Monday, December 10, 2007

একজন নির্যাতিত নারীর জীবনের গল্প

Title of this post : "A Story of a Tortured Girl" By Mayanur Akter Maya
Content of this post: It is a story of a girl who was being tortured by her husband. Her name is Mitali. Her parents influenced her to marry only for money. So her husband treats her as a servant, not as a wife. She is so helpless that she doesn’t have any shelter in her parent’s house.


আমাদের সমাজ চায়, মেয়েরা তাদের সব আনন্দ ত্যাগ করে খুশি থাকবে সরাইকে নিয়েআর তা না করলে বলা হয় সে ভাল মেয়ে নাঅন্য দিকে হাসি মুখে মেয়েরা সব কাজ করে গেলেও সে তার কাজের স্বীকৃতি চায়যখন নিত্য দিনের ছোট খাটো কোন ত্যাগের স্বীকৃতি সে পায় না, তখনি শুরু হয় হতাশাচাইলেও এই হতাশা খুব বেশি দিন চেপে রাখা যায় নাতা কোন না কোন দিন বিস্ফোরিত হবেইএতে একদিকে যেমন সম্পর্কের ফাটল শুরু হয়, অন্য দিকে ধুকে ধুকে কষ্ট পায় মেয়ে নিজেই

আমি এমন একজন মেয়ের কথা বলছিমিতালী আমার ছোটবেলার বান্ধবীও দেখতে খুব সুন্দরীও যখন ৯ম শ্রেনীতে পড়ে তখন রানা নামের ধর্নাঢ্য এক ব্যক্তির সাথে তার বিয়ে হয়সে মিতালীর চেয়ে ১৭ বৎসরের বড়বিয়ে কি সে কথাটি বুঝে উঠার আগেই বাবা, আর বড় ভাই দুজন মিলে তাকে বিয়ে দিয়ে দেয় রানার সাথে

ঘরই যদি নিরাপদ না হয় তবে কোথায় যাবে নারী? ঘরের বাইরে এক পা, একটি দিন মানেই অসংখ্য অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় নারীকেযখনি সে বিয়ে করবেনা বলে আপত্তি করল তখনই শুরু হল মিতালীর উপর বাবা ভাইয়ের অমানবিক নির্যাতনতার ঘর থেকে বের হওয়া, স্কুলে যাওয়া সব বন্ধ করে দেয়া হলএমনকি স্কুলের সব বান্ধবীদের সাথেও দেখা করা বন্ধ করে দিল মানুষ কোন সমস্যার মুখোমুখি হলে তার একমাত্র আশ্রয় বা স্থান হয় ঘর, তার পরিবার-- বাবা, মা, ভাই, বোন, আত্নীয়-স্বজনআর সেখানেই যদি হয় নির্যাতনের কেন্দ্র তখন নারীরা কোথায় যাবে বলতে পারেন?

মিতালীকে এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে দেয়া হলশুরু হল মিতালীর নতুন জীবননির্যাতনের এক ধাপ পার হয়ে অন্য ধাপ শুরু হল! ভাই ও বাবা দুজন মিলে সেই রানার কাছ থেকে মিতালীর বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেরানা কম বয়সি ও দেখতে সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করতে পেরেছে, সে জন্য সে সব কিছু করতে রাজিকিন্তু বিয়ের পর শুরু হল মিতালীর উপর অমানবিক নির্যাতনমিতালীকে কখনও তার স্ত্রী মনে করতেন নাসব সময় তাকে মনে করা হত কেনা দাসী

আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে যেভাবে নারীদের ক্রীত দাসী হিসেবে ব্যবহার করা হতমিতালীর সাথেও রানা সে রকম আচরণই করতআর সব সময় বলত, আমি তোকে তোর ভাই আর বাবার কাছ থেকে টাকা দিয়ে কিনেছিআমি তো আর তোকে বউ করে আমার ঘরে আনিনি, যে তোর সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবেতোকে সব সময় আমার কথা মত চলতে হবেআমি যা করতে বলি তাই করতে হবে মিতালী সব কষ্ট মুখ বন্ধ করে সহ্য করেতাছাড়া কি বা করার আছে তারসে কাকে বলবে তার এই কষ্টের কথা? বাবাকে? ভাইকে? না, তারাই তো তার অসল শত্রু সে ভাবে আমি কি করব? বাবার বাড়িতে যাবে তারাই তো তার সর্বনাশ করেছেভাবতে ভাবতে ভাবনার রাজ্যে ডুবে যায় ,কিন্তু কোন কুল সে খুঁজে পায় না

কলি থেকে ফুল হয়, আর সে ফুল থেকে মালাকিন্তু ফুল ফোটার আগেই যদি সেই কলি কোন বিষাক্ত কোন ক্রীট দ্বারা আক্রান্ত হয়, তাহলে সেই কলি থেকে কিভাবে সুস্থ ফুলের আশা করা যায়তার স্বামী সব সময় তাকে অবিশ্বাস করতসে সব সময় বলে মেয়েদের প্রশয় দিতে নেইমেয়েরা শুধূই মেয়েতারা পুরুষের হুকুম মেনে চলবে, সংসার গোছাবে শশুর শাশুরী স্বামী সন্তান দেখাশুনা করবেতাদের আবার চাওয়া পাওয়ার কি আছে? কষ্ট সহ্য করতে না পেরে মিতালী একদিন সিদ্ধান্ত নিল আত্মহত্যা করবেএত বড় পৃথীবিতে তার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার একটও জায়গা নেই কোথাও

মরিতে চাহিনা এই সুন্দর ভুবনে!মিতালীর অনেক ইচ্ছা হয় বেঁচে থাকতে এই পৃথিবীতেকিন্তু যখনি মনে অসংখ্য প্রশ্ন জাগে কেন বেঁচে থাকব? কিসের আশায় বেঁচে থাকব? কার জন্য বেঁচে থাকব? সে কোন উত্তর খুঁজে পায় না, শুধু তার চোখের সামনে ভেসে উঠে তার মার সেই অসহায় মুখখানা! মনে পরে মায়ের কথাযখনি দেখত মা নিজের জন্য কিছুই করছে নাছেলে পছন্দ করে-- তাই বাড়িতে ভাল রান্না হচ্ছে , মেয়ে শুনতে ভালভাসে-- তাই এই গানটা প্রায়ই শোনা হয়স্বামী ঘুরতে পছন্দ করেন-- তাই বেড়ানো হয় অনেককিন্তু শুধুই নিজের ভালো লাগার প্রাধান্য দেয়নিমাকে মাঝে মাঝে প্রশ্ন করা হলে মা বলতেন, মেয়েদের অবার পছন্দ! সবাইকে খুশি করতে পারলেই খুশি তারা সবার খুশিতেই নিজের খুশি !এসব কথা ভাবতে ভাবতে দুচোখের পাতা এক করতে পারেনা মিতালী

একদিন সকালে মিতালী পাশের দোকান থেকে ঘুমের ঔষদ কিনে আনে, আত্মহত্যা করার জন্যযখন রাত গড়িয়ে সন্ধ্যা হল, সবাই যখন ঘুমে বিভোর, তখন মিতালী ঘুমের ঔষধ খেয়ে শুয়ে পরেহঠাৎ কিভাবে যেন রানা বুঝতে পারল মিতালী কিছু একটা ঘটিয়েছেমিতালী মারা যাচ্ছে সেই জন্য না -- নিজেকে বাঁচানোর জন্য মিতালীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলআর তার বাবা, ভাইয়ের কাছ থেকে লিখিত ডকুমেন্ট রাখল-- যদি কোন দিন কোন কারণে মিতালী মারা যায় এর জন্য রানা কোন রকম দায়ী থাকবেনা!

রানা এতদিন মিতালীকে মানসিক নির্যাতন করতএখন সে শারীরিক নির্যাতন করতে শুরু করলঘরের বাহিরে বের হওয়া বন্ধ করে দিলরানা সিদ্ধান্ত নিল মিতালীকে আর এভাবে রাখবেনা, সে সন্তানের বাবা হতে চায়আর মিতালীর বয়স তখন ১৫ বছর চলছেএই পুরুষ শাসিত সমাজে নারীদের কোন মূল্যই নেইসেখানে সন্তান নেওয়া , না নেওয়ার সব সিদ্ধান্ত পুরুষেরইনারীরা হচ্ছে তাদের খেলার পুতুল; যেভাবে নাচাবে, সেভাবেই নাচতে হবে
মিতালী সন্তানের মা হতে চলেছেএত যন্ত্রনার নির্যাতনের মাঝেও কি মিতালী পারবে একজন সুস্থ সন্তানের মা হতে? নানা প্রতিকুলতা পার হয়ে মিতালী মা হলেনতার যমজ সন্তান হলসে তাদের নাম রাখল সবুজ ও সাথী

এখন রানা মিতালীর উপর নির্যাতন করে অভিনব পদ্ধতিতেমিতালী মা হয়ে গেছে এখন সে আবার বিয়ে করবেমিতালী দুসন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সব কষ্ট সহ্য করে নিচ্ছেতাহলে মেয়েরা কি পাচ্ছে এই পৃথিবীতে এসে? প্রতিটি পদে পদে নির্যাতিত হচ্ছে নারীরা

দেখা যায়, পরকীয়া আর যৌতুকের জন্য স্বামী ও তার আপনজনদের সহযোগিতায় স্ত্রীকে হত্যা করা হয়কলঙ্কিত হয়ে সংসার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উপায় না পেয়ে মিতালীর মত অনেক মেয়েরাই ধুকে ধুকে মরে, কেউ বা আবার লাশ হয়ে বের হয়তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হলে কতগুলো জীবন ধ্বংসের পথে চলে যায়যেখানে অভিভাবকরা নিজেদের সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে সন্তানদের সঠিক পথে রাখার জন্য আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, সেখানে এই আভিভাবক অনন্দ-ফুর্তি করার জন্য সন্তানদের দুনিয়াতে এনে তাদেরকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে

মিতালীর মত কত নারীরা আমাদের দেশে ঘরে বাহিরে প্রকাশ্যে গোপনে নির্যাতিত হচ্ছেএই নির্যাতন থেকে নারীদেরকে রক্ষা করতে হলে আমাদের সবার মানসিকতার পর্রিবতন করতে হবেমেয়েদেরকে মানুষ ভাবতে হবেকারণ মেয়েরাও মানুষ

Thursday, December 6, 2007

আমরা নারী

Title of this post: Amra Nari (We are woman) by Sharmin Chowdhury Shikha

জেগে উঠ আজ, জেগে উঠ
বসে থেকো নাকো
সময় হয়েছে গো
, সামনে যাবার
কেন বসে থাকো?
কেন ভিরু লাজ?
সামনে অনেক কাজ,
কেন বসে আছো, আধাঁরের ঘরে?
কেন কাটিয়ে দিচ্ছ জীবন, ধুঁকে ধুঁকে মরে?
বিশ্ব আজ আলোকিত
, চারদিক উচ্ছাসিত।
তুমি কেন আধাঁরে, হয়ে আছো নিপতিত?
বেরিয়ে আস ঐ ঘর থেকে
তাকিয়ে দেখ নারী বিশ্বের দিকে।
বসে নেই তারা হাত পা গুটিয়ে
বাহিরে আসছে আধাঁর কাটিয়ে।
উন্নত দেশ, উন্নত বিশ্বে
নারীরা আজ অনেক শীর্ষে।
জ্ঞান চক্ষে তারা করছে অনেক ভালো
পালিয়ে যাচ্ছে সকল আধাঁর কালো।
হে মহীয়ান নারী
গর্জে উঠে একবার বল
আমরা পারি
, সবই পারি
আমরা নারী।

আমার না বলা কথা

Title of this post: Amar na bola Khatha (My untold story) by Helen Sarker

রাস্তার পাশে বসে একটি ছেলে ভিক্ষা করে। কতই বা বয়স হবে ওর বড় জোড় ২০/২২মুখ খানা বড় মায়ায় ভরাবড় বড় চোখ দুটোতে কি ভীষন দিপ্তী রাস্তাধরে যখন আমি হেঁটে যাই প্রায়ই চোখ তুলে দেখি ওকে, মুখটা অনেক করুন কিন্তু চোখে থাকে এক ঝলক হাসিমনে হয়, আমরা ওকে করুনা করছি না বরং ওই করুনা করে তাকিয়ে দেখছে সব সুস্থ স্বাভাবিক নির্দয় মানুষগুলোকে একটা কথা বলা হয়নি, ওর শরীরের একটা হাত ও একটা পা শুকনো কাঠের মতই খটখটেঅনেক কষ্ট করে প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে দিয়ে সে রাস্তায় চলে, বেশির ভাগ এক কোনায় চুপটি করে বসে থাকে

একদিন আমি অনেক দ্বিধাদ্বন্দের দোলায় দুলে, অনেকটা সাহস করেই ওর কাছে গিয়ে প্রশ্ন করলাম, কি নাম তোমার? কোথায় থাকো? বাড়ীতে কে কে আছে? কতদিন থেকে তুমি এখানে বসো? এতগুলো প্রশ্ন একসাথে শুনে মনে হয় ও ঘাবড়ে গিয়েছিলোঅবাক অবাক চোখে নিয়ে কিছুক্ষন আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল তারপর বললো, আমার নাম শাহীন, থাকি গাবতলার ছোট্ট বস্তিতেবাড়ীতে বাবা, মা আর ওরা ৪ ভাই ২ বোন থাকে এবং ভাইবোনের মধ্যে ওই সবচেয়ে বড়ওর বাবার নির্দিষ্ট কোন কাজ নেই, সব মিলিয়ে বড় জীবনটা একটা করুন কাহিনীর অধ্যায়আর এই ভিক্ষা করা কবে থেকে শুরু হয়েছে তা বোধ হয় ও নিজেই ভুলে গিয়েছে

ওর কথা শুনতে শুনতে চোখ দুটো আমার ভরে উঠল কান্নায় আমি মাঝে মাঝে ওকে টাকা দিয়েছিবেশির ভাগই দিতে পারিনি কারণ সব সময়ই আমার মনে হয়েছে শুধুই কি ৫/১০ টাকা ওর প্রাপ্য। বেঁচে থাকার জন্য আর কি কোনই দাবী নেই ওরনাকি আমরা সুস্থ মানুষগুলো ওদের মতো কাউকে মানুষ বলে ভাবতে পারি না

আমার মাঝে মাঝে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা হয়- কেন এত করুনা প্রাপ্য ওদের, ওরা আমাদের মতই রক্তে মাংসে গড়া মানুষ, ওদের স্বপ্ন আছে, সুন্দর পৃথিবীতে ওদের ও ইচ্ছা হয় নানা রং এর ঘুড়ি উড়াতেবাঁচতে ইচ্ছা হয় প্রান ভরে

আসলে ওর শুকিয়ে গেছে শরীর আর আমাদের মন। এত স্বার্থপরতা, নির্মমতা আর বিবেকহীন হয়ে গেছি আমরা যে, হৃদয় আছে কিন্তু নেই ভালবাসা, চোখ আছে বটে কিন্তু দৃষ্টি ঘোর লাগাকি হবে এই ভাবে বেঁচে থেকেযদি নাই পারি একটা অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাতে...............

Wednesday, November 28, 2007

সেই মেয়ে

Title of this post: That Girl (A short story) written by Zannat Ara Amzad (English & computer student)
Content of this post: In this short story, author has written a story about a family from her imagination.

দ্বিতীয় অংশের পর

কি খুব পঁচা দেখাচ্ছিল? আমি জানি আপা এখন মনে মনে এসবই ভাবছিলআপা একটু নিরব প্রকৃতির, কিন্তু মনে মনে বেশ রোমান্টিক
আপা হয়ত ভাবছে না - না মোটেও পঁচা দেখাচ্ছে না আমাকেবরং আমি না সাজলেও হয়ত আরিফ সাহেব বলত ওয়াও! ইউ আর সো সুইট হানি, আই ওয়ানা বি উইথ ইউ আমি খুব সুইট একটা মেয়ে আমি জানি! আশপাশের মানুষগুলো এ ব্যাপারে মনে হয় আমার চেয়েও ভলো জানে, আর আমার বন্ধুদের চোখে-মুখেতো সারাক্ষনই মুগ্ধতা ঝরে- ওয়াও! ইউ আর সো- ও সুইট!এটা ছেলে বন্ধুদের কথা আর মেয়ে বন্ধুরা আমার গ্লামারটাকে বেশ পছন্দ করে এটা খুব ভালো করেই বুঝতে পারি!
আমার মতে সত্যিই বিথি আপা সুন্দরের অপ্সরী
আমি আপার রুমে ঢুকে বললাম, আপা এই নাও, এটা আরিফ সাহেব দিয়েছেন
আপা বলল, আরিফ সাহেব!
আপা এমন ভাব করছে যেন এই কাগজটা দেয়াতে আরিফ সাহেবের প্রতি বিরক্ত হয়েছে
আপা বলল, আচ্ছা এটা টেবিলে রাখ

আমি কাগজটা রেখে পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম আপা পেছনে তাকিয়ে আগে দেখে নিল কেউ আছে কিনাআপা কাগজটা পড়ছে আর হাসছে, কাগজটাতে কি লেখা ছিল তা তো জানাই আছেতিন শব্দের আমাদের সবার প্রিয় সেই কথাটি......আমি তোমাকে ভালোবাসিআপা একা একাই লজ্জা পাচ্ছেসেই সাথে তার ফোন নাম্বারটি পেয়ে বোধ হয় খুশিই হয়েছে, কিন্তু আমি জানি আপা তাকে ফোন করবে না, কারণ আপা ভিষণ লাজুক
পরের দিন সকালে আমি আরিফ সাহেবকে ফোন করি, ফোন রিসিভ করল আরিফ সাহেবইআমি হ্যালো বলার সঙ্গে সঙ্গে
আরিফ সাহেব বলল, সে বলল, আমি জানি তুমি কে, বিথি?
কথাটা শুনে আমি মুখ চেপে হাসলামভালোই হল তার সাথে একটু মজা করা যাবে, অসুবিধে কি! দুলাভাইয়ের সঙ্গে একটু মজা করতেই পারি
আরিফ সাহেব বললেন, কি হল চুপ করে আছেন যে? বুঝতে পারছিআমাকেই কথা বলতে হবেগতকাল তোমাকে দেখেই আমি মুগ্ধ হয়েছি ইউ আর সো-ও সুইট হানিতোমাকে আমার এবং আমাদের পরিবারের সবাই ভিষণ পছন্দ করেছেবিথি, আমি তো একাই সব বলে যাচ্ছি তুমি তো কিছুই বলছো না!
আমি কন্ঠটা ঝেরে পরিষ্কার করে বললাম এখনও কি আমার কণ্ঠটা চিনতে অসুবিধা হচ্ছে দুলাভাই!
আরিফ সাহেব বললেন, কে-কে-কে? আরিফ সাহেব হকচকিয়ে গেলেন
আমি বললাম, লজ্জা পাবার কিছুই নেই আমি তিথিভাগ্যিস্‌ ফোনটা আমার মা করেননি এবার তিনি জোরে কাশঁছেন
আমি বললাম, আপনার জোরে কাশঁবার প্রয়োজন নেইআমি আপনার কণ্ঠটা চিনতে ভুল করিনি, কি! এবার আপনি চুপসে গেলেন যে? থাক আর কথা বাড়াতে চাই নাআমার ইউনিভার্সিটির সময় হয়ে এল বিথি আপা আমাকে বলল, আপনাকে ফোন করে বলার জন্য যে, আপা আপনার সাথে সরাসরি কথা বলতে চায়আপনি কি একটু সময় দিতে পারবেন?
আরিফ সাহেব বললেন, নিশ্চয়ইতোমার আপা কবে কথা বলতে চায়?
আমি বললাম, আজ বিকেলে বোটানিকেল গার্ডেন
আরিফ সাহেব বললেন, বিকেল কয়টার দিকে?
আমি বললাম, ৪টার দিকে
আরিফ, আচ্ছা তোমার আপাকে বলবে আমি ৪টার আগেই সেখানে থাকবোআচ্ছা খোদা হাফেজ
আমি রিসিভার টি রেখেই আপার ঘরে গেলামআপা শুয়ে শুয়ে ম্যাগাজিন পড়ছেমনে হচ্ছে আপার মুড খুব ভালো
আমি বললাম, আপা আসবো?
আপা বলল, আয়
আমি বললাম, আরিফ সাহেব ফোন করেছিলেনতিনি বললেন তোমার সাথে সে সরাসরি কথা বলতে চায়
আপা বলল, সরাসরি কথা বলতে চায়, কি কথা?
আমি বললাম, তা আমি কি করে বলবো?
আপা বলল, উনি তোকে ফোন করে কি বলেছে?
আমি বললাম, আরিফ সাহেব আমার কণ্ঠ শুনে ভেবেছেন ফোনটা বুঝি তুমি রিসিভ করেছআমার কণ্ঠ শুনেই তিনি বলে উঠলেন, কে বিথি? কথাটা শুনে আপাও মিটমিট করে হাসলোআমি বললাম, না আমি তিথি, ইয়ে মানে আমি আরিফতোমার আপা কি বাসায় আছেন? আমি বললাম, জি আছে আপনি হোল্ড করুন, আমি আপাকে ডেকে দিচ্ছিউনি বললেন, না না তোমার আপাকে ডাকতে হবে নাতুমি তোমার আপাকে বলো আমি তোমার আপার সাথে আজ বিকেলে বোটানিকেল গার্ডেনে বিকেল ৪টায় কথা বলতে চাইওকে ঠিক ৪টায় সেখানে থাকতে বলোতোমাকে অবশ্যই, অবশ্যই যেতে বলেছেআপা তুমিকি যাবে সেখানে?
আপা বলল, দেখি

আমি চলে এলাম বসার ঘরেএটাই সুযোগ ফোন করারমা রান্না করছে, অভি স্কুলে, আর বাবা অফিসেরিং হচ্ছে, কিন্তু কেউ ফোন ধরছে নাবোধ হয় বাসায় কেউ নেইআমি যার সাথে ফোনে কথা বলি, ওর নাম হচ্ছেরূপও ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার এর ছাত্রআমি ওকে ছোট বেলা থেকেই চিনিও আমাকে চেনেআমার সাথে সব সময়ই ওর দেখা হয় কথা হয়আমি যখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি তখন থেকেই ওকে চিনতামকিন্তু ওর সাথে কখনও কথা বলতাম নারূপদের পাশের বাড়িতেই আমারা থাকতামআমি যখন বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াতাম ঠিক তখনই ও এসে দাঁড়াতো ওদের বারান্দায়ও ফেল ফেল করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতোআর ও একটু বোকা টাইপের, ভীষণ ভিঁতুও বলা যেতে পারে আমরা রূপদের ওখান থেকে চলে আসি, অন্য আর এক এলাকায়ওর সঙ্গে এরপর থেকে স্কুলেই দেখা হতও আর আমি একই স্কুলে পড়তামও আমার তিন বছরের সিনিয়রদুজনেই দিনে দিনে বড় হতে থাকিআর যতই বড় হচ্ছি ততই বুঝতে শিখছিও এখন আর আগের মত নেইও আমাকে দেখলেই বন্ধুদের সঙ্গে আমাকে নিয়ে কথা বলতএমনি করে কেটে গেল ছয়-ছয়টি বছররূপ এতদিন স্কুলে থেকে বেরিয়ে কলেজ থেকে বেড়বার পথেওর সাথে প্রথম যেদিন ফোনে কথা বলি, সেদিন ও নিজেই ফোন রিসিভ করেছিল,আর এমনিতেও,ও বাসয় থাকলেও নিজেই সব সময় ফোন রিসিভ করেরূপ হ্যালো বলার পরই

আমি বললাম, কেমন আছ?
রূপ বলল, আপনি কে?
আমি বললাম, ফাজলামো করছ কেন, তুমি জানো না আমি কে?
রূপ বলল, না আমি আপনাকে চিনি না,আপনি আপনার পরিচয় না জানালে চিনব কেমন করে?
আমি বললাম, রূপ তুমি কিন্তু মিথ্যা বলছরোজ তুমি আমাকে দেখ, আমিও তোমাকে দেখিতবুও তুমি বলছো, তুমি আমাকে চেননা আচ্ছা বেশ, তুমি আমাকে চেননা মানলামতোমার সঙ্গে আমার জরুরি কথা আছে
রূপ বলল, দেখুন আমি আপনাকে চিনি বা জানিনাআমার সাথে আপনার কিসের জরুরি কথা?
আমি বললাম, দেখ, রূপ আগে থেকেই কেউ কাউকে চেনেনাকথাবার্তার মাধ্যমেই একজন অপরজনকে চিনতে পারেযাই হোক তোমাকে আমি যেই কথাটা বলতে চাই তা হল, আমি তোমার সাথে ফ্রেন্ডশীপ করতে চাইতুমি কি করে আমার বন্ধু হবে?
রূপ বলল, আচ্ছা?কে আপনি? আগে তো আপনার নামটা আগে বলুন, তারপর বন্ধুত্ব
আমি বললাম, আচ্ছা ঠিক আছেআমার নাম তোমার জানার দরকার নেইতুমি আমাকে চিনতে পারবে, তুমি এখনই চলে আস
রূপ বলল, কোথায় আসবো? তুমি বেলি রোডে চলে আসআর এখানেই তুমি আমাকে দেখতে পাবে
রূপ বলল, ঠিক আছে, আমি আসছি

চলবে.......................

ঘূর্নিঝড় “সিডর” এবং অর্ন্তনিহিত ভয়ানক রাত্রির অভিজ্ঞতা

Title of this post: “Cyclone Sidr and experience of a horrible night” by Laily Jahan Meghla
Content of this post: In this post writer expressed her feelings on a horrible night of cyclone sidr.

জীবনের বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতার সাথে মানুষের পরিচয় ঘটে। দৈনন্দিন জীবনের গতানুগতিকতার মধ্যে এমন কিছু খন্ডমুহূর্ত আসে যেগুলো স্বাতন্ত্র ও অর্ন্তনিহিত স্মৃতির তালিকায় রেখায় চিহ্নত হয়। এই প্রথম নিজের চোখে দেখা ঘুর্নিঝড়
সিডর রাত্রিকে ঘিরে সেরকম রেখাঙ্কিত স্মৃতি আমার জীবনে কতবার কতভাবেই তো ঝড় হয়েছে কাল অকালে শিতে-গ্রীষ্মে, বর্ষায় একটি ঘুর্নিঝড়ের ভয়ঙ্কর রাত্রি স্মৃতিগুলোকে বিশেষত্ব ও স্বাতন্ত্রে তুলে ধরতে চেষ্ঠা করেছি।

আমাদের দেশে ১৯৯১ সালে ২৯ই এপ্রিলের রাতে চরম দুঃখের ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছিল। তখন আমি খুব ছোট ছিলাম। কোন কিছু আমার মনে নেই। বড় হয়ে পরিবার থেকে যতটুকু শুনেছি তা রক্তাক্ত হৃদয়ের আহাজারি এবং হাজারো মানুষের ক্ষয়ক্ষতি। এই দিন উপকূলীয় অঞ্চলের হাতিয়া, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালী চর বরকত সহ প্রায় সমগ্র অঞ্চল প্রচন্ড ঘুর্নিঝড় আর জল্লোচ্ছাসে ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়। এই প্রথম নিজের চোখে দেখা ঘুর্নিঝড় সিডর বাংলাদেশে অতিক্রম করে গেছে। ঢাকা অফিস জানিয়েছে সিলেট পার হওয়ার সময় ঝড়টি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে এখন এর প্রভাব মুক্ত। গত বৃহস্পতিবার(১৫.১১.০৭) রাতে আঘাত হানা ঘুর্নিঝড় সিডর এর আয়তন ছিল দুই লাখ ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার। একলাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাংলাদেশে ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। এ বিশাল আয়তনের ঝড়টি ওই দিন রাত আটটার পর হারিকেনের শক্তি নিয়ে সিডর দক্ষিন উপকুল দিয়ে উঠে পৌনে তিনটার দিকে উত্তর পূর্বে সিলেট দিয়ে ভু-খন্ড অতিক্রম করবে। এই খবরগুলো বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার করেছে এবং ১-১০ নম্বর বিপদ সংকেত দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সেদিন সকাল থেকে কালো কালো পুঞ্জিভুত মেঘ স্তবকে স্তবকে পরিগ্রহ করছিল ঘনরূপে। সারাদিন আকাশ তোলপাড় করে ঝড়ো হাওয়া বইছিল। মেঘাচ্ছন্ন সারাটি দিন রাতের মতো প্রতিভাত হয়েছিল। রাতের প্রথম প্রহরে শুরু হল নিমর্ম নিষ্ঠুর প্রচন্ড ঝড়। রাত দশটার পর ঢাকায় শুরু হল ঝড়ের মহাপ্রলয়ের তান্ডবনৃতা। আর এদিকে বিদুৎ নেই অনেক সময় ধরে। আমার পরিবার যার যার রুমে সবাই ঘুমাতে চলে গেলো। আমি আর আমার ছোট ভাই একই রুমে ঘুমাই। জানালার কপাটে পট পটকের শব্দ হচ্ছে বাইরে বাতাসের শন শন শব্দ প্রচন্ডভাবে কানে শুনা যাচ্ছে। আমার ছোট ভাই ভয়ে আমার বড় বোনের রুমে ঘুমাতে চলে গেল। এখন আমি বড় একা হয়ে গেছি, ভয়ের পরিমান আরও তিনগুন বেড়ে গেলো। ঝড়ের লন্ডভন্ড তছনছ করে দিচ্ছে সব। আমারা ৫ম তলায় থাকি। আমার মনে হচ্ছে এই বুজি বিল্ডিং ভেংগে যাবে। জীবনের শেষ রাত্র বুঝি আজকে। আমার মনের ভিতরে এইসব কথা চিন্তা হচ্ছে। আমি আমার বন্ধু-বান্ধব এর কাছে ফোন করতে চাইলাম কিন্তু কোন নেটওয়ার্ক পাচ্ছিনা। অবশেষে রাত্র ১২-১০ মিনিটে আমার বড় ভাইয়ের একটি ফোন আসল আমরা কেমন আছি তা সে জানতে চাইল এবং ঘুমাতে বলল, কিন্তু তখন বাইরে প্রচন্ড বাতাসের শব্দ আর তাই শুনে আমার ভিতরে তখন দারুন উত্তেজনা। দরজা খুলে বাইরের অবস্থা দেখতে ইচ্ছা করছে কিন্তু মোটেও সাহস পাচ্ছিলাম না। জানালর ফাঁক দিয়ে দৃষ্টি দিলে মনে হল বাতাস আমাকে টেনে নিয়ে যাবে। অন্ধকারের সমুদ্র যেন সহসা উত্তাল, ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। মাঝে মাঝে আকাশে বিদুৎতের চমক এ মেঘের গর্জনে ধরনী খন্ড-বিখন্ড হওয়ার উপক্রম। ভাবলাম পৃথিবীর অন্তীম দশা উপস্থিত আর কয়েক মূহুর্তের মধ্যে ধ্বংসের অতলে তলিয়ে যাবে। আমি আল্লাহর কাছে আমার গুনাহ্ মাপের জন্য প্রার্থনা করছি। আমার আর ভাল লাগছে না কেবল ঝড় থামার অপেক্ষায় আছি। তখন রাত ২:০০টা বাজে। বাতাসেরর শব্দ প্রচন্ড বেড়ে গেছে আমি আমার বন্ধুর কাছে ফোন করলাম এবং কথা বললাম তখন মনে মনে স্থথির অনুভব করলাম। সে আমাকে নানাভাবে আশ্বস্ত করল এবং ঘুমাতে বলল কিন্তু তবুও আমার ভয় থেকেই গেল এবং ঘুমাতেও পারলাম না। রাত্র তিনটার পর ঝড় কিছুটা থামতে লাগলো। সারাটা রাত্র একফোঁটা ঘুমাতে পারলাম না কিন্তু সকালে চিন্তা করলাম কখন বিদুৎ আসবে এবং কখন খবর দেখব যে দেশের কি অবস্থা। কিন্তু দু্ইদিন একটানা বিদুৎ ছিল না এবং বিদুৎ না থাকার দরুন পানিও ছিল না। সংবাদপত্র পড়ে জানলাম পটুয়াখালী, বাগেরহাট, সুন্দরবন, বরিশাল, চট্টগ্রাম দেশের উত্তর ও দক্ষিন অঞ্চলে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান অনেক বেশি হয়েছে। রেডক্রিসেন্ট ধারন করেছে যে মৃতের সংখ্যা ১০,০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই ধরনের সংবাদ পড়ে আমার মনটা আরও বেশি খারাপ হয়ে গেল। সবচেয়ে বেশি মন খারাপ হল প্রথম আলোর একটা সংবাদ পড়ে যে, শরীয়তপুরে ১৫.১১.০৭ তারিখ সকালে একটি মেয়ে শিশু জন্ম গ্রহণ করেছে সকালে পৃথিবীর মুখ দেখেছে মেয়েটে আর রাতের ঘূর্নিঝড়েই নিভে গেল তার জীবনের প্রদীপ।

বাস্তবিকই ঝড়ের এমন দুলর্ভ আভিজ্ঞতা আমার আর কখনো হয়নি। ঘূর্নিঝড় সিডর রাত্রের সেই নিদারুন অভিজ্ঞতায় যে, প্রকৃতির মধ্যে শান্তির যেমন প্রলেপ আছে, তেমনি আছে ধ্বংসের তান্ডব নৃত্য। সেই ঝড়ের রাত্রির নিদারুন অভিজ্ঞতা আমার মনের দুঃস্বপ্নের স্মৃতি হয়ে গেঁথে থাকবে অনাদিকাল।

প্রলয়ঙ্করী সাইক্লোন সিডর

Title of this post: The cyclone sidr by Irin Sultana

সাইক্লোন, যা একটি ভয়ঙ্কর রূপ মানুষের জন্য, প্রকৃতির জন্য, যাবতীয় জীবনের জন্যএকবার আঘাত হানলে সব কিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায়এটি বিভিন্ন রূপ নিয়ে আসেসিডর সাইক্লোন প্রকৃতি ধবংসের এক ভয়ঙ্কর রূপ যা সম্প্রতি বাংলাদেশে আঘাত হেনেছেএর ফলে হাজার হাজার মানুষ হারিয়েছে তাদের ঘরবাড়ি, আত্বীয়-স্বজন, সহায় সম্পদমানুষ হারিয়েছে তাদের সর্বস্ব আর প্রকৃতি হারিয়েছে তার সৌন্দর্যএই সিডররূপি হারিকেন প্রধানত এর শীতল হাত বাড়িয়েছে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরগুনা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য দক্ষিনাঞ্চল এলাকায়হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে এই ঝড়েবাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি আশঙ্কা করেছে যে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারে পৌছতে পারেবেচেঁ থাকা মানুষ ভোগ করছে নানা সমস্যাবিভিন্ন সমস্যা গুলো হচ্ছে- বিদ্যুৎ সমস্যা, পানি সমস্যা, খাবার সমস্যা, নেটওয়ার্ক সমস্যাএটি গত ১৫ই নভেম্বর আঘাত হানেএবং তখনই মানুষ সম্মুখীন হয় তীব্র বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক সমস্যায়মানুষের সাধারণ কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়পুরো বাংলাদেশ ডুবে ছিল গভীর অন্ধকারেনেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে বহু এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত লোকজন এখন খাদ্য, পানযোগ্য পানি, বস্ত্র, ওষুধের অভাবে আক্রান্তবেচেঁ থাকার জন্য খাবার ও পানির জন্য দুয়ার থেকে দুয়ারে ঘুরছে তারাবাড়িঘর, সম্পদ, স্বজন হারানোর কষ্টের চেয়েও বড় সংকট এখন তাদের কাছে ক্ষুধাঅনেক লোক এক কাপড়ে বেচেঁ আছেএই ঝড় বহু মানুষকে পথে বসিয়েছেতার পরেও তারা নতুন করে তাদের জীবন শুরু করেছেদেশে এবং বিদেশ থেকে বিভিন্ন সংগঠন তাদের সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়েছেআশা করছি মানুষের এর মানবতার স্পর্শে তারা আবার নতুন করে বাঁচতে শিখবে

Saturday, November 24, 2007

সিডর বাংলাদেশ,২০০৭ এবং আমার অভিজ্ঞতা

Title of this post: Sidr of Bangladesh in 2007 and my experience by Zannat Ara Amzad Liva

১৯৯১ সালের পর ভয়াবহ ঘূর্নিঝড়ের আগমনে আবারও তছনছ হল বাংলাদেশগত ১৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরিশালের কাছে বলেশ্বর নদীর মোহনা দিয়ে ভয়ঙ্কর সিডরবাংলাদেশ উপকুলে আঘাত হানতে শুরু করেসারারাত উপকূলের জনপদগুলো তছনছ করে এটি উত্তর-পূর্ব দিক দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েপরবর্তীতে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় ‘‘সিডরউত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৩:০০টায় উপকূল অতিক্রম করেপরে এটি দেশের দক্ষিণ,মধ্যাঞ্চলে স্থল নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করে এবং শুক্রবার সকাল ৯:০০টার দিকে দুর্বল হয়ে উত্তর, উত্তর- পূর্ব দিক দিয়ে বাংলাদেশের স্থলসীমা অতিক্রম করে

প্রলয়ঙ্কারী এই ঘূর্ণিঝড়ির আগমন-বার্তা বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর আগে থেকেই উপলব্ধি করতে পেরেছিল বলে দেশের সর্ব সাধারণকে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ব থেকেই বেশকিছু বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়এছাড়াও উপকূলবর্তী অঞ্চলের অনেক মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়কিন্তু এত সর্তকতা অবলম্বন করা সত্বেও প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় তার আক্রমনে ব্যর্থ হয়নিপ্রাণ হারাতে হয়েছে প্রায় ৩৫০০ হাজারেরও অধিক মানুষকেবিনষ্ট হয়েছে ব্যাপক ঘরবাড়ী, মসজিদ-মাদ্রাসা, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান সহ গবাদি পশু ও ফসলেরভয়াবহ এই ঘূর্ণীঝড়ের আতঙ্কে আতঙ্কিত ছিলাম আমরা সারা দেশবাসীবৃহস্পতিবার গভীর রাতে হঠাৎ ঘূর্ণীঝড়ের বাতাসের বেগ প্রচন্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় লন্ডভন্ড হতে শুরু করল ঢাকার অনেক এলাকাআমি ঢাকার খিলগাঁও এলাকার একজন অধিবাসীসেদিন গভীর রাতে আমার বাড়ীর পাশের গলিতে বিরাট একটি গাছ উপরে পড়ে যাওয়ায় একসঙ্গে উপড়ে পড়ল পুরো এলাকার বৈদ্যুতিক তারসারা এলাকা নিমিষেই ছেয়ে গেল অন্ধকারেশুধুমাত্র এই একটি এলাকাই নয় দেশের সব এলাকা ঘিরেই নেমে এল অন্ধকারচারদিকে অন্ধকারময় অদৃশ্য বাতাসের শো-শো শব্দে কান ভারী হতে লাগলভয়ে শিউরে উঠলো গাঁএমনি করে নিদ্রাহীন ভাবে কাটালাম অন্ধকারময় প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণীঝড়ের বিমূর্ত এক রাত

পরদিন সকালেই খবর পেলাম প্রলয়ঙ্কারী ঝড়ের আত্নকাহিণীঘূর্ণিঝড়ে স্যালেন্ডার করেছে হাজারও নর-নারী, শিশু-কিশোর, আবাল-বৃদ্ধএছাড়াও বিধ্বস্ত হয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহস্রাধিক ঘরবাড়ি, চাপা পড়েছে অনেক তাজা প্রাণমানুষ হারিয়েছে আত্নীয়-স্বজন কেউবা হারিয়েছে প্রিয়জনঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের সর্বত্র ছিল ধূ-ধূ অন্ধকারচক্রাকারে বিদ্যুতের রো ধরে ছিল পানি স্বল্পতা, বন্ধছিল সরবরাহদেশবাসী ভীষণ কষ্টে একই সাথে বিদ্যুৎ, পানি স্বল্পতা ও গ্যাস সরবরাহ ছাড়া দিনযাপন করেছে এছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিঘ্নিত হয়েছে দেশের অনেক বৃহৎ কাজআমি ভোটার আই.ডি কার্ডের একজন ডাটা এ্যান্ট্রি অপারেটর সেদিন শুক্রবার সকাল ৯.৩০ মিনিটে আমাদের ভোটার আই.ডি কার্ডের ডাটা এ্যান্ট্রি অপারেটরদের একটি ট্রেনিং হওয়ার কথা ছিলআমাদের ট্রেনিং সেন্টার ছিল খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজআমি ও আমার বড় বোন, আমরা খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ঢুকতেই দেখলাম কলেজের অনেক মূল্যবান গাছ উপড়ে পড়ে ছিন্নভিন্ন হয়েছে অনেক বৈদ্যুতিক তারআর এই বৈদ্যুতিক তাড় বিনষ্ট হওয়ার দরুন আমাদের ট্রেনিং এ বিঘ্ন ঘটেআমরা আমাদের ল্যাপটপ খুলতে পারিনি; অনুশীলন করতে পারিনি গুরুত্বপূর্ন অনেক কাজবিঘ্নিত হয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট কানেকশনশতশত প্রাণ হারানোর সাথে সাথে সারা দেশ হারিয়ে গিয়েছিল অন্ধকারের গভীরেখবরের পাতায়, টেলিভিশনের পর্দায় ঘূনীঝড়ে আহত, নিহতদের দৃশ্য দেখে সর্বক্ষণ হাহাকার করছিল মনমনকে আর পোষ মানাতে পারিনিআমিও তো মানুষ, রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ, আমারও মন আছেকোন রকম ট্রেনিং লেকচারের মাধ্যমেই সেদিনের মত সমাপ্ত হল ট্রেনিং ক্লাসট্রেনিং শেষ হওয়া মাত্রই ছুটে গেলাম দানবীয় শক্তির ঘূর্ণিঝড় সিডরআক্রান্ত দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলিয় এলাকায়যেখানে গিয়ে থমকে গেলাম আমি, স্তব্ধ আমার কণ্ঠমনে শুধুই প্রশ্ন জাগে প্রকৃতির এ কোন স্টীম রোলার পীষ্ঠ হল নিস্পাপ শিশু-কিশোর, সহায়-সম্বলহীণ মানুষের ওপর? শুধু মানুষই নয়, অবুঝ-নির্বাক পশুরাও নিস্তার পায়নি দানবীয় সিডরআক্রমন থেকেপানির স্রোতে ভেসে উঠেছে বহু মানুষের মৃত গলিত দেহ, বাতাসে পঁচন ধরা লাশের দুর্গন্ধএ যেন এক মৃত্যুপুরীধ্বংসযজ্ঞ এই সকল মৃত্যুপুরিতে চলছে স্বজনহারানো শোকের মাতন, অন্যদিকে একমুঠো খাবার ও লজ্জা নিবারনের এক টুকরো বস্ত্রের জন্য খোলা আকাশের নিচে রাত কাটানো লাখ লাখ বুভুক্ষু ও শীতার্ত মানুষের হাহাকারএই মাতম আর হাহাকারের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাশুকনো মাটির অভাবে বহু লাশের ঠাঁই হচ্ছে গণ কবরেঅনেক ক্ষেত্রে কাফনের কাপড়টুকু ও ধ্বংস্তুপের মাঝে চাঁপা পড়া মানুষের মৃত দেহ পত্রিকার পাতায় ছবি হয়ে স্থান নিয়ে ত্যাগ করেছে নিঃশ্বাস, ছেড়ে গেছে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীমর্মান্তিক এই ঘূর্ণিঝড় আমাদের করেছে নিঃস্বঅবশেষে আজ বাতাসে শুধু ধ্বনিত হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ে নিহত হাজারো শিশুর ক্রন্দন

Thursday, November 22, 2007

ভয়াবহ ঘুর্নিঝড় সিডর

Title of this post: The cyclone “sidr” by Sofia Khatun

দিনটি ছিল বৃষ্পতিবার। তারিখটি ছিল ১৫ই নভোম্বর ২০০৭ সাল। তার আগের দিন থেকেই আমাদের কানে ভেসে এসেছে ভয়াবহ প্রলয়ংকারী ঘুর্নীঝড় সিডরের সংবাদ। প্রথমদিন আবহাওয়া অধিদপ্তর আমাদের ৪নং সর্তক সংকেত দিয়েছিল এবং সবাইকে কাছাকাছি আশ্রয় কেন্দ্র আশ্রয় নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রায় দুঘন্টা পর ১০নং মহাবিপদ সতর্ক সংকেত দিয়েছিল। অনেকেই এই সর্তক সংকেত শুনে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল। যাদের ভাগ্যে ছিল র্দুভাগ্যের সাথে গড়া, তারাই রয়ে গেলো তাদের বসত বাড়িতে। এক সময় বৃহষ্পতিবার রাতে শুরু হল তুমুল ঘুর্নীঝড় সিডর। যার আঘাত লন্ডভন্ড হয়ে গেলো গোটা বাংলাদেশ। ঝড়ের আঘাতে বাংলাদেশের এমন কিছু জেলা আছে যা শুধুমাত্র তুলার মত উড়তে থাকে। এমন কিছু গ্রাম আছে যার কোন অস্তিত্ত্ব নেই। এমন কোন লোক নোই যার স্বজন হারাইনি। কিছু কিছু পরিবার আছে, যে পরিবারের একজনকে টিকিয়ে রেখেছে কান্নার জন্যে। যার ঘর-বাড়ি, ফসল, আত্মীয়-স্বজন সব চলে গেছে। বাংলাদেশে ৬৪টি জেলার মধ্যে তা প্রায় ২০/২৫ টি জেলার উপর দিয়ে ভয়াবহ সিডর আঘাত হেনেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে ১৬টি জেলায়। যার কোন চিহ্ন নেই। কিছু কিছু জেলাগুলো এমন হয়েছে। যা দেখলে কখনোই বুঝা যাবে না যে এখানে মানুষের কোন বসবাস ছিল। দু-একজন যা চোখে পড়ে দেখা যায় তাদের কান্নার ঢল। তাদের খুদার যন্ত্রনা ও স্বজন হারা আর্তনাদ বাংলার আকাশ ছেয়ে গেছে। একটা মানুষের বেচেঁ থাকতে যা কিছু প্রয়োজন, ঘর-বাড়ি, গবাদি পশু, খাদ্য বস্ত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা সবকিছু নিয়ে গেছে সিডর। ঘুর্নীঝড় সিডরের আঘাতে কত লোক প্রান হারিয়েছে তা এখনো সঠিক বলা যাবে না। কারন সকল জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন। কোথাও সঠিক মোবাইল টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। বিদ্যুৎতের খুঁটি উপড়ে গেছে, বিছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ লাইন। এরই মধ্যে টুকিটাকি সংবাদ জানা গেছে তিনহাজারের বেশি মানুষের প্রান হারিয়েছে। বিধস্ত হয়েছে হাজারো ঘর বাড়ি, যারা প্রান হারিয়েছে হয়ত তারা বেঁচে গেছে। কিন্তু যারা প্রানে বেঁচে আছে তাদের অবস্থা এত খারাপ যে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না, তাদের বাঁচার কোন পরিস্থিই নেই, নেই কোন ঘর বাড়ি, নেই খাদ্য, বস্ত্র, নেই কোন মুখে একমুঠে ভাত তুলে দেওয়ার মত এজন স্বজন। আছে শুধু চোখের জল। অনেকের সেই জলটুকু শুকিয়ে গেছে। এমন একজন বৃদ্ধ বেঁচে আছেন যার বংশে কেই নেই। শুধুমাত্র উনি বেঁচে আছেন আর আছে উনার বুক ফাটা কান্না হাহাকার আর্তনাদ। ভয়াবহ ঘৃর্নীঝড় সিডর কেড়ে নিয়ে গেছে মানুষের সবকিছু। আর দিয়ে গেছে বাংলাদেশকে না খাওয়ার যন্ত্রনা স্বজন হারা আর্তনাদ, ভিটেমাটিটুকু হারানোর হাহাকার। ফসল নষ্ট হয়েছে তা প্রায় ৮ লাখ ৬৩ হাজার ৭শ। দারিদ্র এই বাংলাদেশ কতটুকু সাহায্য করতে পারবে অসহায় এই মানুষদের সৃষ্টিকর্তা কতটুকু সময়ের মধ্যে ভেঙ্গ চুরমার করে দিল হারিয়ে যাওয়া সাজানো সংসার। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন অসহায়। তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসুন। তবেই হবে বন্ধুত্ত্বের পরিচয়।

Wednesday, November 14, 2007

রাহেলা এবং নাদিনির জন্য ন্যায়বিচার

Title of this post: "Justice for Rahela e Nadine!" by Dr. Kathryn Ward (English) and translated by Taslima Akter

গত কয়েক মাস ধরে, অনেক বাংলা ব্লগ এবং ওয়েব সাইটগুলো (এবং কিছু ইংরেজী) রাহেলার ন্যায় বিচারের জন্য তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করছে, রাহেলা, একজন র্গামেন্টেস কর্মী যাকে আঘাত করা হয়েছিল এবং মূত্যুর জন্য ফেলে রেখেছিল ২০০৪ আগষ্ট-সেপ্টম্বর, কিন্তু এক মাসের জন্য সে বেচেঁছিল যারা তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছিল তাদের নাম বলে গিয়েছিল, যা আমি লিখেছিলাম তার ৩য় মূত্যুবার্ষকী সেপ্টেম্বরে বিদেশী ব্লু এবং এই ব্লগে

রাহেলার মামলা দেখাশুনা করছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র এই সপ্তাহের পরে কোর্টে (অক্টোবরে শেষে) বাংলাদেশে (রেজওয়ানের সিটিং বাংলা ব্লগ এবং জাষ্টিস ফর রাহেলা ব্লগ, ফেসবুক(জাষ্টিস ফর রাহেলা), এবং গুগুল পেজ)। ইউ টিউব ভিডিও এ রাহেলার একটি ভিডিউ পোষ্ট করা হয়েছে যেখানে রাহেলা হাসপাতালে বলেছিল তার বেদনার কথা এবং ২০০৪ এর শেষের দিকে তার পরিবার। তৎসত্ত্বেও, তার এই ঘটনা নিয়ে ইংরেজী সংবাদপত্রে কোন কভারেজ নেই।

দয়া করে ভিডিওটি দেখুন, ব্লগের লিপিভুক্ত বিষয়গুলো পড়ুন, এবং আপনার কথা বলুন রাহেলার ন্যায়বিচার জন্য। আপনি মিডিয়াতে চিঠি লিখার মাধ্যমে এটি করতে পারেন (বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্লগে, যাদের মধ্যে অনেকেই তার কেসটিকে অবহেলা করেছে), অন্যান্যদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলুন এবং অন্যান্যরা যারা কেসটি ভূলে গেছে এবং সাহসী সংগঠনদের সমর্থন করুন এবং এই ধরনের কেসের অগ্রগতির জন্য অটল থাকুন।

সিটিজেন মিডিয়া এবং ফেসবুক, ব্লগে নাদিনি এর জন্য জুরালো সমর্থন দেখিয়েছে, যে নিউ ইয়র্ক শহরে আরোগ্য হয়ে উঠছে সে তার স্বামীর বিপক্ষে প্রহার-ধর্ষণের অভিযোগ করেছিল, সাজীদ হক, যে এন ওয়াই সির পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হছে তার প্রাথমিক দন্ডের পরীক্ষা এই সপ্তাহেও সময়সূচিতে রাখা হয়। পাশাপাশি দি ডেইলি ষ্টার ব্যতিত অনেক বাংলাদেশী ইংলিশ ব্লগ এবং সংবাদপত্র এই মামলাটি উপেক্ষা করেছে। আমাদের সকলের আমেরিকায় মামলাটির অগ্রগতি পর্যবেক্ষন করা উচিত এবং বাংলাদেশে নাদিনির পরিবারের জন্য সমর্থন/ নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যবেক্ষন করা উচিত যা আমেরিকায় নার্যাতন মামলায় উল্লেখ্য করা হয়েছে।

পারিবারিক নির্যাতন ফোরাম: নিউ ওয়ার্ক সিটি, ইউ এস এ

Title of this post: "Domestic Violence Forum: New York City, USA" by Dr. Kathryn Ward (English) and translated by Taslima Akter

এন ওয়াই সি কমিউনিটি পারিবারিক নির্যাতন নিয়ে আলোচনা করার জন্য অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা দরকার।

আধুনিকা এবং সখী-জেন২ আপনাকে আসন্ন পারিবারিক নির্যাতন আউটরিচ পরিকল্পিত ফোরামে অংশ গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। পারিবারিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল কোয়ালিশন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতি চার জনে একজন মহিলা পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়। সকল সমাজ এবং সংস্কৃতির মাঝে এটি মহামারীর ন্যায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। ইহা সকল বয়সের ব্যক্তি, অর্থনৈতিক ক্ষেত্র, জনগোষ্ঠী, ধর্ম, জাতীয়তা কিংবা শিক্ষা ক্ষেত্রে ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। পারিবারিক নির্যাতন হচ্ছে অন্যতম একটি অপরাধ এবং এর ভোগান্তি জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত।

আমাদের সমাজে পারিবারিক নির্যাতন সম্বন্ধে আরও খোলাখুলি আলোচনা করা প্রয়োজন। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা আমাদের নিজেদেরকে এবং সমাজকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ এবং ইহার বিরুদ্ধে আমাদের সাড়া দিতে হবে।

দয়া করে এগিয়ে আসুন এবং আমাদের সমর্থন দেখান পারিবারিক নির্যাতন ইস্যু সম্বন্ধে সখী উকিলদের কথা শুনুন এবং জানুন আমাদের সমাজের পারিবারিক নির্যাতনের প্রতিরোধে আপনি কিভাবে সাহায্য করতে পারেন।

এখানে বিস্তারিত রয়েছে:

তারিখ: রবিবার,১৮ই নভেস্বর
সময়:
অপরাহ্ন ৬:৩০ - ৮:৩০
স্থান: ওয়াল্ড কালকার ওপেন সেন্টার

১৯ পশ্চিম ২৬ নং রাস্থা, ৫ম তলা (ব্রডওয়ের কাছের সংযোগস্থলে এবং ২৬ নং রাস্তা)

নিউ ইয়র্ক, এন ওয়াই ১০০০১

সাবওয়ে: দ্যা স্ট্রীট অন দ্যা এন/আর/ডাব্লিও লাইন

পরিসর সীমিত তাই দয়া করে আর এস ভি পি করুন, ১৪ই নভেম্বর বুধবার
dva@adhunika.org

আয়োজকেরা:
সখী একটি মনহাট্টান ভিত্তি সংস্থা দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের জন্য(
www.sakhi.org) যা দক্ষিণ এশিয়ায় সৃষ্ট নারীদের বিরূদ্ধে নির্যাতনের সমাপ্তি করতে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। সখী সকল দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের জন্য আন্দোলন সৃষ্টি এবং নিরাপদ পরিবেশ গড়তে মাঠ পর্যায়ে কাজ, উকালতি, নেতৃত্বে উন্নতি এবং সংগঠনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

আধুনিকা (www.adhunika.org) একটি বিশ্বব্যাপি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান যা বিশ্বব্যাপি প্রযুক্তির বর্ধিত ব্যবহারে বাংলাদেশের নারীদের জন্য নিয়োজিত আছে। প্রযুক্তির ব্যবহারের মধ্য দিয়ে নারীদের সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন করাই আধুনিকার লক্ষ্য।

Monday, November 12, 2007

রাহেলার জন্য ন্যায় বিচার- নতুনভাবে আবেদন

Title of this post: “Justice for Rahela - New petition” by Dr. Kathryn Ward (English) and translated by Taslima Akter

রাহেলার জন্য নতুনভাবে আবেদন, একজন গামেন্টস কর্মী নির্যাতিত এবং খুন হয়েছিল ২০০৪ এর আগষ্ট-সেপ্টেম্বর, রাহেলার জন্য ন্যায় বিচার ফেসবুক দল এবং অন্যান্য জায়গায় এর মাধ্যমে স্বাক্ষর করার জন্য আপলোড করা হয়েছে, তেমনি ভাবে এ ব্লগেও। এই আবেদন, বিশেষভাবে তার আসামীদের দ্রুত বিচারের জন্য উকিলদের দৃষ্টি আকর্ষন এবং গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে । যদি আপনি রাহেলার মামলার শিঘ্রই বিচারের জন্য কিছু করতে চান, দয়া করে স্বাক্ষর করুন রাহেলার অনলাইন আবেদনে এবং একই ভাবে উৎসাহিত করুন আপনার বন্ধুদের, আত্মীয়-স্বজনদের এবং শুভাকাক্ষীদের।

নতুনভাবে আবেদনের জন্য নিমোক্ত লিংকটিতে ক্লিক করুন
http://www.petitiononline.com/bdrahela/petition.html

যদি আপনি রাহেলার কেস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, দেখুন আগের কিছু পোষ্ট এবং লিংক বিদেশী-ব্লু ব্লগে অথবা এই ব্লগে। এই কেসের সম্বন্ধে কথা বলুন আপনার পরিবার, বন্ধু, সহপাঠী এবং সহকর্মীদের এবং অন্যান্যদের সাথে যা মিডিয়া এবং বিচারকরা ভুলে গেছে।