সারা বিশ্বের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের সংগ্রামী এতিহ্য ও অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের এক স্মরনীয় ও আন্তর্জাতিক এবং সংহতির উদযাপনের এক অনন্য দিন পহেলা মে , মহান মে দিবস আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস, এই দিবসটি শ্রেনী বৈষম্যের অবসানের লক্ষ্যে সংকল্পবদ্ধ ও সংগঠিত হয়। ১ মে শুধু একটি দিবসই নয়, একটি ইতিহাস, একটি ঘটনা, পথপ্রর্দশক এবং দিকর্নিদেশক । ১৮৮৬ সালের ১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর শহরে ৮ ঘন্টা শ্রমদিবস, মজুরি বৃদ্ধিও, তথা ন্যায্য মজুরি, কাজের উন্নত পরিবেশ ইত্যাদির দাবিতে ১লা মে একটি শ্রমিক সংগঠন শিল্প ধর্মঘটের ডাক দেয়। এই ধর্মঘটে প্রায় ৩লাখ শ্রমিক যোগ দেয়। বর্বর পন্থায় সে ধর্মঘট দমন করা হয়। শ্রমিকদের এক প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশ গুলি চালায় এর ফল স্বরূপ পরের দিন সে মার্কেটে শ্রমিকরা প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হলে কারখানার মালিকরা সেখানে বোমা বিস্ফোরন ঘটায়, ফলে এই সর্বাত্নক আন্দোলনে আলবার্ট পারনস, জর্জ এঞ্জেল স্পাইজ এডলফ ফীশার প্রমুখ শ্রমিক ও শ্রমিক নেতা প্রান উৎসর্গ করেছিলেন। ধর্মঘট সংঘটিত করার দায়ে আগষ্ট স্পাইস নামে এক শ্রমিক নেতাকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। উক্ত সংঘটিত ঘটনা ও পরবর্তী ঘটনাবলী থেকে এই দিবসের উৎপত্তি।
শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলনের উক্ত গৌরবময় অধ্যায়ের স্বরণীয় ও অনুপ্রেরনার উৎস হিসাবে ইতিহাসের পাতায় অক্ষয় করে রাখার জন্য ১৮৯০সাল হতে প্রতি বছর মে দিবস পালিত হয়ে আসছে বিশ্বব্যাপী। প্রতি বছরই ‘মে দিবস’ বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের নুতন করে সকল ধরনের বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করে শপথ নেয়। পহেলা মে সেই আন্দোলনের কথাই আমাদের স্বরণ করিয়ে দেয়। ১৮৯০ সালের ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যালিষ্ঠ কংগ্রেসে ১ মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষিত হয় এবং তখন থেকে অনেক দেশে দিনটি শ্রমিক শ্রেনী কতৃক উদযাপিত হয়ে আসছে। রাশিয়ায় এবং পরবর্তীকালে আরো কয়েকটি দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সংঘটিত হবার পর মে দিবস এক বিশেষ তাৎপর্য অর্জন করে। জাতিসংঘে একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক শাখা হিসাবে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা(অরগানাইজেশন বা আই .ত্রল.ও) প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার সমূহ স্বীকৃতি লাভ করে এবং সকল দেশে শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের তা মেনে চলার আহবান জানায় এবং এভাবে শ্রমিক ও মালিকদের অধিকার সংরক্ষণ করে। বাংলাদেশ আই.ত্রল.ও কর্তৃক প্রণীত নীতিমালার স্বাক্ষরকারী একটি দেশ।
দেশে অতীতকাল থেকে এখনও পর্যন্ত শ্রমিক নিযার্তন চলছে। স্থান, কাল,পাত্র ভেদে এই নিযার্তন আমরা দেখি তা হলো শ্রমিককে গালাগাল করা, মানসিক টেনশনে রাখা, হুমকি দেয়া কোনো কোনো পযায়ে শারারিক নির্যাতন করতেও দেখা যায়। গার্মেন্টসসহ অনেক ক্ষেত্রে ৮ ঘন্টার পরিবর্তে বিনা ওভারটাইমে ১২-১৪ ঘন্টা কাজ করানো হয় ১২ ঘন্টা কাজ করিয়ে বেতন দেয় ৮ঘন্টার। শ্রমিক আইনে ২৪ ঘন্টার মধ্যে১২ ঘন্টা কাজ করার কোন বিধান নেই। কোন কোন শিল্প-কারখানার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাজ করায়, এমনকি মে দিবসের প্রচলিত ছুটি থেকেও তারা বঞ্চিত।
No comments:
Post a Comment