Thursday, September 11, 2008

গ্রামের নারী ও শহরের নারী

Title of this post: Women from rural and urban area by Jainub Khanam

নারী-গ্রামের হোক
, শহরের হোক, আধুনিক কিংবা সাধারন হোক, চালাক হোক কিংবা আনাড়ী- তার পরিচয় কিন্তু একটাই, সে নারীকিন্তু আমি যা নিয়ে ভাবছি তা হলো - নারীতে নারীতে কত তফাৎ? আমার জন্ম গ্রামেতাই খুব কাছ থেকে গ্রামের মেয়েদের জীবন যাত্রা আমি দেখেছিবিয়ের পরে আমার স্বামী আমাকে ঢাকা নিয়ে আসে। আমি এখন ঢাকা শহরে থাকিতাই শহরের মেয়েদের জীবন যাত্রা ও আমি কাছ থেকে দেখেছিশহর আর গ্রামের নারীদের জীবনে কত পার্থক্য ? গ্রামে বেশির ভাগ নারী লেখপড়ায় খুব একটা জোর দেয় নাকোন রকম এস.এস.সি পাশ করতে পারলেই অনেক কিছুকয়েক জন ব্যতীক্রম অবশ্যই আছেআমি আমাদে এলাকার কথাই বলছি৯ম বা ১০ম শ্রেণীতে পড়লেই বাবা মায়েরা বিয়ের কথা ভাবেনএরপর কোন একটা পাত্র বিদেশী হলে ভাল হয়বয়স বাবার বয়সের হোক, সমস্যা নেই, প্রচুর টাকা আছেলেখা পড়া কম, সমস্যা নেই, মোহরানা দেবে ৫লাখআমার মনে হয়, বাবা-মার জ্ঞানহীন ধ্যান ধারণার জন্যই মেয়েদের এই অবস্থামায়েরা ছোটবেলা থেকেই মেয়ের মনে একটা ধারণা তৈরী করে দেন যে, তোমরা নারীমক্তবে কোরান শরীফ শেষ করবে, বাংলা শিখে চিঠি পত্র লিখতে পারলেই হবে, তার পর বিয়ে দেব, বাচ্চা পালন, সংসার গুছানো ব্যাস তোমার দায়িত্ব শেষ

অথচ সংসার সুন্দর করে গুছানোর জন্য
, সংসার কে সুখী করার জন্য, স্বামীর সঠিক মূল্যায়ন, বাচ্চার সঠিক যত্ন, পরিবারের অন্যদের সাথে ভালব্যবহার, সবার প্রতি দায়িত্ববোধ, সচেতনতা এসব গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলোর জন্য উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক অর্থাৎ ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে হবে, সব কাজে পারর্দশী হতে হবেগ্রামের মায়েরা এসব কখনোই ভাবেন নাএতো গেলো অবিবাহিতা মেয়েদের কথা, এবার বউদের কথায় আসিতারাতো স্বামীর বাড়ীতে এসে রাজরানীসংসারের চাবী তার শাড়ীর আঁচলে, স্বামীর টাকা তার ড্রয়ারেইচ্ছে মত, খেয়াল মত সংসারে কর্তৃত্ব খাটায় তারাআমাদের বাড়ির বউরা এত সুখিসকালে উঠে নাস্তা খেয়ে উঠানে বসে সবাই আড্ডা দেয়১০ টায় বাচ্চাদের স্কুলে পাঠায়১১টায় বা ১২ টায় রান্না করে হিটার বা সিলিন্ডার গ্যাসে দুপুরে খেয়ে ঘুম দেয়, বিকালে নাস্তা খেয়ে আবার আড্ডা দেয়সন্ধ্যায় ঘরে যায়বাচ্চাদের পড়ালে পড়ায় না পড়ালে নাই৮টা বাজলে টিভি ছাড়ে ১০/১১ টা পর্যন্ত দেখা হয়এরপর ঘুমবউদের চিন্তা বা কোন টেনসন নেই বাজারেরস্বামীরা সবকিছু এনে হাজির করেতাদের গল্প, হাসি তামাশায় কেটে যায়ঘড়ির দিকে তাকানোর প্রয়োজন যেন নেইঅথচ শহরের নারীর জীবন গ্রামের নারীর জীবন থেকে সম্পূর্ন ভিন্নশহরের নারীরা একরকম সংগ্রামী জীবন কাটায়তাদের সময় চলে ঘড়ির সাথে পাল্লা দিয়েবাচ্চাদে স্কুলে নিয়ে যাওয়া, আনা, ঘর গুছানো, বাজার করা, রান্না করা, বাচ্চাকে কোচিং এ নেওয়া, গান, ড্রয়িং শিখাতে নেওয়া, সময় মত ঘুম পাড়ানো, রাত্রে রান্না সেরে আবার বাচ্চাকে পড়ানো, নিজের পড়া, ব্যক্তিগত কাজ, সবই তারা করছে দক্ষতার সাথেআমি দেখেছি আমার চতুর্পাশের বেশির ভাগ মেয়ে অনেক পরিশ্রমীঅবিবাহিতা মেয়েরা ও অলস সময় কাটায় নাতারা উচ্চ শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার, গ্রাফিক্স ডিজাইন, সেলাই, অত্যাধুনিক রান্না সহ আরো বিভিন্ন কোর্স শিখে নিজেকে দক্ষ, কর্মঠ ও সাবলম্বী করছেসারাদিন তারা কাজের মধ্যেই সময় কাটায়অবশ্য গ্রামে সুযোগ সুবিধা ও কমচাইলেই তারা কম্পিউটারে বসতে পারে নাইন্টারনেটে বিচরন করতে পারে না

2 comments:

কাওসার মাহমুদ said...

যুক্তি সংগত কথা। তবে গ্রামের মহিলাদের সচেতনা বাড়াইতে হবে। তাদের মধ্যে সচেতনা লেভেল বাড়াইতে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সমস্যা ও সেগুলোর সমাধানের ব্যাপারে আলোচনা করা যেতে পারে।
তাছাড়া সাধারন স্বাস্থ্য বিধি সম্পকেও ধারনাও দেওয়া উচিত। যাতে কোন রকম কুসংস্কারে বিশ্বাস না করে ।
কাওছার মাহমুদ,
জার্মানী হইতে

তাসলিমা আক্তার said...

কাউসার,

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আমিও আপনার সাথে একমত।