Title of this post: A tale of a woman by Ayesha Sanjida Synthia.
পারভিন হচ্ছে আমাদের মতই একজন অতি সাধারণ মেয়ে। কৃষক পরিবারের এই অতি সাধারণ মেয়েটি তার ভাই-বোনদের মধ্যে বড়। বাবা-মা আর ভাই বোনদের নিয়ে তার পরিবার। শহরে পারভিনের জন্ম হলেও সে গ্রামেই বড় হয়েছে।
পারভিন পড়ালেখায় ভাল ছিল। গ্রামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সে পড়ত। কিন্তু গ্রাম বাংলায় আজও বাল্য বিবাহের একটি প্রথা প্রচলিত আছে। মেয়ে বড় হয়েছে ওকে তাড়াতাড়ি বিবাহ না দিলে পরে আর বিবাহ হবে না। তাই ৫ম শ্রেণীতে অধ্যায়ন অবস্থায় পারভিনের বাবা পারভিনকে বিবাহ দেয়।
প্রতিটি মেয়েরই স্বপ্ন থাকে ভাল স্বামী সুন্দর সংসার। কিন্তু পারভিনের সেই স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই রয়ে গেল। বিবাহের কিছুদিন পর স্বামীর অত্যাচার শুরু হয়ে যায়। পারভিনের মতে তার স্বামী বউ মারায় পৈশাচিক আনন্দ পেত। সে কারণে-অকারণে শুধু মারত। ওকে খেতে দিত, কাপড় দিত না।
বিবাহের কয়েক মাস পর পারভিন গর্ভবতী হল। গর্ভকালীণ অবস্থায় স্বামীর অত্যাচারের হাত থেকে মেয়েকে ও নবজাতকটিকে রক্ষা করতে, পারভিনের বাবা পারভিনকে নিতে আসে। মেয়ের বাড়িতে তার কোনো আদর-সমাদোর কিছুই হল না। তিনি কষ্ট ভরা মনে মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন।
অবশেষে পারভিনের আধাঁর ঘর আলোকিত করে ফুটফুটে সুন্দর একটি পুত্র সন্তান এল। শিশু জন্মের খবরটি পেয়েও পারভিনের স্বামী তার সন্তান ও স্ত্রীকে একটিবারের জন্যে দেখতে আসেনি। বরং, সে তার সন্তানকে অস্বীকার করে।
বাঙালি নারী শত অত্যাচার সহ্য করেও স্বামীর চরনে পড়ে থাকে। পারভিনও তার ব্যতিক্রম করল না। এবার পারভিনের উপর তার স্বামীর অত্যাচার আরো বেড়ে গেল। তার স্বামীর অবিশ্বাস, সন্দেহ এবং অসহনীয় মারধোর পারভিনকে একদিন প্রতিবাদী করে তোলে। অবশেষে পারভিন বাধ্য হয় তার স্বামীকে তালাক দিতে।
পারভিন ও তার ছেলে বাবু সেই পৈচাশিক লোকটির হাত থেকে মুক্তি পেলেও, মুক্তি পায়নি অভাব-অনটন, দারিদ্রতা ও সমাজের কটুকথার হাত থেকে। বাবু এখন গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর একজন ছাত্র। বাবু তার নানার বাড়িতে থাকে। পারভিন তার পরিবারের দারিদ্রতা মোচনের জন্য শহরে মানুষের বাসায় কাজ করে। তবুও আছে তাদের অভাব অনটন। কখনো হয়তো তারা পেটপুড়ে দু'বেলা খেতে পায় কখনো বা পায় না। এটাই হচ্ছে আমাদের দেশে নারী জাতির অবস্থান।
No comments:
Post a Comment