে তাদেরকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে

মিতালীর মত কত নারীরা আমাদের দেশে ঘরে বাহিরে প্রকাশ্যে গোপনে নির্যাতিত হচ্ছেএই নির্যাতন থেকে নারীদেরকে রক্ষা করতে হলে আমাদের সবার মানসিকতার পর্রিবতন করতে হবেমেয়েদেরকে মানুষ ভাবতে হবেকারণ মেয়েরাও মানুষ