Friday, May 2, 2008

বিশ্ব এ্যাজমা দিবস

Title of this post: International Asthma Day by Aysha khatun


এ্যাজমা বা হাপাঁনি একটি অতি পরিচিত রোগ
পরিবারের কোন সদস্য শ্বাসকষ্টে ভুগছে না, এমনটি এদেশে বিরলএ্যাজমা হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী এবং মারাত্নক একটি ফুসফুসের রোগ, যেখানে বায়ুনালীতে প্রদাহ ও ফুলে যাওয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস কষ্টকর হয়ে পড়েহাপাঁনি রোগীদের শ্বাসনালী যাদের হাপাঁনি নেই তাদের শ্বাসনালীর তুলনায় অনেক বেশী স্পর্শকাতর অর্থাৎ সামান্য কারণেই তাদের শ্বাসনালী সংকুচিত হয়ে পড়েফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, বুকের ভিতর সাঁ-সাঁ শব্দ হয়সেই সঙ্গে ঘন ঘন কাশি হয় এবং বুকে আটঁসাঁট চাপের কারণে বারবার এ উপসর্গ গুলো দেখা দিলে আমরা তাকে হাপাঁনি বা এ্যাজমা বলি

আবহাওয়া এবং ঋতু পরিবর্তনের কারণে এ্যাজমা প্রকোপ বাড়েআমাদের দেশে সবচেয়ে বেশী উপসর্গ দেখা যায় শীতের শুরুতে বা শেষে এবং অতিরিক্ত গরমে, আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে, ঠান্ডা বাতাস বইলে, মেঘলা আকাশে, হঠাৎ বৃষ্টি নামলে, কুয়াশা পড়লে, জোয়ার-ভাটার সঙ্গে কিংবা আমাবস্যা-পূর্ণিমায় কারো কারো হাপাঁনি বেড়ে যায়এছাড়া গাড়ি, কল-কারখানা বা চুলার ধোঁয়া, সিগারেটের ধোঁয়া এবং গন্ধঁ, রাস্তা-ঘাটের ধূলাবালি এবং তীব্র গন্ধে হাপাঁনি বেড়ে যেতে পারেমানুসিক চাপের কারণেও এ্যাজমার প্রকোপ বাড়েআবেগ, উৎকণ্ঠা, ভয় থেকে এবং বেশি কাদঁলে বা হাসলে এ্যাজমা রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়

উন্নত চিকিৎসা সত্ত্বেও এ্যাজমা রোগের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছেশুধু আমেরিকাতেই ১৯৮০ হতে ১৯৮৭ এর মধ্যে এ্যাজমা রোগীর সংখ্যা শতকরা ২৯ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছেপরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রায় ২০ মিলিয়ন আমেরিকান এ্যাজমাতে ভুগছেনএদের মধ্যে ১০ মিলিয়নই ভুগছেন এলার্জিজনিত এ্যাজমায়এর মধ্যে তিন মিলিয়ন শিশু আছেবর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি ১০০ জনে ৫ জন এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, গত কয়েক বছরে ইংল্যান্ড ও অষ্টোলিয়ায় এই রোগ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছেবর্তমানে বিশ্বে শতকরা প্রায় ৭.২ ভাগ লোক এই রোগে ভুগছেসারা বিশ্বে বর্তমানে ১৩০ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত এবং পশ্চিমা বিশ্বে প্রতি এক লাখে ১ হতে ৫ জন এই রোগে মারা যাচ্ছেফলে বছরে প্রায় ৬০ হাজার লোক মারা যায়, যার মধ্যে অধিকাংশই থাকে শিশুবাংলাদেশের প্রায় ৮০-৯০ লাখ রোগী এ রোগে ভোগে থাকেতার মধ্যে অর্ধ্যেকেরই বেশি শিশুশিশুদের আক্রান্তেক্ষেত্রে এ্যাজমা একটি অন্যতম রোগএদেশে এ্যাজমা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বড়দের চেয়ে শিশুদের সংখ্যা বেশী জরিপে আরো দেখা যায় যে, এ্যাজমা আক্রান্ত সদস্যদের পরিবারে এ্যালার্জির কারণে এ্যাজমা, ত্বকের রোগ, নাকের এবং চোখের রোগের প্রকোপ বেশী পূর্ব জরিপের চেয়ে বর্তমান জরিপে দেখা যায় যে, স্বল্প আয়ের লোকদের মধ্যে এই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করেএ জরিপে আরও দেখা যায় যে, বড় বড় শহর অঞ্চলের তুলনায় ছোট শহর ও গ্রাম অঞ্চলে এই রোগের আক্রান্তের সংখ্যা বেশী

জনগণকে এই রোগের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ও সচেতন করে তোলার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশের ১৯৯৮ সাল হতে ২ মে বিশ্ব এ্যাজমা দিবস পালিত হয়ে আসছেজনগণকে -শিক্ষা, সতর্কতা , চিকিৎসা এ্যাজমার সঠিক ব্যাবস্থা অর্থাৎ রোগী ও রোগীর আত্নী-স্বজনকে এ্যাজমার কারণ এবং নিয়ন্ত্রণ সর্ম্পকে শিক্ষিত হতে হবেগর্ভাবস্থায় আপেল খেলে হবু সন্তানের এ্যাজমা ও এলার্জির ঝুকিঁ অভাবনীয় মাত্রায় কমেআইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া থেকে বিরত থাকলে, শীতকালে সামান্য গরম পানি পান করলে; অজু ও গোছল গরম পানি দিয়ে করলে , রাস্তাঘাটে ধূলোবালি; ধোঁয়া এড়িয়ে চললে ও ডাক্তারের পরামর্শমত কাজ করলে এ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভবপ্রকৃত পক্ষে এ্যাজমা কেবারে নিরাময় করা সম্ভব নয়, নিয়ম মাফিকভাবে এ্যাজমাকে সম্পূর্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব

No comments: