Title of this post: Tale of an incomplete life by Salma Akter.
রবিউল হোসেন নামের একটি ছেলে, সবাই তাকে রবু বলে জানত। বয়স ২৮ হবে। জন্মগত ভাবে তারা ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা। বাড়ি মুগদা পাড়া। তারা দুই ভাই, তিন বোন। সংসারের বড় ছেলে সে। সংসারে দারিদ্রতা সবসময় বিরাজ করত। তাই লেখাপড়া শেখা হয় নাই। কোন কাজও শিখে নাই। অবশ্য এজন্য তার পরিবারই দায়ী। লেখাপড়া করেনা, কাজকর্ম করেনা এমন ছেলেতো আর ভাল হতে পারেনা। কথায় বলে না, অলস মতিষ্ক শয়তানের কারখানা। তার বেলাতেও এমনটি হয়েছে। অসৎ ছেলেদের সাথে মিশে সেও একদিন অন্ধকার পথে পা বাড়ায়। প্রথমে গাঁজা খেয়ে শুরু হয় তার পথচলা। তার পর ধীরে ধীরে মরণ নেশায় জড়িয়ে যায়। শুরু করে শরীরের বিভিন্ন অংশে ইনজেকশন নেওয়া। সে টি.টি.জেসিক,ফ্যানার গ্যান, এভিল, ইজিয়াম ইত্যাদি ইনজাকশন নিত। হাতে পায়ে ক্রমাগত ইনজাকশন নিতে নিতে হাত পা ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেছে। জীবনীশক্তি ক্রমশ নিঃশেষ হয়ে গেছে। নেশা করার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হতো তা যোগার করার জন্য সে প্রথমে রিক্সা চালাত। পরবর্তী সময়ে যখন তার দেহের শক্তি শেষ হয়ে গেছে তখন সে চুরি করতে শুরু করে।
প্রথম প্রথম সে নিজের ঘরে চুরি করত, পরবর্তী সময়ে সে মানুষের বাড়িতে চুরি করতে শুরু করে। চুরি করতে গিয়ে ধরা পরে প্রচুর মার খেতে হতো তাকে, আবার অনেক সময় পুলিশের কাছেও অনেক বার ধরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু জেলখানাতেও বেশিদিন আটকে রাখত না তাকে। কারন তার জামিনের জন্য কেউ কখনও টাকা নিয়ে যেত না। এমন কি কেউ দেখতেও যেত না। পুলিশেরাও তাকে বেশি দিন আটকে রাখত না, কিছুদিন পর এমনিতেই ছেড়ে দিত। একদিন সে তার বড় চাচার বাড়িতে যায়, তখন সন্ধ্যা। তার চাচাত বোন ওজু করার জন্য হাত থেকে ঘড়ি খুলে রাখে। সে সময় ঘড়ে রবু ছাড়া আর কেউ ছিলনা, নামায শেষে ঘড়ি পরতে যেয়ে, সে আর খুঁজে পায়না। তার বোনটি ছিল একটু অন্য রকম, সে জানত যে, সবাই তাকে খুব ভালবাসে, এমনকি তার চাচাত ভাইরাও। তাই সে কখনও ভাবতে পারেনি যে, তার ঘড়িটি রবুভাই চুরি করবে। সেদিন ঘড়ি চুরির সাথে সাথে সে তার বিশ্বাসটাও চুরি করেছিল।
ঘড়ি চুরির জন্য তাকে অনেক মার খেতে হয়েছিল, তারপরও সে ঘড়িটি ফেরত দেয়নি। এমন অনেক ঘটনাই তার জীবনের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। কখনও কারও বাড়ি থেকে কাপড়-চোপড় নিয়ে যেত, কখনও গ্যাসের চুলা খুলে নিয়ে যেত, কখনও টিউবওয়েলের হ্যান্ডেল খুলে নিয়ে যেত, আবার কখনও করত জুতা চুরি। আর ধরা পড়লে বেদম মার খেত। এভাবেই চলছিল তার জীবন।
২০০৭ সালের প্রথম দিকে তার ছোট ভাইয়ের বিয়ে হয়েছিল। সেই বিয়েতে তাকে শেষ দেখা গিয়েছিল। তারপর থেকে তার আর কোন সন্ধান নেই। কেউ বলতে পারেনা যে, সে বেঁচে আছে না মরে গেছে। তার পরিবারের কেউ তার খোঁজ নেয়ার চেষ্টাও করে নাই। সবাই ভেবেছে সে মারা গেছে, তা না হলে এত দিনে সে ফিরে আসত। কে জানে হয়তবা কারও বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে ধরা পরে মার খেয়ে মরে গিয়েছে। তা না হলে হয়তো জেলখানাতে পঁচে মরছে। কেউ তার খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজনও মনে করেনা। কারণ তার মতো রবুরা সমাজে উপেক্ষিত। আমাদের সমাজে তাদের কোন স্থান নেই। কারন তারা দেশ ও জাতির কোন উপকারে আসেনা। তারা নিজে ধ্বংস হয় এবং সমাজকে ধ্বংস করে। কিন্তু রবুরা কেন এ সমাজে উপেক্ষিত হবে, কেন তারা সমাজের বোঝা হবে? তার পরিবার কি পারতনা তাকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে? তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাকে সুন্দর সাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে?
3 comments:
It is very nice story .It is true. I expect more writings from you.
বাংলা চটি --- হারিয়ে যান চটির রাজ্য
বাংলা চটি --- হারিয়ে যান চটির রাজ্য
Post a Comment